সুচিত্রা কিছুতেই মনের আনন্দ গলার স্বরে লুকিয়ে রাখতে পারছিল না সেটা ফোনের মধ্যেও বুঝতে পারছিলেন সুনন্দাদেবী।
কী বউমা, এত সকালে তোমার ফোন? কোনও ভালো খবর আছে বুঝি? সুনন্দা উৎসুক কণ্ঠে ফোনের ওপারে থাকা সুচিত্রাকে প্রশ্ন করলেন।
হ্যাঁ মা, তুমি এবার ঠাকুমা হতে চলেছ।
বউমা, সত্যি বলছ? সত্যিই আমি এবার ঠাকুমা হব? আমি ভাবতে পারছি না, সকাল সকাল এরকম একটা আনন্দের খবর আমার জন্য অপেক্ষা করছিল। কবে থেকে এই খবরটা শুনব বলে বসে আছি। সকালবেলাতেই তুমি আমার মন ভালো করে দিলে। ভালো থাকো, সুখে থাকো। সুনন্দাদেবী আশীর্বাদ দেওয়ার ভঙ্গিতে বউমাকে বললেন।
হ্যাঁ মা..., আশ্বাস দিল সুচিত্রা।
আমি জানি নাতি আসতে চলেছে আমার। তা তোমার মা-কে খবরটা জানিয়েছ? উনিও শুনে খুব খুশি হবেন। সুনন্দা মনে করান বউমাকে।
না! তোমার সঙ্গে কথা বলেই মা-কে ফোন করব। কিন্তু একটা কথা বলো তো, নাতি-ই যে আসতে চলেছে সে ব্যাপারে তুমি এত নিশ্চিত কী করে হলে? নাতনিও তো আসতে পারে। হেসে উত্তর করে সুচিত্রা।
না না, আমি জানি আমার ঘরে প্রথম নাতিই আসবে, আসতেই হবে। কিন্তু বউমা তুমি নিজের যত্ন করবে। ভারী ওজনদার জিনিস এখন একদম তুলবে না। তোমার কাজের মেয়েটা ঠিকঠাক আসছে তো? সুনন্দার চিন্তা ওনার গলার আওয়াজেও প্রকাশ পায়।
তুমি একদম চিন্তা কোরো না। রীণা রোজই কাজে আসছে। এখন ছুটি নেওয়াটাও ওর অনেক কমেছে। শাশুড়িকে শান্ত করার উদ্দেশ্যে সুচিত্রা কথাগুলো বলে।
এখন ওকে একেবারেই ছুটি দিও না। এই সময় তোমার বিশ্রাম করাটা খুব দরকার। বিশেষ করে শুরুর সময়টা এবং শেষের তিনটে মাস খুবই সাবধান।
হ্যাঁ মা, আমি জানি। তুমি নিশ্চিন্ত থাকো। আমি নিজের খেয়াল অবশ্যই রাখব। বলে সুচিত্রা ফোন কেটে দিল।
আগের দিনই সুচিত্রা সম্পূর্ণ নিশ্চিত হয়েছে নিজের প্রেগন্যান্সি সম্পর্কে। সকালে অজয় অফিস বেরিয়ে যাওয়ার পর নিজের পরিচিত গাইনির কাছে গিয়ে একবার পরীক্ষা করিয়ে কনফার্ম হয়ে, অজয়কে ফোনে ব্যাপারটা জানিয়েছে।