কুড়ানি প্রায় ঘুম চোখেই স্নানে যায় আজ। ভোরের উঠোন স্পষ্ট দেখতে পায় না, চেনা পায়েই পালদের পুকুরের দিকে ইটিতে থাকে। ঝুপ করে তিন চারটে ডুব মেরে দিতে হবে। পৌষ মাস। এ বছর ঝেপে ঠান্ডা পড়েছে। ভোরের কুয়াশাও আছে। বেশ কয়েক পা পথ। কুড়ানি শাড়ি চাপা দিয়ে কান ঢেকে কিছুটা উষ্ণতা পেতে চায়। বেশ বড়োসড়ো চেহারা তার। ফলে দশহাতি শাড়িতে টান ধরে। পিঠে পেটে ঠান্ডা বাতাস এসে ঝাঁ করে কামড় বসায়। কটা বাজে? আকাশে চোখ রাখে। ঠাহর করতে পারে না। সাদা তারারা তখনও ভাঁট ফুলের মতো ফুটে আছে। ফসল ওঠা মাটির গন্ধ নাকে। শব্দহীন এক আনন্দ শিরশির করে। ভক্তাদের বাছুর পায়ের শব্দে জেগে ওঠে, হাম্বা করে। বুকটা ছ্যাৎ করে ওঠে। একটু ভয় পায়। হঠাৎ মনে হয় সকাল হয়নি। মুখের কাঠকয়লার মাজন শব্দ করে ফেলে। ভয় কমে। মনে মনে মা রঙ্কিণীকে ডাকে।

দিবা এই সকালে ওঠার কথা ভাবতেই পারে না। তা শীত-গ্রীষ্ম যাই হোক। ওর আলসেমিটা যেন সকালেই পেয়ে বসে। খুব রাত করে জেগে থাকতে পারে। মজুমদারের ভাঁটিতে কাজ করে। অনেক রাতে ফিরতে হয়। শীতকালটাই কাজের সময়। টালির কাজ খুব বেশি। আজকাল খড়, শণের চাল আর কেউ রাখতে চায় না এখানে। দু-তিনটে বর্ষা যেতে না যেতেই জল পড়ে। সবাই তাই চেষ্টা চরিত্র করে টালির চালের জন্য। দিবাকে অবশ্য এখন আর পোণে আগুন দেয়া বা কাদা ছেনার কাজ করতে হয় না। মজুমদার মশাই ওকে বেশ ভালো চোখে দেখেন। তদারকি করেন। বছর চারেক হল বিয়ে করেছে কুড়ানিকে। শ্যামলা শরীর হলে কী হবে, একটা আলগা শ্রী আছে তার। দ্রুত চলনের মেয়েটিকে দেখলেই লাগসই একটা মন-পসন্দ চলে আসে। তো বাপ-মা মরা তিন কুলে কেউ নেই এমন নির্বান্ধব দিবার মনও যে মহুয়া ফুলের গন্ধে উড়ু- উড়ু করবে, তা বিচিত্র কি! কুড়ানিরও তিন কুলে কেউ ছিল না এক বিধবা মা ছাড়া। তা সে মা-ও বিয়ের ছ'মাসের মধ্যেই মরে গেল। এখন হাত-পা ঝাড়া দুটি প্রাণীর একান্ত বসবাস।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...