এখন অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে চান। তাই তারা কোনওরকম ঝুঁকি নিতে চান না। সন্তান যাতে নিশ্চিত ভাবে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করতে পারে এবং আর্থিক নিরাপত্তা থাকে, সেই বিষয়ে এখন বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দিচ্ছেন অভিভাবকরা। এরজন্য তারা মোটা টাকা খরচ করে সন্তানকে কর্মমুখী শিক্ষার ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, শিক্ষাক্রমের শুরুতেই নিশ্চিত হয়ে নিচ্ছেন প্লেসমেন্ট-এর বিষয়ে। চাকরির ১০০ শতাংশ নিশ্চয়তার পর-ই কর্মমুখী শিক্ষাক্ষেত্রে কোর্স শুরু করছে ছাত্রছাত্রীরা।আর তাই শিক্ষাক্ষেত্রের ছবিটা ক্রমশ বদলে যাচ্ছে। প্রচলিত শিক্ষাক্রম থেকে অনেকে এখন বিমুখ হয়ে কর্মমুখী শিক্ষার দিকে ঝুঁকছেন। ঠিক সেই কারণে সাধারণ পাঠক্রমে ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা কমছে।
এখন যেহেতু টেকনোলজি-র যুগ, তাই এই ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকছেন। আর ঠিক এই কারণে প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিও টেকনোলজিক্যাল এবং টেকনিক্যাল শিক্ষার পাঠক্রমে বেশি গুরুত্ব আরোপ করে চলেছে। নানারকম বিষয় নিয়ে চলছে পঠনপাঠন। ব্যবসায়িক শিক্ষা ছাড়াও, সৃজনশীল শিক্ষা নিচ্ছেন ছাত্রছাত্রীরা।
দেশের প্রতিটি বড়ো শহরে এখন প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি এডুকেশন সেন্টার চালু করছে এবং সেইসব সেন্টারের চাহিদাও এখন তুঙ্গে। বিভিন্ন ডিগ্রি কোর্স ছাড়াও, ৩ডি অ্যানিমেশন, ২ডি অ্যানিমেশন, ভিএফএক্স, গ্রাফিক্স, মোশন গ্রাফিক্স এবং ওয়েব ডিজাইনিং-এ বিস্তৃত চাকরিমুখি সার্টিফিকেট কোর্স অফার করছে ওইসব প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। ফিজ-এর জন্য সহজ ইএমআই অপশনও রেখেছে প্রায় সমস্ত প্রাইভেট এডুকেশন সেন্টার। শিক্ষার্থীরা যাতে সহজেই তাদের আগ্রহকে চরিতার্থ করতে পারে এবং কর্মসংস্থানের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে পারে, সেই কারণে এই ধরনের ইএমআই-এর ব্যবস্থা রেখেছে। এই যেমন পূর্ব ভারতের বৃহত্তম অ্যানিমেশন প্রোডাকশন হাউস, হাইটেক অ্যানিমেশন স্টুডিও, যেটি ভারতীয় টেলিভিশন এবং ওটিটি শিল্পের জন্য বেশিরভাগ অ্যানিমেশন কনটেন্ট তৈরি করে, তাদের শিক্ষা শাখা, মুপল ইনস্টিটিউট অফ অ্যানিমেশন অ্যান্ড ডিজাইন-এর অধীনে কলকাতার চৌরঙ্গীতেও তাদের ফ্ল্যাগশিপ সেন্টার চালু করেছে।
মুপল তার সমস্ত ছাত্রদের ১০০% প্লেসমেন্ট-এর সহায়তা প্রদান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বর্তমানে, তাদের স্টুডেন্টরা অ্যামাজন, টেকনিকলার, রেড চিলিস, পিডব্লিউসি, জি বাংলা, এসভিএফ, সুরিন্দর ফিল্মসের মতো কোম্পানিতে কাজ করছে। কোর্সটি সফলভাবে সমাপ্তির পরে ফ্রেশারদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ প্রারম্ভিক বেতন দেওয়া হয় ৪১,০০০ টাকা।দিল্লি ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ কলকাতা, উত্তর কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, বর্ধমান, দুর্গাপুর প্রভৃতি জায়গায় মোট ১৬টি শাখা খুলেছে। মুপল আকাদেমি-র ডিরেক্টর সুব্রত রায় প্রসঙ্গত জানিয়েছেন, ‘প্লেসমেন্টের ক্ষেত্রে ক্যাম্পাস কিংবা সেন্টার পরিদর্শন করার জন্য ভারতীয় এবং গ্লোবাল কোম্পানিগুলির আগ্রহ ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ছাত্ররা ভারতের সেরা বেশ কিছু সংস্থায় কাজের সুযোগ পেয়ে চলেছে। এটি একটি অত্যন্ত ইতিবাচক লক্ষণ যে, ওই কোম্পানিগুলি পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এভিজিসিএক্সআর পেশাদারদের গুরুত্ব বুঝতে শুরু করেছে (ওটিটি প্ল্যাটফর্মের আবির্ভাবের সঙ্গে)। প্লেসমেন্ট টিম এই বিষয়ে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে এবং ভারত থেকে আরও বেশি সংখ্যক কোম্পানির অংশগ্রহণের মাধ্যমে পরবর্তী মরসুমে প্লেসমেন্টের সংখ্যা আরও হয়তো বাড়বে।’ মুপল আকাদেমি-র আরও এক ডিরেক্টর পায়েল চোপড়া প্রসঙ্গত জানিয়েছেন, ‘প্রতিনিয়ত সর্বাধুনিক টেকনিক অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নিয়মিত পাঠ্যক্রম আপডেট করে, শিক্ষার মানকে উন্নত করতে কাজ করছি। শুধু তাই নয়, শিক্ষার্থীদের সর্বোত্তম শিক্ষার অভিজ্ঞতা প্রদানের জন্য সর্বাধুনিক পরিকাঠামো প্রদানেরও চেষ্টা রয়েছে।’