হাতে স্বর্গ পেল নীলমাধব। আজ তার সরকারের দেওয়া ৩৫ বছরের জীবনের শেষ দিন। একটু আগেভাগেই অফিস যাবে। প্রতিদিনের মতো শুধু নিজের চেয়ার টেবিল মুছে, টেবিলের কাচের নীচে রাখা কালি ঠাকুরকে পেন্নাম ঠুকে, এক গেলাস জল ঢক ঢক করে গলায় ঢালা শুধু নয়, আজ তার অফিসের চেয়ারের চারটে পায়ে প্রণাম করবে। টেবিলে খানিকটা মাথা ঠুকবে। ভেবে রেখেছে একটু কাঁদবেও। চোখের জল দিলে দেবতা খুশি হন।

ওই চেয়ার-টেবিল তো তার ভগবান। অফিসের লোকজন আসার আগেই সেসব আচার করে ফেলতে হবে। লোকজনের সামনে করলে হাসাহাসি হবে। এ জীবনে তার জন্য তো আর কোনও চেয়ার অপেক্ষা করে থাকবে না। কত মায়া ছিল ওই কাঠের চেয়ারটার। ডেলি-রেটেড মজদুর হিসেবে ঢুকে নিজের অধ্যবসায় আর মিষ্টি ব্যবহার দিয়ে সকলের মন জয় করে আজ ক্লার্ক হয়ে রিটায়ার করছে।

হ্যাঁ, সকাল সকাল অফিস যাবে বলে একটু আগেই চানঘরে ঢুকে গেছে নীলমাধব। সঙ্গে অভ্যাসমতো খবরের কাগজ। কমোডের উপরে বসে খবরের কাগজ পড়া তার অন্যতম বিলাসিতা। ভাঁজ খুলতেই হলুদ কাগজের একটা ছোটো প্যামফ্লেট সড়সড় করে নেমে মেঝেয় পড়ে গেল। না ভেজেনি। নীলমাধব ঝুঁকে কাগজের টুকরাটো হাতে নিয়ে চোখ বোলাতেই তড়াক করে লাফিয়ে উঠল। কয়েকদিন ধরে মনের ভেতর ঢুকে আসতে থাকা অন্ধকার ফিকে হয়ে আসছে যেন। নগ্ন, নির্মেদ প্রায় ছয় ফিটের শ্যামবর্ণ শরীর নিজের অক্ষের উপর চরকি মারল। তার চোখে পড়েছে। প্যামফ্লেটের একেবারে নীচের দুটি লাইন– একটিমাত্র ফোন আপনার জীবনের পরিবর্তন আনতে পারে। রত্না ঘোষ, ফোন- ৯৭৬৮৫৫৪২৭২।

বউ ঘোষণা করে দিয়েছিল অনেক আগেই, ‘সারাদিন বাড়িতে বসে ট্যাঙস ট্যাঙস করে কথার ফোড়ন কাটবে, সেটি হবেনি। হাত-পা মজবুত আছে, কাজ-কাম করোগে যাও।’

নীলমাধব জানে, ওই ঘোষণা মানে আদেশ। সত্যি সত্যি সারাটা দিন তাকে সইতে পারবে না বউ। এ-কথার পিঠে সে-কথা, তারপর তো বাড়ি মাথায় করে কুরুক্ষেত্র। আর সেসব এড়াতে রাস্তায় রাস্তায় উদ্দ্যেশ্যহীন কতদিন আর ঘুরে বেড়াতে পারবে! সে এবার খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে প্যামফ্লেট পড়তে থাকে। হ্যাঁ হ্যাঁ আলো।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...