নিধিরাম তো আনন্দে ডগমগ। এরপর একে একে নবীন প্রবীণ মিলে আরও জনা সাতেক কবি সাহিত্যিক সুলভ সংস্করণের সংবর্ধনা নেওয়ার জন্য নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন। তাহলে মোটমাট আটটা ‘মুরগি’ হল! নিধিরামকে আর পায় কে, মার দিয়া কেল্লা। বর্তমান বাজারদর চলছে চার থেকে পাঁচ হাজার মতোন। ওরা সেখানে মাত্র আড়াই হাজার। আট আড়াই... উঃ তার মানে কড়কড়ে যাকে বলে হাতে গরম কুড়ি হাজার। ফার্স্ট চান্সেই বাজিমাৎ। এক্কেবারে কল্পনার বাইরে, ভাবা যায়! মাসের শেষ রবিবার মানে হাতে আর দিনদশেক।
আটজনের বেশি একদিনে সংবর্ধনা দেওয়া সম্ভব না। পরের দিন সকাল সকাল দালাল মিত্তিরকে বলে এল, আর নাম এনরোল না করতে। আর করলে যেন বলে দেয় সেগুলো নেক্সট মাসের জন্য। এরপর তাহলে... একবার প্রেসে গিয়ে ‘একচ্ছত্র সাহিত্য আকাদেমি'-র নামে ছাপানো মানপত্রগুলো নিয়ে আসতে হবে। সে কাল পরশু করে একবার গিয়ে নিয়ে এলেই চলবে।
সন্ধেবেলা নিধিরাম তার হিসেব লেখা ডায়ারি খুলে বসল। এক একটা ফাঁকা পাতায় পত্রিকা ও তার সম্পাদকের নামগুলো একে একে লিখে ফেলল হিসেবের সুবিধার জন্যে পর পর এইভাবে— নামাবলি - নিধিরাম বাড়ুজ্যে, চালচিত্তির- দালাল মিত্তির, দুলি- অযোধ্যা হেমব্রম, ভূতের ছানা- যীশুকৃষ্ণ কবিরাজ, তাজমহল - অদিতি ইসলাম, শ্যামলা মেয়ের- কাজল কৈবর্ত, কলিকাল- বাক্য বাগীশ বাগচি, প্রলাপ- পয়োধি পরামাণিক।
প্রেস থেকে মানপত্র নিয়ে ফেরার পথে নিধিরাম বিল্টদের বাড়িতে ঢুঁ মারল একবার। তখন সান্ধ্য চায়ের সময়। কাজেই নিধি তৎক্ষণাৎ প্লেটে সাজানো জিভে গরম এককাপ চা, চানাচুর ও বিস্কুট পেয়ে গেল। লোকে বলে নিধিরামের নক্ষত্রযোগ নাকি অসাধারণ। খাবার ওর পিছু ছাড়ে না। খাবার যেন ওর জন্য অপেক্ষা করে থাকে সব সময়। নিজেই বলল, ‘মানপত্রগুলো নিয়ে এলাম বুঝলি বুল্টি! স্যরি স্যরি বিন্টু।”
বিল্টু হাসতে হাসতে বলল, 'ঠিক আছে৷ ঠিক আছে।'
—এই শোন, এর মধ্যে অনুষ্ঠানের আগের দিন মানে শনিবার বিকেলবেলা আমার বাড়ি আসিস একবার।





