জীবন কারও জন্য থেমে থাকে না। তাই, মা হওয়ার পর যদি বিবাহবিচ্ছেদ কিংবা বৈধব্যের অঘটন ঘটে, তাহলেও বিরহে অশ্রুবিসর্জন নয়, ‘একলা মায়ের’মানে Single Mother হয়েও দায়িত্ব নিয়ে পূর্ণ আনন্দ উপভোগ করা যায়। এমন উত্তরণের কাহিনি বহু ছবিতেই তুলে ধরা হয়েছে। ‘ক্যায়া কহনা’-য় অবিবাহিত ‘মা’ প্রীতি জিন্টা, ‘পা-য় বিদ্যা বালন, ‘হমতুম’-এ কিরণ খের, ‘কোই মিল গয়া-য় রেখা প্রমুখ অভিনেত্রীরা সিংগল মাদার-এর চরিত্রে অভিনয় করেছেন এবং ছবিগুলি দারুণ জনপ্রিয়তাও পেয়েছে। তবে শুধু রিল-লাইফ-এই নয়, রিয়েল লাইফ-এও সিংগল মাদার-এর সংখ্যা কম নয়।
এমনই একজন Single Mother হয়ে চমকে দিয়েছেন বিশ্বসুন্দরীর খেতাবজয়ী মডেল এবং অভিনেত্রী সুস্মিতা সেন। অবিবাহিত হয়েও তিনি দু’জনকন্যা-সন্তানকে দত্তক নিয়ে ‘মা’ হয়েছেন। অন্যদিকে, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব জয়ললিতাও এক পুত্র-সন্তানকে দত্তক নিয়ে জীবন অতিবাদিত করেছিলেন। এর আগে অভিনেত্রী নীনা গুপ্তাও একই পথে হেঁটেছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ-এর ক্রিকেট প্লেয়ার ভিভিয়ান রিচার্ডস-এর সঙ্গে সম্পর্কস্থাপনের পর নীনা এক কন্যা-সন্তানের জন্ম দেন। মসাবা নামের নীনার ওই মেয়ে এখন প্রখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার।
সুপার মডেল পদ্মলক্ষ্মীও স্বেচ্ছায় সিংগল মাদার হয়েছেন। তবে শুধু এঁরাই নন, এই তালিকায় রয়েছেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি, হিলারি সোয়াঙ্ক, লিজ টেলর, কেট উইন্সলেট প্রমুখ বিদেশি অভিনেত্রীরাও। তবে বিদেশে সিংগল মাদার হয়ে সন্তান লালনপালন করা যতটা সহজ, ভারতবর্ষে ততটা সহজ নয় বলে মনে করেন অনেকে।
‘আমাদের সমাজ আজও সিংগল মাদার-এর বিষয়টিকে খুব সহজে মেনে নিতে পারেনি। সন্তানকে বড়ো করার দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে, পুরুষের সাহায্য ছাড়া মহিলারা অক্ষম বলে মনে করে আমাদের সমাজ। হাজারো প্রশ্নবাণে জর্জরিত হতে হয় একলা মায়েদের। অবশ্য, সিংগল মাদার হওয়া কঠিন জেনেও, শুধু মনের জোরে লড়াই জারি রেখেছেন অনেকে, বললেন এ শহরেরই এক ‘বিবাহ বিচ্ছিন্না’রত্না সরকার।
কীভাবে হবেন ভালো সিংগল মাদার
- মনে রাখবেন, আপনিই সন্তানের একান্ত আপনজন। আপনি ছাড়া ওর মনের কথা শেয়ার করার আর কেউ নেই। ওকে কোয়ালিটি টাইম দিন, যাতে একাকিত্ব অনুভব না করে।
- ওর লেখাপড়া এবং খেলায় সাহায্য করুন এবং অংশ নিন।
- সপ্তাহে অন্তত একদিন সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরে বেড়িয়ে আসুন।মাঝেমধ্যে রেস্তোরাঁয় নিয়ে গিয়ে ওর পছন্দের খাবার খাওয়ান। অর্থাৎ, ওকে এমনভাবে লালনপালন করুন, যাতে বাবার অভাব অনুভব না করে।
- আর্থিক সুরক্ষার ব্যবস্থা করুন৷আপনার সন্তানের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল এবং আনন্দময় করার জন্য এই আর্থিক সুরক্ষা প্রয়োজন। ওর উচ্চশিক্ষা, বিয়ে এবং সফল ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য আগে থেকেই প্রতি মাসে স্থায়ী আমানতের ব্যবস্থা করুন।
বিভিন্ন খাতে টাকা ভাগ করে রাখুন। স্বাস্থ্যবিমা করতেও ভুলে যাবেন না। আপনার অবর্তমানে সন্তান যাতে স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তির মালিকানা পায়, তারও আগাম ব্যবস্থা করে রাখুন। কারণ, কাগজেকলমে যদি সন্তানকে আগে থেকেই বিষয় সম্পত্তির উত্তরাধিকারী করে রাখেন, তাহলে আপনার অবর্তমানে ওকে ঝুটঝামেলার মুখোমুখি হতে হবে না।