রাস্তার পাশে সবুজ গালিচায় রঙবেরঙা পাহাড়ি ফুল। দূরে কাঞ্চনজঙ্ঘার কোলে বরফের চাদর।নীচে তিস্তা৷ নদীর বয়ে আনা নুড়ি-পাথরের স্তূপ বাঁচিয়ে আঁকাবাঁকা পাথুরে পথ। উত্তরের পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসা নালায় সেই পথও কোথাও কোথাও আবার বরফগলা জলের তলায় মুখ লুকিয়েছে।পাকদণ্ডি বেয়ে যত উপরে উঠবেন, নীচে বয়ে চলা তিস্তা নদী ততই ফিতের মতো সরু দেখতে লাগবে।। উপত্যকা জুড়ে সবুজের উপস্থিতি৷ এভাবেই উঠতে উঠতে একসময় পোঁছে যাবেন বড়ামাঙ্গোয়ায়৷

বড়ামাঙ্গোয়া : দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে নানা ছোটো ছোটো গ্রামে এখন গড়ে উঠেছে ইকোটুরিজম বা হোমস্টে। তারই অঙ্গ হিসেবে পর্যটন ম্যাপে উঠে এসেছে বড়ামাঙ্গোয়ার নাম। এই অঞ্চলের মানুষজনের বাগান ঘেরা বাড়িতেই, পর্যটকরা গিয়ে থেকে আসতে পারেন। পাহাড়ি মানুষের আন্তরিকতা আর নিসর্গের উষ্ণ আলিঙ্গনে, দিন তিনেক কাটবে বেশ। নেপালি রান্নার স্বাদ, রং-বেরঙের ফুল আর পাহাড়ের সৌন্দর্যে মন ভরে যাবে। হোটেলে থাকার চেয়ে একদমই আলাদা এক অভিজ্ঞতা।

তিস্তাবাজার থেকে চড়াই রাস্তা গেছে তাকদার দিকে। এই পথেই ৬ কিলোমিটার বেঁকে গেলেই বড়ামাঙ্গোয়া। বাগানের মাঝে রয়েছে সাজানো ছবির মতো কটেজ। সামনের পাহাড়টাই কালিম্পং।

এই পাহাড় সুন্দরীর দিনের রূপ আর রাতের সৌন্দর্য দুই-ই বর্ণনাতীত। রাতে কালিম্পং শহরের আলোগুলো হাজার হাজার তারার মতো মিটিমিটি জ্বলতে থাকে। পূর্ণিমার রাত হলে তো কথাই নেই। অপার্থিব এক দৃশ্যের শরিক হবেন। শীতে গোটা গ্রামটাই ভরে ওঠে কমলালেবুতে। অজস্র কমলালেবুর গাছ এই অঞ্চলে। আছে একটি মনাস্ট্রি আর একটা গুহাও। ডে-ট্রিপে ঘুরে নিতে পারেন তাকদার অর্কিড হাউস, চা-বাগান প্রভতি। প্রকৃতির সান্নিধ্যে মন ভালো করার ঠিকানা বড়ামাঙ্গোয়া।

কীভাবে যাবেন : এনজেপি থেকে দার্জিলিং বা সিকিমগামী বাসে বা গাড়িতে তিস্তাবাজার। এখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে নিন বড়ামাঙ্গোয়ার।

কোথায় থাকবেন : এম কে প্রধান- ৯৮০০০ ৭২৬৩৯।

Travelogue Sangser

স্যাংশের

জায়গাটার নাম স্যাংশের। ছবির মতো সুন্দর এক পাহাড়ি গ্রাম। কালিম্পঙের অদূরে হিমালয়ে কোলে, জঙ্গুলে পরিবেশে যারা নির্জনবাসের কথা ভাবেন স্যাংশের তাদের হতাশ করবে না। কাঞ্চনজঙ্ঘার অসাধারণ ভিউ, আর অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ঠিকানা স্যাংশের। শিলিগুড়ি থেকে মাত্র ৮০ কিমি দূরে, সমুদ্রতল থেকে ৪০০০ ফিট উচ্চতায় এর অবস্থান।

গ্রামের নীচ দিয়ে বয়ে চলা তিস্তা আর পাহাড়ি ফুলে ঢাকা পথ সহজেই মন কেড়ে নেয় পর্যটকদের। সিল্ক রুট টুরের আগে কেউ কেউ এখানে এক রাত কাটিয়ে যান। বার্ড ওয়াচারদের জন্যও খুব আইডিয়াল এই জায়গা।

কীভাবে যাবেন : শেয়ার জিপে-এ শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পং। গাড়ি স্ট্যান্ডে নেমে স্যাংশের যাওয়ার গাড়ি ভাড়া করে নিন।

কোথায় থাকবেন : একটা মাউস ক্লিকেই স্যাংশের-এ থাকার জন্য পাবেন একাধিক হোম স্টে-র হদিশ। ইকো কটেজগুলি ইকো ফ্রেন্ডলি। পাবেন আন্তরিক আতিথেয়তা আর কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ অভ্যর্থনা। ভাড়া ১২০০ টাকার মধ্যে।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...