আজকাল শব্দটা সারা দিনরাত মাথার ভিতর বাজতে থাকে। ধুপ ধুপ ধুপ... আওয়াজটা ঘুমের মধ্যেও শুনতে পায় সরতাজ। রাত যত গভীর হয়, চারপাশের ক্রমবর্ধমান নৈঃশব্দের সাথে সাথে শব্দটার তীব্রতাও বাড়তে থাকে। মাথার ভিতরকার স্নায়ুগুলি যেন সব জট পাকিয়ে গেছে, মুক্তির আশায় প্রাণপণ টানছে, ছিঁড়ে বেরিয়ে যেতে চাইছে মাথার খুলি ভেদ করে। একটা বিস্ফোরণের অপেক্ষায় আছে সরতাজ। একটা ঘোরতর বিস্ফোরণ প্রয়োজন, যেটা তার নামের জায়গায় সেঁটে থাকা নম্বরটাকে ধ্বংস করে দেবে।

সরতাজ সিং, গাঁও সুলহানি, জেলা ফিরোজপুর, পঞ্জাব প্রদেশ। শব্দবন্ধগুলো মনে হয় যেন গত জন্মের কোনও বিস্মৃতপ্রায় অতীতের ছায়া। এখন সরতাজ শুধুই কয়েদি নম্বর একশো সাইত্রিশ। দিনের বেলা ঘন্টার পর ঘন্টা জেলের কমিউনিটি কিচেনের রাবণের চিতার মতো দাউদাউ করে জ্বলতে থাকা আগুনের সামনে দাঁড়িয়ে পাহাড়প্রমাণ ডেকচিতে ডাল সবজির জাউ রাঁধে সরতাজ। গনগনে ধোঁয়ায় চোখ জ্বালা করে। দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে সরতাজ সিং-এর। সেই ধোঁয়ার ভিতরে কখনও কখনও একটা চেনা মুখ ভেসে উঠেই মিলিয়ে যায়।

বড়ো আবছা সে মুখ, এখন আর মনে পড়ে না স্পষ্ট। শুধু সেই ধোঁয়ার ভিতর থেকে ঝিকিয়ে ওঠা নাকছাবিটা স্পষ্ট দেখতে পায় সরতাজ। লম্বা ভারী হাতাটা ডালের ভিতর চালাতে চালাতে মাথার ভিতরটা প্রাণপণে হাতড়াতে থাকে সে। দরদর করে লবণাক্ত ঘাম গড়ায় তার মাথা, গলা, বুক, পিঠ বেয়ে জিভে ঠেকে নোনতা স্বাদ। সরতাজ এলোমেলো হয়ে জড়িয়ে যাওয়া স্মৃতির তন্ত্রী ঘেঁটে চলে। কবে কোথায় পথের কোন বাঁকে দেখা হয়েছিল সেই চেনা মুখের সাথে, কিছুতেই মনে পড়ে না।

এগারো বছর কম সময় নয়। সরতাজ সিং এগারোটা বছর এই জেলের উঁচু দেয়ালের ও-প্রান্তের পৃথিবীকে দেখেনি। আজকাল আর মনে পড়ে না বাইরের পৃথিবীর কথা। মাথার ভিতরে সব যেন ধোঁয়াটে লাগে। বেশি ভাবতে গেলে মাথায় খুব যন্ত্রণা হয়। দীর্ঘদিন ধরে জেলের ভেতরে অমানুষিক শারীরিক নির্যাতন চলেছে তার উপরে।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...