শিখার কথায় খানিক্ষণ কিছু ভাবল অঞ্জলি, তারপর বলল, “বউদি, আমনের থেকে এখন মুখ ফিরিয়ে নিয়ে ওকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে পারব না আমি। আমার কর্মফলের শাস্তি ও কেন ভুগবে?'' নিজের মতামত জানিয়ে অঞ্জলি পিছন ফিরে সদর দরজার দিকে পা বাড়াল।
সেদিন রাত্রে অনেক দেরিতে বাড়ি ফিরল সঞ্জীব। সে প্রপার্টি কেনাবেচার সাইড বিজনেস করে। জয়পুরের কাছে নতুন কিছু ফ্ল্যাট দেখতে সকাল সকাল রওনা দিয়েছিল রোহিতের সঙ্গে।
রাত্রে খাওয়াদাওয়া সেরে বেডরুমে ঢুকে শিখা নিজের স্বামীকে অঞ্জলির সঙ্গে হওয়া সব কথোপকথন সবিস্তারে খুলে বলল। বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ার পরেও অঞ্জলি পুরোনো প্রেমিক আমনের সঙ্গে সম্পর্ক টিকিয়ে রেখেছে শুনে সঞ্জীব খুব রেগে গেল।
—এই বিয়েটা যেমন করেই হোক আমাকে বন্ধ করতেই হবে। রাগত স্বরে শিখাকে জানাল সঞ্জীব। আমার তো মনে হচ্ছে আমনের সঙ্গে অঞ্জলির এখনও অবৈধ সম্পর্ক রয়েই গেছে। যদি আমি ভেবেও নিই যে অঞ্জলির মনে কোনও পাপ নেই, তবুও রোহিতের সঙ্গে বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর যদি অঞ্জলি আমনকে বেছে নেয়— তাহলে রোহিতের কী হবে? এই পরিস্থিতিতে বেকার বেকার এতটা রিস্ক নেওয়ারই কী দরকার?
শিখা রোহিতের কথা ভেবে দুঃখিত স্বরে বলল, 'এই সম্বন্ধ ভেঙে গেলে রোহিত খুব কষ্ট পাবে।'
—হ্যাঁ সেটা ঠিকই, রোহিত এখনই অঞ্জলিকে প্রচণ্ড ভালোবেসে ফেলেছে। কিন্তু ভবিষ্যতের ঝঞ্ঝাট এড়াতে হলে অঞ্জলিকে বিয়ে করাটা ঠিক হবে না।
শিখা স্বামীকে জিজ্ঞেস করল, 'কাল তুমি নিজে একবার অঞ্জলিকে বোঝাবার চেষ্টা করতে পারো না?
—মনে তো হচ্ছে না ওকে কোনও ভাবে বোঝানো সম্ভব হবে বলে। এর থেকে ভালো, চুপচাপ রোহিতের জীবন থেকে ওর সরে দাঁড়ানো। কঠোর স্বরে নিজের রায় জানিয়ে সঞ্জীব পাশ ফিরে শুয়ে পড়ল।
পরের দিন সকাল দশটায় সঞ্জীব অঞ্জলির সঙ্গে একটি রেস্তোরাঁয় দেখা করতে গেল। রেস্তোরাঁয় একটা কোণা বেছে নিয়ে ওরা দু'জন চেয়ার টেনে বসল এবং আমন সম্পর্কে আলোচনায় ব্যস্ত হয়ে পড়ল।