এই যাত্রাতেও কুম্ভ এক্সপ্রেস সময় মেনে দুপুর ঠিক ১টায় স্টেশন ছাড়ল। মানকড় স্টেশনে ট্রেন এসে পৌঁছোল ২টো ৩৫ মিনিটে। মনে পড়ল, কয়েক বছর আগে এখান থেকেই গিয়েছিলাম যমুনাদিঘি ও ভালকি মাচান বেড়াতে। জানলার বাইরে শরতের আবহাওয়া! হাওয়ায় দুলছে কাশফুল। উজ্জ্বল সূর্যলোকে ঝলমল করছে সবুজ মাঠ। ট্রেনের কামরায় বাংলা গান পুজোর গন্ধকে ছড়িয়ে দিয়েছে সবার মাঝে। বেশ ভালো লাগছে কাচের জানলায় চোখ রাখতে –পুকুরে ফুটে রয়েছে অজস্র পদ্মফুল, আর বকগুলো সাদা পাখা মেলে উড়ে চলেছে আকাশের দিকে। গাড়ি আসানসোল, যোশিডি হয়ে পৌঁছোল ঝাঝা স্টেশনে। স্লখান থেকেই আমাদের ৩ এসি কামরা আপামর জনসাধারণের এক্তিয়ারে চলে এসেছে। আমরাই এখন সংখ্যালঘু! রাত সাড়ে ৯টায় বাড়ি থেকে আনা খাবারে ডিনার সেরে শুয়ে পড়লাম।

সকাল ৭টায় উঠে চায়ে চুমুক দিতেই ট্রেন এসে পৌঁছোল লখনউ স্টেশনে। বেরিলি আসতে পৗনে ১টা। হরিদ্বারে গাড়ি পৌঁছোল ঠিক সময়েই। লাগেজ পিঠে নিয়ে প্লাটফর্মের বাইরে আসতেই দেখি ঝিরঝির করে বৃষ্টি পড়ছে। এসবিআই এটিএম-এ কাজ সেরেই চলে এলাম এক চা-দোকানে। হরিদ্বারে মামুলি কিছু কাজ ছিল। কিন্তু বিরামহীন বৃষ্টিতে পরিকল্পনা পালটে নিয়ে সোজা বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছোলাম এবং ঋষিকেশগামী বাসে চড়ে বসলাম। বাস ছাড়ল সাড়ে ৫টায়, গন্তব্যে পৌঁছোলাম সন্ধে ৭টায়। মদমহেশ্বর যাত্রার সময় যে প্ল্যান করেছিলাম, এবারেও তাই। বাসস্ট্যান্ডের কাছেই স্লক গেস্ট হাউস-এর দোতলায় একটি ঘরে এসে উঠলাম লাগেজ সহ। সেবার অবশ্য ছিলাম বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন অন্য স্লক লজ-এ। এবারের ব্যবস্থাটা কৌলীন্যে একটু উঁচুতে। উদ্দেশ্য একটাই, ভোরে গোপেশ্বরগামী প্রথম বাসটা ধরা। ডিনার সেরে শুয়ে পড়লাম রাত ১টায়।

গোপেশ্বর যাবার প্রথম বাস ভোর ৪টেয়। লাগেজ বাসের ডিকিতে ঢুকিয়ে অপেক্ষা করতে থাকি। ইতিমধ্যে, প্রাতঃকালীন চা-বিস্কুট খাওয়া হয়ে গেছে। আধঘণ্টা পরে বাসের কনডাক্টর জানায়, যাত্রী সংখ্যা কম বলে এই বাস ছাড়বে না। পরবর্তী বাস ভোর সাড়ে ৫টায়। রুদ্রপ্রয়াগগামী বাসটাই যাবে গোপেশ্বর পর্যন্ত। বড়ো ব্যাগ ডিকিতে রেখে ছোটো ব্যাগ সঙ্গে নিয়ে বসেছি। পতিতপাবনী গঙ্গাকে পিছনে ফেলে, সূর্যের নরম আলো গায়ে মেখে বাস চলতে লাগল পাহাড়ি পথে। ঘণ্টা দুই পরে আমরা দেবপ্রয়াগ এসে পৌঁছোলাম। এখানে যাত্রা বিরতি ২০ মিনিটের। বাস থেকে নেমে এক দোকানে বসে গরম গরম আলুপরোটা ও চায়ে প্রাতরাশ সারলাম। সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ ভাগিরথী-অলকনন্দার সঙ্গমস্থল ছেড়ে বাস আবার চলতে শুরু করল। বেলা ১টায় বাস এসে পৌঁছোল রুদ্রপ্রয়াগ। দুই বছর আগের যাত্রার স্মৃতি ভেসে আসে মনে– সেবারে এখান থেকেই বাস পরিবর্তন করতে হয়েছিল। এখানেও যাত্রাবিরতি, তাই বাস থেকে নেমে কিছুদূর এগিয়ে মন্দাকিনী ও অলকনন্দার সঙ্গমের ছবি নিলাম। গোচর ছাড়িয়ে বাস কর্ণপ্রয়াগ-এ পৌঁছোল দুপুর সোয়া ১টায়। রুদ্রপ্রয়াগ-এর মতো কর্ণপ্রয়াগও আজ চামোলী জেলার এক ব্যস্ত, বড়ো শহর। এখানে অলকনন্দার মিলন ঘটেছে পিণ্ডারী নদীর সঙ্গে। এই জায়গা মহাভারতের মহাবীর কর্ণের তপস্যাস্থল। আমার সবচেয়ে প্রিয় এই প্রয়াগে অনেকটা সময় কাটিয়েছিলাম।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...