গণেশ এসেছে। এসে চেয়ারে না বসে, বসেছে চেয়ারের হাতলে। কাঠের এই চেয়ার বহু বছরের পুরোনো। শক্তপোক্ত, দু’পাশে হাতল। হাতলগুলো চওড়া। চেয়ারটাকে রাখা হয়েছে খাটের গা ঘেঁষে। যাতে ডাক্তারবাবু, আত্মীয়স্বজন, বাড়ির লোকজন রোগীর কাছে বসতে পারে। গত চার মাস, না চার মাস নয়, গত চার মাস এগারো দিন এই ব্যবস্থা চলেছে। প্রথম প্রথম এঘর, ওঘর থেকে মোড়া, চেয়ার, এমন কী টুল পর্যন্ত টেনে আনা হচ্ছিল। পরে দেখা গেল, সিচুয়েশনের অবনতি হচ্ছে। ঘরে ডাক্তার, ভিজিটর বসবার জন্য পাকাপাকি ব্যবস্থা রাখতে হবে। বারান্দায় রাখা চেয়ারটাকে মুছে-টুছে ঘরে আনা হল। আজ থেকে আর এই চেয়ারের দরকার হবে না।

গণেশ যখন এল তখনও আলো ফোটেনি। ফুটব ফুটব করছে। দূরে একটা দুটো কাক ডেকে উঠল। আড়মোড়া ভাঙা ডাক। রাস্তা দিয়ে ঝনঝন আওয়াজ করে চলে গেল দুধের গাড়ি। রমাকান্তবাবু পাশ ফিরতে গেলেন। একটু পারলেন, বেশিটা পারলেন না। পাশ ফেরবার শক্তি মানুষটার আর নেই। শ্বাস নিতেও কেমন যেন অসুবিধে হচ্ছে। মনে হচ্ছে, কেউ নব ঘুরিয়ে ঘরের বাতাসের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। খানিক আগে বুকের ভিতরে একধরনের চাপা ধড়ফড়ানি শুরু হয়েছে। শরীর জানান দিয়ে দিচ্ছে, সময় ফুরিয়ে গেল... সময় ফুরিয়ে গেল...। পরিস্থিতি যা তাতে মনে হয়, আজই কিছু একটা হয়ে যাবে। কখন হবে? বেলাবেলি? নাকি দুপুরের পর? দুপুরের পর হলে ভালো। বাড়ির সবার খাওয়া-টাওয়া হয়ে যাবে। নইলে রাত পর্যন্ত আটকে থাকা। মরা বাড়িতে হাজার ফ্যাঁকড়া। এইটা করা যাবে না, ওইটা করা যাবে না।

মাধবীর আলসারের সমস্যা আছে। বেশিক্ষণ কিছু না খেলে পেটে ব্যথা হয়। তারও তো বয়স কম হল না। স্বামীর মৃত্যুর পর আলসারে কাবু স্ত্রীদের জন্য কি কোনও ছাড় আছে? হালকা কিছু খেতে পারে? পারা উচিত। যাই হোক, সবথেকে ভালো হয় ঘটনা বিকেলের দিকে ঘটলে। তবে সে তো আর কারও হাতে নেই যে সকলকে স্নানটান করিয়ে, মাছের ঝোল ভাত, কাঁচা আমের চাটনি খাইয়ে, ছোট্ট একটা ভাতঘুম দিয়ে তবে ঘটবে। মৃত্যু কখন আসে কেউ বলতে পারে না। জন্ম-মৃত্যু খুবই অনির্দিষ্ট একটা বিষয়। তারা স্বেচ্ছাচারী। নিজের খুশি মতো চলতে পছন্দ করে।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...