Bangriposhi (ওড়িশা)
কলকাতা থেকে প্রায় ২৩০ কিলোমিটারের দূরত্বে বাংরিপোশির জঙ্গল। ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলায় অবস্থিত বাংরিপোশি। অনাবিল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আকর এই বন্য পরিবেশ। সপ্তাহ শেষের ছুটির সঙ্গে দুটো-তিনটে দিন, অনায়াসে এখানে কাটিয়ে আসা যায়।
হাওড়া থেকে ট্রেনে বালাসোর প্রথমে পৌঁছোতে হবে। সেখান থেকে Bangriposhi প্রায় ১০০ কিলোমিটারের দূরত্ব। গাড়িতে পৌঁছোতে প্রায় দু'ঘণ্টা। বিএসএনএল ছাড়া অন্যান্য মোবাইল নেটওয়ার্ক কাজ করে না, ফলে সভ্যতার বিড়ম্বনা থেকে মুক্ত।
সিমলিপাল ন্যাশনাল পার্কের তোরণদ্বার বলা হয় বাংরিপোশিকে। এখান থেকে দু ঘণ্টার দূরত্বে ছোটো ছোটো টিলা ও ঠাকুরানি পাহাড় চোখে পড়ে। ঠাকুরানি ছাড়াও বুড়াবুড়ি পাথরকুসি, বিদ্যাভাণ্ডার নামের নানান পাহাড় ঘিরে রেখেছে রূপসী বাংরিপোশিকে। মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে খরকাই নদী। এই নদীর ওপরেই গড়ে তোলা হয়েছে সুলাইপাট ড্যাম। পথের দু’ধারে পড়বে আদিবাসীদের ছোটো ছোটো কুঁড়েঘর, নিকানো উঠোন আর সুদৃশ্য লতাপাতা আঁকা আলপনায় চিত্রিত দেয়াল এবং লাল মাটির রাস্তা ধরে এগিয়ে চলার অভিজ্ঞতা সহজে ভোলার নয়। চারিদিকে নির্জন প্রকৃতি যেন অভ্যর্থনা জানাচ্ছে নতুন আগত অতিথিকে। ঘন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে পাহাড়ি রাস্তায় দেখা মিলবে অসংখ্য বানর ও হনুমানের। জায়গায় জায়গায় রয়েছে হাতি চলাচলের করিডোর। নদীর সবুজ জল ড্যামের অপরদিকে বাঁধা পড়ে অপূর্ব এক মায়াজাল সৃষ্টি করেছে। 'পিকনিক স্পট' হিসেবে জায়গাটির জনপ্রিয়তা। এছাড়া স্বাধীনতা সংগ্রামী বাঘাযতীন, যে বুড়িবালাম নদীর চরে ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন সেটাও টুরিস্টরা দেখতে ভোলেন না। Bangriposhi রেল স্টেশন ছাড়িয়ে বুড়িবালাম নদীর ব্রিজ থেকে সূর্যদয় বা সূর্যাস্ত যেন শিল্পীর আঁকা ছবি। নদীর এক এক জায়গায় একেক রূপ। পাহাড়ের পটভূমিকায় ছোটো ছোটো ঝোপঝাড়ের মধ্যে দিয়ে বয়ে চলা বুড়িবালাম নদীর নৈঃস্বর্গিক সৌন্দর্য মনে দাগ কাটে। গা ছমছমে আরণ্যক পরিবেশে নানা দিক দিয়ে ব্রাহ্মণ কুণ্ডে যাওয়ার পথ রয়েছে, পথ কখনও পীচের বা কনক্রিটের আবার কখনও বা শুধুই লালমাটির। এখানের গ্রামে গেলে দেখতে পাওয়া যায় প্রসিদ্ধ ডোকরা আর্ট কীভাবে রূপ পাচ্ছে কারিগরদের হাতের জাদুতে। যাওয়ার আদর্শ সময় শীতকাল।