তোর হঠাৎ ওকে সন্দেহ হল কেন?
‘আসলে আমি আর ও তো মাঝে মাঝে মিলেনিয়াম পার্কে যাই। আমি খেয়াল করিনি আমাদের কলেজে তমন্না বলে একটা মেয়ে ছিল। ও নাকি আমাকে ওর সঙ্গে দেখেছিল। পরে রাস্তায় একদিন দেখা হওয়ায় ও-ই বলল, তিয়াসের সঙ্গে মেলামেশা করছিস? বুঝেসুঝে মিশিস। ও কিন্তু খুব একটা সুবিধের ছেলে না।’
—তার পর?
—যতই কলেজের বন্ধু হোক, ও বলেছে বলেই কি ওর কথা আমাকে বিশ্বাস করতে হবে? আমি এত দিন ধরে ওর সঙ্গে মিশছি, ও কেমন, আমি জানি না? আমি বিশ্বাস করিনি। কিন্তু তার পর থেকেই ওর অনেক আচরণ আমার চোখে পড়তে লাগল। আগে তো ও এরকম করত না! কেমন যেন খটকা লাগল। তখন আমি দু'য়ে দু'য়ে চার মেলাতে লাগলাম। দেখলাম, সত্যিই ওর চালচলন বেশ সন্দেহজনক।
—কী রকম?
—যেমন, আগে খুব ঘন ঘন ফোন করত। কিন্তু ক'দিন হল, ফোন করা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিল। আমি করলেও সব সময় ঠিকমতো ধরত না। ধরলে, আশপাশের গাড়িঘোড়ার শব্দে বুঝতে পারতাম, ও রাস্তায়। ওর কথা বলার ধরন দেখে বুঝতে পারতাম, ওর পাশে কেউ আছে। কিন্তু আমি যে সেটা বুঝতে পারছি, সেটা ওকে বুঝতে দিতাম না। যদি বলতাম, বাড়ি গিয়ে আমাকে একটা ফোন কোরো। ও বলত, ঠিক আছে। কিন্তু কোনও দিনই ফোন করত না।
—কেন?
—কেন আবার? বউ আছে না? বউ যদি টের পেয়ে যায়! এই সব ছেলেদের গায়ে না বিছুটিপাতা ঘষে দিতে হয়।
—ওর ব্যাবসা আছে বলেছিলি না?
—ধুর, ওটা ওর নাকি? ওর বাবার। ওর বাবাই চালায়। ও মাঝে মাঝে গিয়ে বসে।
ওদের কথার মধ্যেই ক্রিং ক্রিং করে ফোন বেজে উঠল। রঞ্জনা চাপা গলায় বলল, কী রে, টেলিফোন বাজছে তো, ধরার কেউ নেই নাকি?
তিন্নিও কান খাড়া করল, হ্যাঁ, টেলিফোন বাজছে। তিয়াসের ব্যাপারটা নিয়ে ও এতটাই টেনশনে আছে যে ও শুনতেই পায়নি ফোন বাজছে। খানিকক্ষণ পর রিংটা থেমে গেল। রিং হয়ে হয়ে থেমে গেল, না কি কেউ ধরল, বোঝা গেল না।