ফাস্ট ফুড আর হেকটিক লাইফের কারণে ব্রণ, ফুসকুড়ি এখন কমন সমস্যা হয়ে গিয়েছে। ব্রণ হওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে, যার মধ্যে অন্যতম ড্যানড্রাফ, অয়েলি স্কিন এবং কোষ্ঠকাঠিন্য। ইন্টারনাল চেক-আপ এবং ট্রিটমেন্ট-এর মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতেই পারে, তবে তা সময়সাপেক্ষ। এমতাবস্থায় সমস্যা থেকে চটজলদি মুক্তি পেতে হলে ভালো কোনও কস্মেটিক ক্লিনিক থেকে ওজোন ট্রিটমেন্ট করাতে পারেন।

এই ওজোন ট্রিটমেন্ট-এ মূলত হাই ফ্রিকোয়েন্সি মেশিন ব্যবহার করা হয়ে থাকে, যার দ্বারা স্কিন রিভাইটাইলাইজ এবং রিজুভিনেট হয়ে ওঠে। সঙ্গে হিলিং-এর প্রক্রিয়াও চলে দ্রুত গতিতে। এই ট্রিটমেন্ট করার সময় ত্বকের নিকটবর্তী আশেপাশের অক্সিজেন, ওজোন-এ পরিবর্তিত হয়ে যায়। যার অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ ত্বকের উপরের পরতে মিশে গিয়ে ত্বককে ফ্ল-লেস করে তোলে। এর অ্যান্টিফাংগাল আর অ্যান্টিসেপটিক গুণের কারণে ইনফেক্টেড স্কিনও দ্রুত ঠিক হয়ে যায়। যদি চেক-আপ করার পর জানতে পারেন যে আপনার ব্রণ-র সমস্যা হরমোন জনিত কারণে নয় সেক্ষেত্রে ওজোন ট্রিটমেন্টের পাশাপাশি রেড লেজার পদ্ধতিও ট্রাই করতে পারেন। এতে ব্রণ-র পাশাপাশি ত্বকের দাগছোপও চলে যাবে।

 

ঘরোয়া কিছু রূপটানের মাধ্যমেও ব্রণ-র সমস্যা থেকে রেহাই পেতে পারেন। নিম আর পুদিনাপাতা শুকিয়ে পাউডার বানিয়ে নিন। তারমধ্যে ১/২ চামচ ক্যালামাইন পাউডার, এক চিমটে হলুদ আর গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে মুখের ত্বকে ভালো ভাবে লাগিয়ে নিন। মিনিট কুড়ি রেখে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এই প্যাকের ব্যবহারে কয়েকদিনের মধ্যেই ব্রণ শুকিয়ে যাবে। নিমে থাকা ডিসইনফেক্টিং তত্ত্ব এবং পুদিনাতে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান ত্বককে অ্যাকনে-র হাত থেকে প্রোটেক্ট করবে। হলুদ এবং গোলাপ জলের সংমিশ্রণে ত্বক হয়ে উঠবে উজ্জ্বল, টানটান।

স্কার্স – টিনএজ-এ হওয়া হরমোনাল চেঞ্জের কারণে কমবেশি প্রায় প্রতিটি মেয়েকেই ব্রণ-র সমস্যায় ভুগতে হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই আবার এগুলি নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যায়। তবে খোঁটাখুঁটির কারণে ত্বকে থেকে যায় দাগছোপ। যা সুন্দর মুখকেও করে তোলে কদর্য। এর থেকে বাঁচতে রেড লেজার ট্রিটমেন্ট ভীষণ কার্যকরী।

অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রকৃতি হওয়ার কারণে, লেজার ত্বক থেকে সমস্ত রকমের ইনফেকশন দূর করে নতুন সেল্সগুলিকে রিজেনারেট করে। এটির কাজই হল ত্বকের ভিতরের পরতে মিশে গিয়ে ত্বকের দাগছোপ দূর করে ত্বককে সুন্দর এবং আকর্ষণীয় করে তোলা।

ব্রণ-র দাগ হালকা করতে বাড়িতেই স্ক্রাব বানাতে পারেন। প্রথমে নিমপাতা শুকনো করে পাউডার বানিয়ে নিন। তারপর এর সঙ্গে একচামচ মুসুরডাল বাটা, সামান্য হলুদ, চন্দনের পেস্ট আর মুলতানি মাটি দিয়ে একটা মিশ্রণ বানিয়ে নিন। চাইলে এর মধ্যে পাকা পেঁপের কাত্থ-ও মেশাতে পারেন। নিয়মিত ব্যবহার করলে তফাতটা বুঝতে পারবেন। এর জন্য রোজ আপনাকে মিনিট কুড়ি সময় ব্যয় করতে হবে। কাঁচা পেপেও দাগছোপ দূর করার জন্য আদর্শ। এতে প্যাপাইন নামক এনজাইম থাকে, যেটি দাগছোপ দূর করতে সাহায্য করে। তবে খেয়াল রাখবেন কখনওই বেশি রগড়াবেন না, প্যাকটি লাগানোর পর শুকিয়ে গেলে জলের ঝাপটা দিয়ে ধুয়ে নিন।

পিট্‌স – অনেক সময়তেই ব্রণ ও ছোটোবেলায় হওয়া চিকেনপক্স-এর কারণে মুখের ত্বকে ছোটো ছোটো গর্ত তৈরি হয়। যেগুলি বেশ দৃষ্টিকটূও। ডার্মাব্রেশন পদ্ধতির সাহায্যে এই সমস্যা থেকে পাকাপাকি ভাবে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। এই পদ্ধতিতে অ্যালুমিনিয়াম ক্রিস্টালের সাহায্যে ত্বকের উপরের পরত মেরামত করা হয়, ফলে দাগছোপ হালকা হয়ে গিয়ে ইন্সট্যান্ট গ্লো চলে আসে। ঘরোয়া টোটকা হিসাবে মুখের ত্বকে নারকেল তেল দিয়ে মাসাজ করতে পারেন। সবথেকে ভালো হয় যদি ভিটামিন-ই ক্যাপসুল লাগানো যায়। তবে পিট্‌স-এর সমস্যা দীর্ঘদিনের হলে, ঘরোয়া উপায়ে সারানো সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের দ্বারস্থ হওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...