কাসোল কুল্লু জেলার একটি সাজানো পাহাড়ি গ্রাম। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য এই জায়গাটিকে অনেকে মিনি ইজরায়েল বলে অভিহিত করেন। পার্বতী নদীর তীরে এবং পার্বতী উপত্যকায় নিভৃতে সময় কাটাতে চাইলে যে কেউ কাসোলকে বেছে নিতে পারেন। আমাদের গন্তব্য ছিল নেচার পার্ক কাসোল। মণিকরণ থেকে প্রায় চার কিমি রাস্তা অতিক্রম করে আমরা কাসোল নেচার পার্কে উপস্থিত হলাম। এখানে বড়োদের প্রবেশমূল্য ত্রিশ টাকা, ছোটোদের কুড়ি টাকা। পার্কের মধ্যে দিয়ে পার্বতী নদী প্রবাহিত হয়েছে। পাইন গাছের সমারোহ, শান্ত নির্জন পরিবেশ, পাখির কলতান, খরস্রোতা পার্বতী নদীর গর্জন যে কোনও দর্শনার্থীকে আকৃষ্ট করবে সন্দেহ নেই। পাইন গাছের সারির মধ্যে দিয়ে হাঁটতে মন্দ লাগছিল না। পার্কটির সামনের দিকে বাচ্চাদের একটা খেলার জায়গা আছে। পার্কটিতে একটি ভেষজ গাছের বাগান আছে। বেশ কিছুক্ষণ সময় আমরা এখানে ব্যয় করলাম। ঘড়ির কাঁটা প্রায় দুপর দুটো ছুইছুই।

পার্ক থেকে বেরিয়ে আমরা একটি ক্যাফেতে ঢুকলাম। ঘুরে ঘুরে বেশ খিদেও পেয়েছিল। খাওয়া শেষে প্রায় দু-ঘণ্টা জার্নির পর আমরা হোটেলে পৌঁছালাম। ঘণ্টাখানেক বিশ্রাম নিয়ে হোটেলের চারপাশটা একটু ঘুরে বেড়ালাম। পাইন, দেওদার গাছের সারির মধ্য দিয়ে অলস সন্ধ্যা নামছে। ঠান্ডাও বাড়তে শুরু করেছে। কাল গাড়ি করে কোথাও যাওয়ার নেই, আশপাশ পায়ে হেঁটেই ঘোরা হবে। বেশ কিছুক্ষণ পর আমরা হোটেলে ফিরে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।
মানালিতে তৃতীয় দিন হিড়িম্বাদেবী মন্দির, ক্লাব হাউস, মনু মন্দির দেখার পরিকল্পনা ছিল। সকাল ন'টায় স্নান সেরে ভারী ব্রেকফাস্ট করে বেরিয়ে পড়লাম হিডিম্বাদেবী মন্দিরের উদ্দেশ্যে। হোটেল থেকে পনেরো মিনিটের হাঁটা পথে মন্দিরটি। এই হিডিম্বাদেবী মন্দির এখানে ধুংগারি মন্দির নামেও পরিচিত। মহারাজা বাহাদুর সিংয়ের আমলে এই প্রাচীন মন্দির তৈরি হয়। ১৫৫৩ সালে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়। মন্দিরের কাঠের স্থাপত্য অসাধারণ।

এটি অন্য হিন্দু মন্দিরের আর্কিটেকচার থেকে অনেকটাই আলাদা। এরকম স্থাপত্যশৈলী প্রথমবার দেখলাম। মন্দিরটি একটি পাথরের উপর অবস্থিত। স্থানীয়রা ভীমের স্ত্রী হিডিম্বার প্রতিরূপ মনে করেন। মন্দিরটি তুষারাবৃত পাহাড় আর দেওদার গাছ দ্বারা বেষ্টিত। মন্দির চত্বরে হিডিম্বার পুত্র ঘটোৎকচকে উৎসর্গ করে আরও একটি মন্দির রয়েছে। শান্ত স্নিগ্ধ পরিবেশ চারদিকে। মন্দিরে ভিড় ছিল না একদমই। শান্তিতে মন্দির পরিদর্শন করে বেরিয়ে এলাম।





