পেট্রোল, ডিজেলের দাম লাগাতার বাড়ছে। তার ধাক্কায় বাজারে আগুন। এই পরিস্থিতিতে কোনও রাজনৈতিক মহলেরই হস্তক্ষেপ নজরে পড়ছে না৷ সংসার টানতে নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ মানুষের৷এদিকে হু হু করে বেড়েছে রান্নার গ্যাসের দাম৷ সাধারণ মানুষের জ্বালানি খরচ যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে কীভাবে তারা জীবন নির্বাহ করবে, তার কোনও হদিশ মিলছে না। আর সরকার বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থাও করছে না। এই সবের ধাক্কায় বেসামাল গরিব, মধ্যবিত্ত।
গত দুমাসে বাজারে প্রতিটি জিনিসের দাম প্রায় ২০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। যেখানে পেঁয়াজের দাম ছিল কেজিতে ২০ টাকা তা এখন বেড়ে ৪০ টাকা কোনও কোনও বাজারে আবার ৪৫ টাকা কেজি দরেও বিক্রি করেছে। আলুর দাম প্রতি সপ্তাহেই ২টাকা করে বাড়ছে। অন্যান্য সবজি প্রতিটিরই দাম নিত্যদিনই বিক্রেতারা বাড়িয়ে চলেছে। অগ্নিমূল্যের এই বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণ করে সাধারণ মানুষের সুরাহা করার মতো কোনও ভূমিকাই নেই সরকারের, ফলে দিন দিন খরচের বোঝা চাপছে সাধারণের ঘাড়ে।
কলকাতার সমস্ত বাজারেই এক চিত্র।খরচ কমাতে বহু মানুষ কমিয়েছেন বাজারের পরিমাণ। সাধারণ মানুষ, যারা চাকরি করেন বেসরকারি সংস্থায়, গত দেড় বছরে অতিমারির ফলস্বরূপ তারা অর্ধেক মাইনে পেয়েছেন।মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে৷এদিকে বাজারের সব জিনিসের দাম মারাত্মক বেড়ে গেছে। সাধারণ মানুষ আগে সপ্তাহে অন্তত একদিন পাঁঠার মাংস নিয়ে যেতেন বাড়িতে। বিশেষ করে বাচ্চাদের জন্য। গত বছর তা থেকে নেমে এসেছেন মুরগির মাংসে, কিন্তু এখন যা দাম তাতে করে মাসে মাত্র দুদিন মাংস খাওয়া সম্ভব হচ্ছে। শুধু মাংসই নয় মাছও প্রায় ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে। তাই বাঙালিরা তাদের অতি প্রিয় মাছ খাওয়া কমিয়েছেন। মরশুমি সবজি যেমন ঝিঙ্গে, পটল, চিচিঙ্গা এগুলোর দাম গত বছরগুলোর তুলনায় কেজিতে প্রায় ২০টাকা করে বেড়েছে। টমেটোও ৫০ টাকা কেজি।
একেক অঞ্চলের বাজার অনুযায়ী আবার এক এক রকম দাম। কোনও খানে বাজার কিছুটা সস্তা, আবার কোথাও একই জিনিসের দাম আরও ২০ টাকা করে বেশি। মানে যদি ঠাকুরপুকুর বাজারে ঝিঙ্গে বিক্রি হয় ৪০টাকা কেজিতে, লেকমার্কেটে সেটাই ৬০টাকা কিলো। আবার রেললাইনের ধারের বাজারে সেটাই পাওয়া যাবে ৫০ টাকা কিলো দরে। ফলে কোনও বাজারে কোনও নির্দিষ্ট দাম নেই। বহু সাধারণ মানুষের অভিযোগ সরকারের তরফে কেউ দেখার নেই বলেই যে যেমন খুশি দাম নিচ্ছে বাজারে।