তিন্নি জানে, ঝিনুক তার বোন। তিয়াসের মুখেই শুনেছে, ও খুব ভালো মেয়ে। লর্ডস বেকারির কাছে এ কে ঘোষ মেমোরিয়াল স্কুলে সায়েন্স নিয়ে টুয়েলভে পড়ে। ওর কাছে তার কথা শুনে ও নাকি তার সঙ্গে আলাপও করতে চেয়েছিল। তা হলে কি সেটাও মিথ্যে কথা! যত খারাপই হোক, বাড়িতে জলজ্যান্ত একটা বউদি থাকতে কোনও ননদ কি তার দাদার প্রেমে সায় দিতে পারে! দাদার প্রেমিকার সঙ্গে আলাপ করতে চাইতে পারে! না, এটা হতে পারে না। তা হলে কি ও যা যা বলে, সবটাই মিথ্যে! তমন্না ঠিকই বলেছিল, ও খুব একটা সুবিধের ছেলে না। তিন্নি যখন এ সব ভাবছে, তিয়াসের মা বলে উঠলেন, ‘ডাক্তার কী বলল?’
–একটা মলম দিয়েছে আর তিন রকমের ট্যাবলেট। বলল, এতেই সেরে যাবে।
—তুই চা খাবি তো?
—বলেছি না, চায়ের ব্যাপারে আমাকে কখনও জিজ্ঞেস করবে না।
—জানি তো, চায়ে তোর কোনও না নেই। তোমরা কথা বলো মা। চায়ের জল বোধহয় ফুটে গেল। ওর মা রান্নাঘরের দিকে যেতেই তিয়াস বলল, তুমি যে এ দিকে আসবে, কই, তখন তো বললে না? —তুমিও তো বলেছিলে, আমি দূরে আছি। ফিরতে দেরি হবে।
—তখন কি আর জানতাম, ডাক্তারখানা আজ এত ফাঁকা থাকবে!
—এত বড়ো একটা ঘটনা তুমি আমার কাছে চেপে গিয়েছিলে?
—কী?
—কী, বুঝতে পারছ না?
—না।
—সে বুঝবে কী করে?
তিন্নির কথা শুনে রঞ্জনা বুঝতে পারল, ব্যাপারটা এ বার অন্য দিকে মোড় নেবে। তাই সেটাকে আটকাবার জন্য সে তিয়াসকে জিজ্ঞেস করল, আপনার ছেলের কী হয়েছে?
—আর বলবেন না। ক'দিন ধরে খুব ভুগছে...
—কী হয়েছে?
—প্রথমে ঘাড়ের কাছটায় একটু ঘা মতো হয়েছিল। তার পর...
কথা শেষ হওয়ার আগেই ট্রে-তে করে তিন কাপ চা নিয়ে ঢুকতে ঢুকতে তিয়াসের মা বললেন, ‘মেয়ের কাছে গিয়েছিলি?'
—মেয়ে! রঞ্জনা আর তিন্নি দু'জনেই দু'জনের দিকে তাকাল। শুধু ছেলে নয়, মেয়েও আছে!