আমূল পরিবর্তন এসেছে আমাদের জীবনশৈলীতে৷ সকাল থেকে রাত অবধি অবাধ গতিতে ছুটে চলে জীবন৷ ভুল সময়ে খাওয়াদাওয়া, ঘুম না হওয়া, ফাস্টফুডের উপর নির্ভরশীলতা, সবেতেই প্রভাবিত হচ্ছে আট থেকে আশি।এছাড়া ধূমপান, মদ্যপানের মতো ক্ষতিকারক বিষয়গুলি তো আছেই। আধুনিকীকরন এবং বিশ্বায়নের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গিয়ে ক্রমশ জাঁকিয়ে বসছে একাধিক রোগ। একদিকে ধূমপানে যেমন বাড়ছে ক্যান্সারের প্রবণতা, অন্যদিকে সেডেন্টারি বা শারীরিকভাবে নিষ্ক্রিয় লাইফস্টাইলের জাঁতাকলে বাড়ছে মহিলাদের একাধিক শারীরিক রোগ, যার মধ্যে পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিজিজ অন্যতম।
কম বয়সি মেয়েদের মধ্যে ক্রমাগত বাড়ছে পিসিওএস অর্থাৎ পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম। ভয়ের বিষয়টি হল, বর্তমানে ভারতবর্ষে প্রজননক্ষম মহিলাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৬ শতাংশ মহিলা এই রোগের শিকার।
এই জটিল হরমোনঘটিত সমস্যায় প্রাথমিক লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে অনিয়মিত ঋতুস্রাব, ওজন বেড়ে যাওয়া, চুল ওঠা, ব্রণর সমস্যা বা মুখে অবাঞ্ছিত রোমের আধিক্য।
কোন বয়স আক্রান্ত
এর তিনটে বয়সসীমা রয়েছে। এক, ১২-১৩ বছরের স্থূলকায় কিশোরী। এক্ষেত্রে দেখা যায়, এদের একবার পিরিয়ড হওয়ার পর আর পিরিয়ড হয়নি। এরপর ২০-২৫ বছরের একটি দল, যাঁদের বিয়ের পর থেকেই বন্ধ্যাত্ব অর্থাৎ ইনফার্টিলিটির সমস্যা শুরু হয় এবং পাশাপাশি অনিয়মিত পিরিয়ড লক্ষ করা যায়। আরেকটা এজ গ্রুপ রয়েছে, যাঁরা ৩০-৩২ বছরের আশেপাশে, এদের মূল সমস্যা ওবেসিটি এবং অনিমিত পিরিয়ড। চিকিৎসকরা বলছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যাঁরা স্থূলকায়া তাঁরাই বেশি আক্রান্ত হন এই সমস্যায়, তবে ৩০ শতাংশ ক্ষেত্রে রোগা মহিলাদেরও পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিসিজ দেখা দিতে পারে।
রোগের কারণ
এই রোগের অন্যতম কারণ আমাদের জীবনশৈলী। জাংক ফুড খাওয়ার প্রবণতা, ফিজিক্যাল এক্সারসাইজ থেকে দূরে থাকা, ওবেসিটি বা স্থূলতা বেড়ে যাওয়া সবই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে এই রোগের কারণ। অনেক সময় অবশ্য বংশগত কারণেও এই রোগ হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সারা জীবন ধরে এর চিকিৎসা করে যেতে হয়।
পরিণাম কী?
সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেশার, করোনারি হার্ট ডিজিজেরও প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে।
চিকিৎসা : প্রথমে আল্ট্রা সোনোগ্রাফি করে দেখে নেওয়া হয়, সিস্টের আকার ও ওভারিতে এর অবস্থানের বিষয়টি। এর পরই ওষুধের মাধ্যমে চিকিত্সা শুরু হয়। চিকিত্সার পাশাপাশি প্রয়োজন ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন।