একটা সময় ছিল যখন কোনও ফরসা মেয়ের চোখে কালো রোদচশমা দেখলেই ‘গোরে গোরে মুখড়ে পে কালা কালা চশমা’গানটা মনে পড়ে যেত। কিন্তু বদলেছে সময়, ধ্যান-ধারণা। ওই গানের মতোই পুরোনো হয়ে গেছে কালো রোদচশমা। ব্ল্যাক ইজ আউট। এটা রঙের যুগ। জামাকাপড় থেকে মাথার চুল, সবই এখন মাল্টিকালার্ড। তবে শুধু রং নয়, নানা আকৃতির সানগ্লাসও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে এখন। গোল, বর্গাকার, ডিম্বাকৃতি, ত্রিকোণ এবং এমনকী ক্যাট কিংবা প্রজাপতির মতো ফ্রেমের সানগ্লাসও এখন দারুণ জনপ্রিয়। আর বাজারে এখন দারুণ ইন মারকারি কোটিং দেওয়া বহুরঙ্গি সানগ্লাস।

শুধু সূর্যের তাপ থেকে চোখকে বাঁচাবার উপকরণই নয়, সানগ্লাস এখন অপরিহার্য ফ্যাশন অ্যাক্সেসরি। তাই গায়ের রং, শারীরিক গঠন এবং পোশাক ও অলংকারের সঙ্গে মানানসই সানগ্লাস ব্যবহার করা উচিত। তবেই, সানগ্লাস আপনার ব্যক্তিত্ববিকাশের পাশাপশি, স্টেটাস সিম্বলও হয়ে উঠবে।

ট্রেন্ডি সানগ্লাস

দোকানের শো-কেসগুলি একাধিক সানগ্লাসে ভরে ওঠে গ্রীষ্মকাল এলেই। আপনি যদি ট্রেন্ডি সানগ্লাস কিনতে চান, তাহলে আপনাকে ‘চুজি’হতে হবে। বাজারে এখন ৫০০ টাকা (ন্যূনতম) মূল্যের সানগ্লাসও পাওয়া যায়। তবে টাইমেক্সের ফাস্ট ট্র্যাক কালেকশন ৭৫০ টাকা থেকে শুরু। এছাড়া প্রিমিয়াম রেঞ্জের চশমাগুলি ২৫০০ টাকা থেকে পাওয়া যায়।  রেব্যান, ভোগ, কিলার লুপ, লকজোটিকা, স্কেরোক্লেক্স এবং আর্নট-এর মাঝারি রেঞ্জের সানগ্লাসগুলি ২০০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। প্রিভেটর স্পোর্টস আন্ডারকারেন্ট রেঞ্জের সানগ্লাসগুলি ৪০০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়।

আরমানি, আডিডাস, স্পাই, গুচি, এসপিরিট কিংবা রেভলন-এর মতো নামি কোম্পানির সানগ্লাসও পাওয়া যায়। তবে এইসব ব্র্যান্ডের সানগ্লাস কেনার খরচ কিছুটা বেশি। বৌনটোনের প্রিমিয়াম রেঞ্জের সানগ্লাসগুলি ২০০০ টাকা থেকে শুরু করে ৯০০০ টাকা পর্যন্ত দাম। ১৪০০ টাকা থেকে ৭৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে স্পাই কোম্পানির সানগ্লাস। আরমানির এম্পোরিয়াম এবং এঞ্জেল অবশ্য ২০০০ টাকায় পাওয়া যায়। সেরেঙ্গেটি সানগ্লাস পাওয়া যাবে ৩৩০০ টাকা থেকে ৪০০০ টাকার মধ্যে। এখন অবশ্য বাজারে কৃত্রিম রত্নখচিত সানগ্লাসও পাওয়া যাচ্ছে। যার দাম ১৫০০ টাকা থেকে শুরু। সিম্পল পার্টি কিংবা ফর্মাল মিটিং-এ এইসব সানগ্লাস আপনার ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করবে।

রং এবং লেন্স

শহরের নামি সানগ্লাস বিপণির কর্ণধারের মতে, ‘শেডেড পিংক, ভায়োলেট, শেডেড রেড, টারকোয়াইজ এবং হলুদ রঙের লেন্সের সঙ্গে, সাইক্লেমেন ব্লু, ব্রাইট পিংক বেইজ রেড, ব্রাউন অথবা প্যাস্টেল শেডের ফ্রেম ব্যবহার করা উচিত। সঙ্গে অ্যানিম্যাল প্রিন্টসও চলছে খুব। সবসময় ব্যবহারের জন্য, ব্রাউন সানগ্লাস কেনাই উপযুক্ত। এছাড়া, তাপ এবং ছায়াতে রং পরিবর্তনের জন্য ফোটোক্রোম্যাটিক লেন্সের সানগ্লাস নেওয়া উচিত। আজকাল বাজারে মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ কালারের সানগ্লাস পাওয়া যায়, যা ব্রাউন-রেড-ইয়েলো কিংবা রেড-গ্রে-গোল্ডেন কালারের হতে পারে। সঙ্গে মারকারি কোটিং থাকলে তো কথাই নেই।

মুড অনুসারে সানগ্লাসের কালার নির্বাচন করুন। যদি হালকা মেজাজে বন্ধুদের সঙ্গে থাকেন, তাহলে ব্যবহার করতে পারেন লাইট ফর্মাল গ্লাস। যেমন ইয়েলো, লাইট ব্লু, কিংবা পিংক কালারের সানগ্লাস। আর যদি স্পোর্টিং মুডে থাকেন, তাহলে ব্যবহার করুন স্পোর্টস সানগ্লাস। কারণ এই সানগ্লাস সবরকম শেড্‌স এবং শেপে পাওয়া যায়। স্পোর্টস সানগ্লাসের জন্য গুচি এবং ভারসাচি ব্র্যান্ডের ফ্রেম সংগ্রহ করতে পারেন। এর রেঞ্জ ৩০০০ টাকা থেকে শুরু। গ্রীষ্মকালের জন্য সাইক্লেমেন-ব্লু এবং ব্রাইট পিংক কালারের সানগ্লাসও পাওয়া যায় ওই ব্র্যান্ডের।

মার্কেট

বাজারে এখন লেটেস্ট মডেলের সবরকম সানগ্লাসই পাওয়া যায়। কারণ নতুন ডিজাইন এবং নিত্যনতুন কালারের সানগ্লাসই এখন সবার পছন্দ। কলকাতায় নামি কোম্পানির শো-রুমগুলি থেকে আধুনিক ডিজাইনের এবং রুচিসম্মত সব ধরনের সানগ্লাসই সংগ্রহ করা যায়।

মুখের গঠন অনুযায়ী সানগ্লাস

যাদের মুখের গঠন গোল, তারা গোলাকার ফ্রেম না পরে, বর্গাকার ফ্রেমের সানগ্লাস পরতে পারেন। চৌকো মুখের জন্য ফ্রেমের উপরের দিক সোজা এবং নীচের দিকটা ওভাল শেপের হলে মানানসই হবে। তবে হার্ট শেপের মুখাকৃতি হলে, ত্রিভুজাকৃতি ফ্রেমের সানগ্লাস না পরাই ভালো। কারণ তা নাক এবং মুখের সৌন্দর্য নষ্ট করে। এই ধরনের মুখাকৃতি হলে ডিম্বাকৃতি ফ্রেমের সানগ্লাস ব্যবহার করা উচিত। আর যাদের মুখ ডিম্বাকৃতি, তারা বড়ো ফ্রেমের লেটেস্ট ডিজাইনের সানগ্লাস পরলে বেশ ভালো লাগবে।

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...