এরপর কেটে গেছে বেশ কিছুদিন। এই ক'দিনে এদের সভ্যতার ব্যাপারগুলো ভালো করে জেনেছে সুমন। এদের এখানে মানুষের আবির্ভাব পৃথিবীর অনেক আগে। তাই এরা এগিয়ে গেছে অনেক। এরা গাছে গাছে এদের গ্রহকে ভরিয়ে তুলে দূষণ কমিয়েছে। কল-কারখানায় ক্ষতিকারক ভোগ্যপণ্য উৎপাদন কমিয়েছে। বদলে প্রাকৃতিক শক্তি নির্ভর উৎপাদন বাড়িয়েছে। পরমাণু শক্তির ব্যবহার বাড়িয়েছে। এদের এখানে ইন্টারনেট বা কোনও ধরনের কৃত্রিম নেটওয়ার্কের ব্যবহার নেই। কারণ একটা সময়ে কৃত্রিম নেটওয়ার্কের ব্যবহার এখানকার মানুষের মস্তিষ্কের ক্ষতি করেছিল ভীষণ ভাবে। এরা তাই মানুষের মস্তিষ্কের উপর গবেষণা করে ইলেকট্রো কেমিক্যাল সিগন্যাল বা (মানসিক) স্নায়ু তরঙ্গের মাধ্যমে যোগাযোগ বাড়িয়েছে। যা সবচেয়ে দ্রুত এবং উন্নত। গোপন রাখাও খুব সহজ। কারণ ট্র্যাক করা যায় না।
এরা আধুনিক যুদ্ধাস্ত্রের ক্ষতি সম্বন্ধে জেনেছে অনেক আগে। তাই এই গ্রহের কোনও দেশের সেনাবাহিনী অস্ত্র ব্যবহার করে না। বদলে যুদ্ধ হয় খালি হাতে মুখোমুখি। যুদ্ধ বাধলে দুই তরফের সেনা খালি হাতে কোনও বিরাট ময়দানে মুখোমুখি হয়। সকল সেনা প্রতিপক্ষের থেকে যে- কোনও একজনকে বেছে নেয়। চলে আমৃত্যু মল্লযুদ্ধ। এই ভাবে শেষ পর্যন্ত যাদের সব সেনা মারা যায় তারা পরাজয় বরণ করে। লোকালয়ের ভিতর কোনও আক্রমণ করা হয় না। কোনও বাড়তি প্রাণহানি হয় না। প্রথাগত যুদ্ধের ফল সবাই মেনে নেয়।
এরা পোশাক পরে না। কারণ এখানে কোনও চামড়া বা কাপড় উৎপাদন হয় না। চামড়া উৎপাদন বন্ধ হয়েছে দূষণের জন্য। আর কাপড় তৈরির মতো কোনও তন্তু এখানে জন্মায় না। কৃত্রিম ভাবে তৈরি তন্তু এরা শরীরে ব্যবহার করে না। তাই পোশাকের বদলে এদের গায়ে থাকে একটা স্বচ্ছ আলোর আস্তরণ।
এদের বক্তব্য, যা সত্যি তাকে আড়াল করে লাভ নেই। যুদ্ধের সময় সেনারা আলোর আভরণটুকুও খুলে ফেলে। সম্পূর্ণ নিরাভরণ হয়ে চলে লড়াই। কারণ ওই আলোর আভরণ যার গায়ে থাকে, তাকে কেউ ছুঁতে পারে না। ওতে থাকে এক বিশেষ লেজার প্রতিরোধক। আর লজ্জা কাকে বলে সেটা এরা বহুদিন ভুলেছে।





