ফ্যাশন এবং ট্রেন্ড অনুযায়ী ফ্যাশন স্টেটমেন্ট-এ পরিবর্তন এসেছে। লম্বা চুলের বদলে চুল ছোটো করে ফেলতেই বেশিরভাগ মহিলা পছন্দ করছেন।

শর্ট হেয়ার-এর সঙ্গে চুলের রং সম্পর্কেও মেয়েরা আজ যথেষ্ট সচেতন। পোশাকের রং বাছার বেলায় তারা যতটা চুজি, চুলে কোন রং অ্যাপ্লাই করবেন সেটাও তারা যথেষ্ট ভেবেচিন্তেই করেন। বিশেষ করে যেসব মেয়ে অথবা মহিলারা নিজেদের চুলের স্বাভাবিক রং নিয়ে খুশি নন, তাদের সন্তুষ্ট করার জন্য মার্কেটে নামিদামি ব্র্যান্ডের হেয়ার কালার প্রচুর রয়েছে। তবে কালার বাছবার সময় সাবধান না হলে সৌন্দর্য বাড়ার বদলে পুরো লুকটাই নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

অনেকেই আছেন যারা পছন্দের অভিনেত্রীদের আদর্শ মনে করে তাদের লুক কপি করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কাউকে আদর্শ মনে করে হেয়ার কালার বাছা কখনওই বাঞ্ছনীয় নয় বরং নিজের পার্সোনালিটি, স্কিন টোন, প্রফেশন এবং আইবলস্-এর কালার অনুযায়ী হেয়ার কালার বাছা উচিত।

কালার লেভেলস জানা জরুরি

বেশিরভাগ মহিলাদেরই নিজের চুলের কী রং সেটাই ঠিকমতো জানা থাকে না সুতরাং চুলের জন্য সঠিক রং বাছতে গিয়ে সেখানেই বড়ো ভুল করে বসেন তারা। অগত্যা কালার বাছার আগে নিজের চুলের স্বাভাবিক রং কী, সেটা জেনে রাখাটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। হেয়ার কালার স্পেশালিস্ট ইন্দ্রজিতের মতে চুলের কালারকে ১২টি শেডে বিভক্ত করা যায়। এই ১২টি শেডের লেভেল-এর মধ্যে মাত্র ১ থেকে ৫ পর্যন্ত লেভেল-এর শেড-ই ভারতীয়দের চুলে পাওয়া যায়। এর মধ্যে ব্ল্যাক, জেড ব্ল্যাক, ব্রাউন, ডার্ক ব্রাউন এবং লাইট ব্রাউন রং-ই দেখতে পাওয়া যায়।

চুলের স্বাভাবিক রং জানাটা এইজন্য জরুরি যাতে চুলের জন্য কোন রংটা সুইটেবল হবে, সেটা চট করে বোঝা যায়। যে-কোনও রং বাছলেই হয় না। উদাহরণ স্বরূপ, চুলের রং যদি হালকা হয় তাহলে গাঢ় রঙের শেডের হেয়ার কালার চট করে ধরে যায়। কিন্তু চুল গাঢ় রঙের হলে হালকা রং ধরতে খুব মুশকিল হয়। হেয়ার কালার এক্সপার্টের মতে কালো চুলে যে-কোনও শেডই লাগানো হোক না কেন, ১০০ শতাংশ ফলাফল কখনওই পাওয়া যায় না। অনেক সময় মেয়েরা চুলে ব্লিচ ব্যবহার করেন। এর ফলে চুলে কালার এফেক্ট আসে ঠিকই কিন্তু এই পদ্ধতি চুলের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। এছাড়াও কেমিক্যাল ট্রিটেড চুলে কালার ধরতেও খুব অসুবিধা হয়। তাইজন্য চুলের কালার অনুযায়ী রং বাছা উচিত তো বটেই, সঙ্গে চুলের রঙের সঙ্গে অত্যধিক কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট করানো অত্যন্ত ক্ষতিকারক।

ডেভেলপার সংখ্যা সম্পর্কে জ্ঞান

হেয়ার কালারিং-এর সবকিছুই নির্ভর করে ডেভেলপারের উপর। এটার সাহায্যেই চুলের রং-কে লিফ্ট করানো হয়। ডেভেলপারে সাধারণত ৩টে নম্বর থাকে। যে-কোনও ব্র্যান্ডই হোক না কেন ২০,৩০,৪০ নম্বরের ডেভেলপারই ব্যবহার করা হয়। ২০ নম্বরের ডেভেলপার যেখানে চুলের রংকে ১ থেকে ২ লেভেল পর্যন্ত লিফ্ট করতে পারে সেখানে ৩০ নম্বর ডেভেলপার ৩ থেকে ৫ লেভেল পর্যন্ত চুলের রং-কে লিফ্ট করে। ৪০ নম্বর ডেভেলপার চুলের রংকে ৫ থেকে ৭ লেভেল পর্যন্ত লিফ্ট করতে পারে এবং পুরোটাই নির্ভর করে কোন কালারের শেড বেছেছেন তার উপর।

রং বাছুন স্কিন টোন দেখে

হেয়ার কালার বাছার ক্ষেত্রে যতটা দরকার নিজের চুলের স্বাভাবিক রং কী সেটা জানা, ততটাই প্রয়োজন স্কিন টোন সম্পর্কে প্রচ্ছন্ন ধারণা থাকা। প্রত্যেকের স্কিন টোন আলাদা হয়। যদি চুলের রং বাছার সময় স্কিন কালার খেয়াল করা না হয় তাহলে তার প্রভাব পড়ে ব্যক্তির পার্সোনালিটির উপর। পেল হোয়াইট স্কিনের মহিলার চুল যদি জেড ব্ল্যাক করে দেওয়া হয়, তাহলে মানানসই লাগে না দেখতে। মুখটা ফ্যাকাশে মনে হয় দেখলে, আর ফিচার্স অস্পষ্ট লাগে। সুতরাং এই ধরনের স্কিন যাদের, তাদের ব্রাউন অথবা লাইট ব্রাউন শেডের হেয়ার কালার বাছা উচিত। আলাদা স্কিন কালার টোনের জন্য আলাদা হেয়ার কালার বাছা উচিত, যেমন–

ডার্ক স্কিন টোন – এই স্কিন টোনের মহিলাদের ব্ল্যাক এবং জেড ব্ল্যাক হেয়ার কালার সব থেকে ভালো লাগে দেখতে। এতে ত্বকের রং-ও ফরসা লাগে দেখতে। এই কালার টোনের মহিলাদের হালকা শেড বাছা উচিত নয়।

হুইটিশ স্কিন টোন – ভারতে এই স্কিন টোনের মহিলার সংখ্যা সবথেকে বেশি। এই স্কিন টোন-এ ব্ল্যাক এবং ডার্ক ব্রাউন শেড সবথেকে বেশি মানায়। চাইলে বার্গেন্ডি রং-ও বাছা যেতে পারে। বার্গেন্ডি রং-ও এই স্কিন টোনের মহিলাদের রিচ লুক দিতে সক্ষম।

ফেয়ার স্কিন টোন – এই কালার টোনে লাইট ব্রাউন এবং লাইট ব্লন্ড শেড খুব সুন্দর লাগে দেখতে।

খেয়াল রাখুন

১)  যদি চুল সাদা হয় তাহলে ব্ল্যাক বা লাইট ব্রাউন শেড ব্যবহার করবেন না। এই রং লাগালে নকল চুল লাগিয়েছেন বলে মনে হবে অথবা বোঝাই যাবে চুলে রং করা হয়েছে। সাদা চুলের জন্য সবসময় ডার্ক ব্রাউন শেডই বাছুন।

২)  বারবার হেয়ার কালারের ব্র্যান্ড বদলাবেন না। এর ফলে চুল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং রঙের শেড-ও বদলে যায়।

 

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...