Superstition আজও সমাজের এক বড়ো অভিসাপ৷বিড়ালের রাস্তা কাটা, সন্ধেবেলায় নখ কাটা, গায়ে টিকটিকি পড়া, পিছুডাকা, রাতেরবেলায় গাছে হাত না দেওয়া, ভাঙা আয়না, দইয়ের ফোঁটা, নতুন পোশাক পরার আগে চিনি বা মিষ্টি গ্রহণ, তুলসীপাতা গিলে খাওয়া, গ্রহণের সময় না খাওয়া, এমনকী ১৩ নম্বর অশুভ— এরকম বহু কুসংস্কার যেগুলো আজও আমরা মেনে চলি সেগুলির পিছনেও বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব আজ প্রতিষ্ঠিত সত্য।
আমাদের দেশেই হোক অথবা বিশ্বের যে-কোনও দেশে, ধর্মে কুসংস্কারের আধিপত্য যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। যে-বিশ্বাসের পিছনে কোনও যুক্তি নির্ভরতা নেই, তথ্যভিত্তিক কোনও প্রমাণ নেই অর্থাৎ যুক্তিহীন অন্ধবিশ্বাসই হল কুসংস্কার।
নতুন প্রজন্মকে কুসংস্কার মুক্ত করে তুলতে এই গুরুদায়িত্ব পালন করতে হবে অভিভাবকদেরই৷ আসুন সবাই মিলে নতুন বছরের শুরু থেকেই নিজের পরিবার, সন্তান-সহ গোটা সমাজকে কুসংস্কারের হাত থেকে রক্ষা করে, কুসংস্কার-মুক্ত নতুন সমাজ গড়ার শপথ গ্রহণ করি।
শৈশব থেকেই একটি শিশুর মানসিক বিকাশ হতে থাকে। সুতরাং তার সঠিক শিক্ষার অগ্রগতির দায়িত্ব বর্তায় তার অভিভাবকদের উপর। শুধুমাত্র পুঁথিগত শিক্ষায় তার মনের বিকাশকে কখনও আটকে রাখা বাঞ্ছনীয় নয়। সামাজিক শিক্ষারও প্রয়োজন আছে।
আমাদের সমাজ আজও ভ্রান্ত ধারণা, অন্ধবিশ্বাস এবং কুসংস্কারের অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে পারেনি। কিন্তু শিশুরাই হল সমাজের ধারক এবং বাহক। যদি তারাই কুসংস্কারে নিমজ্জিত হতে থাকে, তাহলে দেশ এবং ব্যক্তিগত উন্নতির কোনও সম্ভাবনা থাকবে না ভবিষ্যতে। সুতরাং সচেতন হতে হবে অভিভাবকদেরই। কুংস্কারের ভ্রান্ত বিশ্বাসের পিছনে সঠিক বৈজ্ঞানিক বিষয়টিও শিশুর শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
একদিকে সমাজে জ্ঞানের অগ্রগতি হলেও আজও লক্ষ লক্ষ মানুষের চেতনায় থেকে গিয়েছে অজ্ঞানতার অন্ধকার। বিজ্ঞান সচেতনতার সঙ্গে কুসংস্কারের সংঘাত প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে। হস্তরেখা ও কোষ্ঠীর ফলাফল বিচারের উপর নিজের ভাগ্যকে দোষারোপ করে অনেকেই নিষ্কর্মা হয়ে পড়ে। ধর্ম এবং ভগবানের দোহাই দিয়ে লোক-ঠকানোর অসংখ্য ঘটনা রোজই উঠে আসে সংবাদমাধ্যমে। বস্তুত নিজেরাও হয়তো এই ধরনের ঘটনার সাক্ষী হয়েছি। হাঁচি, বিড়ালের রাস্তা পেরোনো বা এক শালিখ দেখার বাধায় আজও বহু মানুষের যাত্রা বিঘ্নিত হয়।