খোসবাগে নবাব আলিবর্দী ও তাঁর মা, নবাব সিরাজ-উদ-দৌল্লা ও তাঁর স্ত্রী লুৎফান্নেসার সমাধির কাছে দাঁড়িয়ে আবার মন চলে গেল ইতিহাসের কাছে। মসনদে বসে আলিবর্দী রাজ্য শাসন ও প্রজাপালনে কোনও শৈথিল্য দেখাননি। তবু তাঁর রাজত্বকাল কখনওই সুখের হয়নি। বর্গি ও পাঠানদের আক্রমণ প্রতিহত করতে তাঁকে জীবনের প্রায় শেষদিন পর্যন্ত ছুটে বেড়াতে হয়েছে কটক, পাটনা, কাটোয়া ও মেদিনীপুরে। ১৭৪৪ সালের ৩১ মার্চ পলাশীর অদূরে মানকরা যুদ্ধশিবিরে আলিবর্দীর নির্দেশে তাঁর বিশ্বস্ত সেনাপতিরা হত্যা করে বর্গি নেতা ভাস্কর পণ্ডিত ও তাঁর ২১ জন সেনাপতিকে।

এরপর মুর্শিদাবাদে ফেরার কিছুদিন পরে আপাত-নিশ্চিন্ত আলিবর্দী খাঁ তার প্রিয়তম দৌহিত্র সিরাজদৌল্লার বিয়ে দিলেন মির্জা ইরাজ খানের কন্যা ওমদা উন্নেসার সঙ্গে। ১৭৫২ সালের মে মাসে নবাব আলিবর্দী সিরাজকে তাঁর উত্তরাধিকারী মনোনীত করলেন। ইতিমধ্যে আলিবর্দী প্রিয় নাতির বায়না রাখতে তৈরি করে দিয়েছেন মনসুরগঞ্জ প্রাসাদ ও মনোরম হীরাঝিল। নৃত্য, গীত, বাদ্য আর সুরায় এখানেই ডুবে থাকতেন সিরাজ। আলিবর্দী তাঁর জীবনের অন্তিম সময়ে সিরাজকে রাজকার্য সম্বন্ধিত নানা উপদেশ দেন। সিরাজও অঙ্গীকার করেন সেসব মেনে চলার। ১৭৫৬ সালের ১০ এপ্রিল নবাব আলিবর্দী ৮০ বছর বয়সে দেহত্যাগ করেন। খোসবাগে মায়ের সমাধির পাশে তাঁকেও সমাধিস্থ করা হয়। আমরা বাগানের মাঝে খোসবাগ সমাধিক্ষেত্র দেখে অটোয় উঠে বসলাম এবং ফিরে চললাম হোটেল-এর পথে।

আজ দ্বিতীয় দিন, ব্রেকফাস্ট সেরে অটোয় চড়ে প্রথম গন্তব্য মুর্শিদাবাদের কাসিমবাজার প্যালেস-এর উদ্দেশ্যে যাত্রা। প্রায় ২০ মিনিট পর কাসিমবাজার এলাকার রাজবাড়ি পাড়ায় এক দুধ-সাদা প্যালেসের কাছে এসে পৌঁছোলাম। রায় বংশের এই রাজবাড়ি আজ পাঁচতারা হোটেলে রূপান্তরিত। প্যালেসে তখন কাজ চলছিল, তাই প্রবেশ নিষেধ। দ্বাররক্ষীকে অনুরোধ করে ভিতরে এসে অনন্য সুন্দর পালেসের ছবি নিলাম।

ইতিহাস জানায়, মুর্শিদাবাদ যখন বাংলার রাজধানী, কাশিমবাজার তখন গঙ্গার বাঁকে অবস্থিত এক জমজমাট বন্দর। ১৭০০ সাল নাগাদ পিরোজপুর গ্রামের বাসিন্দা অযোধ্যারাম রায় কাশিমবাজারে বাস করা স্থির করেন। তিনি এবং তাঁর পুত্র দীনবন্ধু রায় রেশম বেচাকেনা করে রেশম রপ্তানির ব্যাবসায় বড়ো সাফল্য পান। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি মুর্শিদাবাদের নবাবকে পরাজিত করার পর গঙ্গার গতিপথ সিধে করে। মুর্শিদাবাদ ও বহরমপুরের মধ্যে সোজাসুজি নৌকা চালানোর ব্যবস্থা করেন। ফলে কাশিমবাজারের গুরুত্ব কমে এবং রায় পরিবারও অন্য উপায় খুঁজতে থাকেন। দীনবন্ধু রায়ের পুত্র জগবন্ধু রায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দেওয়ান হয়েও পরে ওই চাকরি ছেড়ে বাংলাদেশের সরাইলে জমিদারি কেনেন। পরিবারের জনকল্যাণমূলক কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ব্রিটিশ সরকার আনন্দ প্রসাদ রায়কে ‘রায় বাহাদুর' উপাধি প্রদান করেন এবং পরে তাঁর পুত্র আশুতোষ নাথ রায়কে “রাজা” উপাধি দেন।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...