ফ্লাড রিলিফ ক্যাম্প-এর বাইরে লাইনটা ক্রমশ একটা অজগরের মতো এঁকে বেঁকে বৃহৎ আকার নিল। প্রায় ল্যাজের দিকে দাঁড়িয়ে রাবিয়া বারবার উঁকি মেরে দেখার চেষ্টা করছিল, সেই ভাগ্যবান লোকটিকে, যে একদম মুখের দিকে দাঁড়িয়ে। ক্যাম্প-এ মুহুর্মুহু ঘোষণা শুনে সকলেই ছুটে এসেছে, চিঁড়ে-গুড়, ত্রিপল, ওষুধ সংগ্রহের আশায়। তিন দিনের অঝোর বৃষ্টিতে, নদীনালা খালবিল মিশে গিয়ে একেবারে নারকীয় অবস্থা হয়েছে তাদের বস্তির। ঝুপড়িগুলো বেশিরভাগই ভেসে গেছে। ভেসে গেছে গরু-বাছুর মানুষ, কুকুর। এই অবস্থায় সরকারি সাহায্যই একমাত্র কুটো, যা আঁকড়ে বাঁচার প্রাণপণ এই চেষ্টা।

নাঃ শুরুর দিকে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটা এখনও সরেনি। মানে তার প্রাপ্য চিঁড়ে-গুড় দেওয়া এখনও শুরু হয়নি। সে সরলে পরের জন পাবে, তারপর তার পরের জন– এভাবে কখন কপাল খুলবে রাবিয়ার, সে জানে না।

অসমের গোলাঘাটের আপাত শান্তশিষ্ট নদী ধানসিঁড়িকে, এসময় বড়ো অচেনা লাগে রাবিয়ার। এরকম তাণ্ডব সে আগে দেখেছে কয়েকবার। তবে এবার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যেন কিছুটা বেশি। কত মানুষের তিল তিল করে জমানো খড়কুটো যেন নিমেষে ভাসিয়ে নিয়ে গেল রাক্ষুসী। তাদের চালাঘরটার চিহ্নমাত্র আর নেই। দশ বছরের ভাই আজিমের যক্ষের ধন খেলনাগুলোও ভেসে গেছে জলের তোড়ে। বেচারা ওগুলো বাঁচানোর জন্য শেষ চেষ্টা করেছিল, একটা ভাঙা টিনের বাক্স জোগাড় করে। কিন্তু ঈশ্বর অলক্ষ্যে থেকে হেসেছিলেন। বাস্তবের রূঢ় রূপটা দেখাবেন বলেই প্রায় শিকড় থেকে উপড়ে দিলেন তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁইটা।

রাবিয়া এই কুড়ি বছর বয়সে কী না দেখতে বাধ্য হল! সত্যি বলতে কী সৌভাগ্য কী তা বোঝার কখনও সুযোগই হয়নি তার। আজ এই ছিন্নমূল অবস্থায়, রিলিফ ক্যাম্প-এর লাইনে দাঁড়িয়ে তার সেই দুর্ভাগ্যের কথাই ভাবছিল রাবিয়া।

মা আর ভাই আজিমকে সে কাছেই একটা অস্থায়ী শরণার্থী শিবিরে রেখে এসেছে। ত্রাণ শিবির থেকে সরকারি সাহায্য, কাপড় জামা, খাবার যা পাবে নিয়ে যাবে ওদের জন্য। এখানে পরিবারের লোকসংখ্যা অনুযায়ী কম্বল, চাদর, পাউরুটি, বিস্কুট, চিঁড়ে, গুড় বিতরণ করা হবে।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...