ঠিক সময়ে নরেন বাড়ি ঢুকল। জানে সীমা ওর উপর রেগে থাকবে, তাই তার পছন্দের উপহারও সঙ্গে নিয়ে এসেছে নরেন। অথচ আশ্চর্যের ব্যাপার, যা ভেবে এসেছিল তার কিছুই ঘটল না বরং নরেনের গলা জড়িয়ে গদগদ স্বরে তাকে স্বাগত জানাল সীমা।
—কী ব্যাপার, তোমার শরীর ঠিক আছে তো সীমা?
—কেন কী হয়েছে আমার? নরেনের প্রশ্ন করার কী কারণ বুঝেও সীমা কিছু না বোঝার ভান করল।
—না কিছু নয়। চলো আজ এক্ষুনি তোমার বার্থডে সেলিব্রেট করব, বলে নরেন সীমাকে নিজের কাছে টেনে নিল। সীমাও কোনও প্রতিবাদ করল না। ওর রাগ পড়ে গেছে ভেবে নিয়ে নরেনও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। আনন্দে পুলকিত হয়ে উঠল।
বাইরে কয়েকদিন কী করল, কী হল ইত্যাদি গল্পের ঝুলি নিয়ে বসল নরেন। সীমা নিজেই নিজেকে দেখে আশ্চর্য হল। আজ নরেনের এই গল্পগুলো সীমার মনে উৎসাহ জোগাতে না পারলেও ওর মনে কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়াও জাগাল না। নরেনের সামনে বসে থাকলেও কোনও কিছুই যেন ওর কানে প্রবেশ করছিল না। ওর মন অন্য কোথাও পড়ে ছিল। ওর মনে হচ্ছিল অনিল যখন গল্প করে তখন অপরের রুচি এবং আগ্রহের কথা মাথায় রেখে কথা বলে। ও কথা বললে কেউ বিরক্তবোধ করবে না অথচ নরেন? নিজের ইগো স্যাটিসফাই করার মতো খালি কথা বলে। তাতে অপরের রুচি থাকল কি থাকল না সেটা ওর ভাবনাতেই আসে না।
কথায় কথায় অনেকটা রাত হয়ে গেল। রাতে বিছানাতেও শুয়ে সীমা অনিলের স্পর্শ কিছুতেই ভুলতে পারছিল না। নরেনের সঙ্গে ভালোবাসার সমুদ্রমন্থনের মধ্যেও অনিলের স্মৃতিই ওকে বারবার উত্তেজিত করে তুলছিল।
পরের দিন নরেন অনিলকে সঙ্গে নিয়ে অফিস থেকে বাড়ি ফিরল। সীমা চা নিয়ে ঘরে ঢুকতেই হঠাৎই অনিল বলে বসল, স্যার আমি আপনার অনুপস্থিতিতে ম্যাডামের পুরো খেয়াল রেখেছিলাম। অনেকবার এখানে এসে ম্যাডামের সঙ্গে গল্প করে গেছি, ম্যাডামের কাছ থেকে নিশ্চই শুনে থাকবেন সব কথা।