তাডোবা (মহারাষ্ট্র)
যাদের জঙ্গল আগে কখনও দেখা হয়নি তাদের Tadoba নামটা কিছুটা অচেনা ঠেকতে পারে। এটি ১৯৭২ সালে বেঙ্গল টাইগার সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ভারতে গৃহীত একটি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ প্রকল্প। ২০০৭ সালের হিসেব অনুযায়ী দেশের ৩১,৭৬১ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে ৪০টি ব্যাঘ্র প্রকল্প বন্যপ্রাণী সংরক্ষণাগার রয়েছে। ১৯৯০ এর দশকে বাঘের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৩,৫০০ কিন্তু ২০০৮ এ ব্যাঘ্রগণনা থেকে জানা যায় সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১,৪১১। কিন্তু প্রকৃতি প্রেমিক এবং বন-জঙ্গল ও বন্যপ্রাণী যারা ভালোবাসেন তাদের কাছে Tadoba আন্ধারি ন্যাশনাল পার্ক খুবই প্রিয় একটি ডেস্টিনেশন হয়ে উঠেছে। মহারাষ্ট্রের সবথেকে পুরোনো এবং বড়ো এই ন্যাশনাল পার্কটি, চন্দ্রপুর জেলায় অবস্থিত। নাগপুর থেকে মাত্র ৩ ঘণ্টার ড্রাইভ করে এখানে পৌঁছোনো যায়।
‘Tadoba' নামটি এসেছে, এখানকার আদিবাসীদের পূজ্য দেবতা ‘তাড়ু' থেকে এবং ‘আন্ধারি' হচ্ছে নদীর নাম যেটি এই সংরক্ষিত জঙ্গলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে চলেছে। এই ন্যাশনাল পার্কটির মূল আকর্ষণ হল এর ক্রমবর্ধমান বাঘের সংখ্যা। এছাড়াও রয়েছে অন্যান্য বন্যপ্রাণী যেমন লেপার্ড, শ্লথ বেয়ার, সম্বর, শিয়াল, বাইসন, কুমির, বার্কিং ডিয়ার, নীলগাই, স্পটেড ডিয়ার, উড়ন্ত কাঠবেড়ালি, বন্য শুয়োর ও কুকুর, লঙ্গুর ইত্যাদি। এই ন্যাশনাল পার্ক এবং ব্যাঘ্র প্রকল্পে বন্যসম্পদেরও ছড়াছড়ি। গাছের মধ্যে রয়েছে টিক, বিজা, ধাওদা, বাঁশ, হালদু, অর্জুন, তেন্দু, সালাই, জাম, মহুয়া ইত্যাদির সম্ভার। তাড়োবা হ্রদ-টিও টুরিস্টদের অন্যতম আকর্ষণের জায়গা। এখানে যাওয়ার সবথেকে ভালো সময় হল ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস।
কীভাবে যাবেন : সবথেকে সহজ উপায় নাগপুর হয়ে তাড়োবায় পৌঁছোনো। হাওড়া থেকে ট্রেনে নাগপুর (গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেস, আমেদাবাদ এক্সপ্রেস, হাওড়া-মুম্বই এক্সপ্রেস এবং হাওড়া-মুম্বই মেল জ্ঞানেশ্বরী সুপার ডিলাক্স)। নাগপুর থেকে চন্দ্রপুর গাড়ি, বাস সব যায়। চন্দ্রপুর থেকে Tadoba ন্যাশনাল পার্ক মাত্র ১ ঘণ্টার ড্রাইভ (৩২ কিলোমিটার)।
কোথায় থাকবেন : Tadoba লেকের সামনে এমটিডিসি-র রিসর্ট আছে। মহারাষ্ট্র ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের (এফডিসিএম) ৫টি ইকো-হাট এবং গেস্টহাউস সম্প্রতি টুরিস্টদের জন্য খোলা হয়েছে।