এনআরআই পাত্রের নির্বাচন সবসময় সুখকর হয় না। বহু অনাবাসী ভারতীয় অর্থবলে এমন বিয়ে করেন, যাকে আক্ষরিক অর্থে ‘হলিডে ম্যারেজ’ বলা যায়। ভারতীয়রা অনেকে এই ধরনের বিয়ের ফাঁদে পা দেন। অবশ্য বর্তমানে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার জনগণকে সতর্ক করায়, প্রতারণার ঘটনা কিছুটা হলেও কমেছে।
আসলে বাড়তি সামাজিক সম্মানলাভের আশায় অভিভাবকরা মেয়ের বিয়ে দিতে চান কোনও এনআরআই যুবকের সঙ্গে। কিন্তু সঠিকভাবে খোঁজখবর না নিয়ে শুধুমাত্র স্টেটাস-কে প্রধান্য দেওয়ার কারণে এই ধরনের বিয়ের ফাঁদে পা দিয়ে মেয়ের জীবনে সর্বনাশ ডেকে আনার সম্ভাবনা প্রবল হয়। কারণ, বিদেশে বিয়ে করে সংসারী হওয়ার পরও, অনেকে নিজের দেশে আরও একবার বিয়ে করেন বিবাহিত পরিচয় গোপন করে। আর এই বিয়ের অন্যতম উদ্দেশ্য হল ছুটি কাটাতে কিংবা পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা করতে এসেও শারীরিক সুখ লাভ করা। অর্থাৎ, স্বদেশে এসে যৌনস্বাদ বদলও করা হল আবার আনন্দে নির্ভেজাল ছুটিও কাটানো গেল, এই আর কী! কিছুদিন আগে পর্যন্ত এই ঘটনার এমনই বাড়বাড়ন্ত ছিল যে, পঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাইকোর্ট ওখানকার রাজ্য সরকারকে এই ধরনের প্রতারণার বিয়ে শক্ত হাতে দমন করার নির্দেশ দিয়েছে। জলন্ধরে তো ইতিমধ্যেই ৫০টি পাসপোর্ট বাতিল করে দেওয়া হয়েছে এবং জানানো হয়েছে, যারা এই ধরনের প্রতারণা করবেন, তাদের পাসপোর্ট এবং চাকরি দুই-ই কেড়ে নেওয়া হবে।
বিদেশ যাওয়ার লোভ
কলকাতার মেয়ে লীনা মল্লিক (আসল নাম গোপন রেখে) যে-কোনও মূল্যে বিদেশ যাওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। আর এই স্বপ্নপূরণ করার জন্য তিনি ম্যাট্রিমনি সাইট থেকে এক এনআরআই-কে খুঁজে বের করেন এবং বিদেশ যাওয়ার লোভে তাকে বিয়েও করে নেন। কিন্তু, দিন-মাস-বছর কেটে গেলেও লীনার ভিসা আর হয় না। আসলে ওই এনআরআই চাননি লীনার ভিসা হোক। তাই, তিনি লীনার ভিসা ফর্ম ইচ্ছে করেই সঠিক ভাবে পূরণ করে জমা দেননি। অথচ তিনি তার উদ্দেশ্য পূরণ করে নিয়েছেন। লীনার সঙ্গে শারীরিক সুখভোগ ছাড়াও, তার কাছ থেকে প্রায় চার লক্ষ টাকা লুটে নিয়েছেন। শুধু লীনাই নয়, বিদেশে গিয়ে থাকার লোভের কারণে এমন অনেক মেয়ের জীবনে এভাবেই সর্বনাশ ঘটে চলেছে বহুদিন যাবৎ।