তাহলে মিরিক? নাকি কালিঝোরা? আরও দূরে যেতে চাইলে বলে ফেলুন। দেখুন অয়নদা, এখনই ডিসিশন নিন। আর কোনও জায়গা মনে হলে বলে ফেলুন। কলি কফির কাপ এগিয়ে দিল।
অয়ন চিন্তিতভাবে কলির দিকে তাকিয়ে আছে। চোখ এখানে, মন দৃষ্টিটুকু নিয়ে অনেক দূরে। যেন মংপং, কালিঝোরা ছাড়িয়ে অন্যান্য পিকনিক স্পটগুলো দেখতে বেরিয়ে পড়েছে।
– এ কি? তুই যে ব্যোম মেরে রইলি! বলে ফেল বাবা। নাহলে কলি আমাকে পঞ্চাশবার পাঠাবে তোর কাছে। যশ হাসে।
– সত্যি? আহা, সে যে আমার পরম আকাঙিক্ষত। কলি আমাকে বার বার স্মরণ করছে, একথা ভাবতেই আমার হার্ট বিট বেড়ে গেছে।
– ইয়ার্কি নয়, ঠিকঠাক বলুন তো। কলি বুকের ওপর ওড়না ছড়িয়ে দিল– কী ভাবছেন? মিরিক?
– ভাবছি, বাঘবনে আজ ভিড় করেছে দত্যিদানো, বাক বন্দি বর্গিরা সব পালিয়ে কেন? বাঘবনে যাব। অনেক হল মংপং কালিঝোরা। এবার স্বাদ পালটাই চলো। বেতলার জঙ্গলে যাবে?
– বেতলা আমার দেখা। যশ মুচকি হাসে– বিয়ের আগে অবশ্য। তারপর আর বাঘ হওয়া হয়নি, মানে বাঘ দেখা হয়নি। কুছ পরোয়া নেই, পেঞ্চ-এ চল। পেঞ্চ রে বাবা! মধ্যপ্রদেশে। মুখ দেখে মনে হচ্ছে জায়গাটার নাম শোননি? পড়াশোনার ব্যাকগ্রাউন্ড সবার ভালো হবে তার মানে নেই!
কলি অবাক– তুমি কোথায় পেলে নামটা?
অয়ন হাসি চেপে যশের চোখে চোখ রাখে– তুই কোথায় শুনলি?
যশ হেসে ফেলে– এটা কিন্তু বউয়ের সামনে আমাকে আন্ডার এস্টিমেট করা হচ্ছে। কলির মাথায় গ্রে ম্যাটার কম, সেটা মানবি? ও বুঝবে না, তুই একজন ওয়াইল্ড লাইফ ফোটোগ্রাফার, আমাদের সামনে আছিস, স্বাভাবিক ভাবে তোর কাছেই শুনব নামটা? গণ্ডারের গায়ে সুড়সুড়ি দেওয়া, আর কি! একদিন বুঝবে ঠিক।
কলি রেগে যাচ্ছে বুঝে হাত তুলে দাঁড়ায় যশ– ক্ষম দেবী এ দাসের অপরাধ যত! ভাবো, পিকনিক করতে নিয়ে যাচ্ছি বাঘের সামনে ঘোঘ কে। তোমার পাঁচ কোটি বার দেখা মংপং, কালিঝোরা নয়। মধ্যপ্রদেশে! বুইলে গিন্নি?