ভ্রমণপিপাসু বাঙালির মন সর্বদা পালাই পালাই। দু-একদিন ছুটি পেলেই বেড়িয়ে পড়তে চান কংক্রিটের জঙ্গল ছেড়ে। হাতের কাছেই দু'রাত তিন দিনের ছোট্ট ছুটি কাটাবার কিছু অফবিট ডেস্টিনেশন-এর হদিশ পেলেই দে ছুট৷ বর্ষা কিংবা শীতে যেতে পারেন, এমন কিছু স্পটের বিষয়ে আলোকপাত করছি আমরা৷
দেওঘর – দুমকা – মল্লহাটি
দেওঘর, ঝাড়খণ্ডের পঞ্চম বৃহত্তম শহর। হিন্দু তীর্থযাত্রীদের কাছে পরিচিত বৈদ্যনাথ ধাম হিসেবে। নবদুর্গা টেম্পল, পাগলাবাবা টেম্পল, রাধাকৃষ্ণ নৌলাখা টেম্পল, হরিলা জোরিয়া শিব মন্দির অন্যতম দ্রষ্টব্য। শহরের পূর্বদিকে রয়েছে তপোবন। কথিত আছে, প্রাচীনকালে এখানে মুনিঋষিরা ধ্যান করতেন। সেই থেকেই নাম তপোবন।
দেওঘর থেকে দুমকা যাওয়ার পথে পড়ে ত্রিকূট পাহাড়। উচ্চতায় প্রায় আড়াই হাজার ফিট। এখান থেকেই ময়ূরাক্ষী নদীর উৎপত্তি। নদীর উপর দীর্ঘ রোপওয়ের মজা নিতে পারেন। অনুকূলচন্দ্র ঠাকুরের সৎসঙ্গ আশ্রমও তীর্থযাত্রীদের অন্যতম গন্তব্য।
দেওঘর থেকে দুমকা ৫৮ কিলোমিটার পথ। দুমকাকে ঘিরে রয়েছে চোখজুড়োনো পাহাড়শ্রেণি। শাল, মহুয়া, পলাশের দেশ দুমকা— বসন্তকালে আরও মনোরম। বাতাসে তরতাজা অক্সিজেন। গেস্টহাউসের জানালা দিয়ে কিছুটা দূরে শিবপাহাড় হাতছানি দিয়ে ডাকে।
মালুটি কিংবা মল্লহাটি। বাঁকুড়ার রাজ পরিবার মল্লদের নাম অনুসারে এই জনপদের নামাঙ্কণ। জঙ্গলের মাঝে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে শতাধিক মন্দির। বীরভূম, বাঁকুড়ার আদলে এখানকার মন্দিরগুলির টেরাকোটার অপূর্ব কাজ চোখ টানে। আর্কিওলজিক্যাল গুরুত্বও রয়েছে মন্দিরগুলির।
মল্লহাটিতে সেভাবে লজ, হোটেল গড়ে ওঠেনি। রামপুরহাটে থাকতে পারেন। সকাল সকাল গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন মল্লহাটির উদ্দেশ্যে। সারাদিন জঙ্গলের সান্নিধ্যে মন্দির ভাস্কর্যে মন ভরিয়ে ফিরে আসুন।
হাতে একটু সময় থাকলে কারুয়া-র এথনিক ভিলেজ ঘুরে আসতে পারেন। এখানকার বোটানিক্যাল গার্ডেন-ও দেখার মতো। ক্যাকটাস ও বনৌষধি গাছের হরেক সম্ভার। সব মিলিয়ে দিন তিনেকের টুর।
কীভাবে যাবেন : পূর্বা এক্সপ্রেস, হাওড়া মজফ্ফরপুর, উপাসনা এক্সপ্রেসে চেপে জশিডি স্টেশন। সেখান থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার গেলেই বৈদ্যনাথ ধাম।
কোথায় থাকবেন : সরকারি, বেসরকারি বহু হোটেল রয়েছে এখানে। আপনার পছন্দানুযায়ী যে-কোনও একটিতে যোগাযোগ করতে পারেন।