আমি উত্তমকুমার।

হাবরা থানার সেকেন্ড অফিসার টেবিল থেকে মুখ তুলে দুটো ভ্রূ যথাসম্ভব কাছাকাছি আনলেন। তাঁর চোখের শ্লেষ ও বিরক্তির জিজ্ঞাসায় কিছুটা থতমত, টেবিলের অপর প্রান্তের দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তি গড়গড় করে বলতে থাকে– মানে আমি উত্তমকুমার দাম। আজ ২টো ২০-র বনগাঁ লোকালে আমার পিক্পকেট হয়েছে। হাজার দেড়েক টাকা ছাড়াও ওয়ালেটে ছিল ব্যাংকের ডেবিট কার্ড। আর পকেটের মোবাইলটাও গেছে। হাবরা থানার সেকেন্ড অফিসারকে এটুকু বলতেই ঘেমে একসার। আসলে থানা-পুলিশ নিয়ে তার দুর্বলতা আছে।

সেদিনও ঘেমে নেয়ে দুপুর রোদের ভেতর এক সংবাদপত্রের অফিসের বিজ্ঞাপন বিভাগে ঢুকে কাগজে লেখা টুকরোটি দিয়েছিল। ‘আমি উত্তমকুমার দাম। বয়স পঁয়ত্রিশ। অবিবাহিত। কর্পোরেট সংস্থায় চাকুরে। বিবাহে ইচ্ছুক। দ্রুত যোগাযোগ করুন।’সেদিন মঙ্গলবার, পরের রোববারের কাগজে বেরিয়ে যাবে বিজ্ঞাপন। সুইং ডোর ঠেলে পথে নেমে পড়ে। দেখা যাক। নীরদ চৌধুরির কথাটা প্রেমে ল্যাং খাবার পর প্রতিদিনই চোখের সামনে ভেসে উঠছে– ‘বাঙালিরা কোনও কাজ নিজে নিজে করতে পারে না, এমনকী নিজের বিবাহটাও নয়।’ দেখা যাক। গোটা ব্যাপারটাই নিজের হাতে করব। ছাঁদনাতলা থেকে রাঁধুনি– সব নিজের হাতে করব। এমনকী করবীকে নিজের হাতেই বিয়ের আমন্ত্রণপত্রটি দিয়ে চা খেয়ে আসব। বিয়ের একটা ডেট ঠিক করে ফেলা যাক। ১৮ অগ্রহায়ণ। শুক্রবার। ঠিক থাকল। না অন্য কেউ দিন ঠিক করবে না। যে মেয়ে বিয়ে করবে তাকেও ওই দিনেই বিয়ে করতে হবে। কোনও পালটাপালটি নয়। কলেজ স্ট্রিটে গিয়ে আজই কার্ডের নমুনা টমুনা দেখে আসতে হবে। বিয়ের কার্ড অন্তত শ’পাঁচেক ছাপতে হবে। রাসবিহারী কানেক্টরে বোসপুকুরের কাছে বিয়ে বাড়িটার যেন কী নাম– ‘নীলিমা’! অগ্রিম দিয়ে আসতে হবে। ভাবতে ভাবতে দুপুর রোদের ভেতর হেঁটে হেঁটেই ডালহউজি নিজের অফিসে ফিরে আসে।

বেশ ছটফট করছে সে। বুকের ভেতর অশান্তি নামে নাছোড় এক পদার্থ গড়িয়ে গড়িয়ে ছেয়ে যাচ্ছে সমস্ত শরীরে। রক্তের প্রবাহ পথে, তার মনে হচ্ছে সমস্ত শরীরেই এই আনচান ভাবটা ঢুকে পড়েছে। মনে পড়ছে গত পরশু দিন বিকেল বেলায় ওই যে শব্দের ছোবল কানের ভেতর দিয়ে মরমে প্রবেশ করল– তারপর থেকেই এই অস্থিরতা। গত দুবছরে কতদিনই তো রেস্তোরাঁয় বসে চা-কফি খেতে খেতে পায়ের আশ্লেষে হূদয়ের আকুলতা প্রকাশ করেছে উত্তম। তাতে তো সায়ই দিয়েছে করবী, ওর নগ্ন দু-পা আরও প্রলম্বিত করে। অথচ পরশু শান্তনুর কথাটা তুলে পার্ক স্ট্রিটের ফেলিনি-তে টেবিলের তলায় পা দিয়ে পায়ে ছোঁয়া লাগাতেই, খাঁচার বাঘিনীর মতো গর্জে উঠেছে করবী। ইউ রাসকেল্ হোয়াই আর ইউ প্রেসিং সো হার্ড! মাইন্ড ইট দ্যাট ইউ আর অ্যাবভ থার্টি-ফাইভ, হোয়ারআজ  আই এম টোয়েন্টি টু অনলি। থতমত উত্তম করুণ করে বলেছিল– মানে!

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...