সূর্যরশ্মির প্রভাব সরাসরি আমাদের ত্বকের উপর পড়ে। এর ফলে ত্বকে কালো ছোপ পড়ে। অনেকের সূর্যরশ্মির প্রভাবে হিট র‌্যাশ বেরোয়। ত্বক লালচে হয়ে চুলকোতে থাকে। অনেকের আবার লাল ফোস্কা পড়ে যায়। যাকে সানবার্ন বলা হয়। ত্বকের আর্দ্রভাব কমে আসার ফলে ত্বকে শুষ্কতা চলে আসে। অতিবেগুনি রশ্মির নেতিবাচক প্রভাবে, রিংকল্স-এর সমস্যা বৃদ্ধি পায়।

আপনি যদি এই ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হন, ভয় পাবেন না। আমরা আপনার জন্য এনেছি এমন কিছু ঘরোয়া উপশম, যার ফলে কিছুদিনের মধ্যেই মুক্তি পাবেন এই সমস্যা থেকে।

রান্নাঘরেই সমাধান

আপনার এই সমস্যার সমাধান সূত্র রয়েছে আপনার রান্নাঘরেই। সানবার্ন হয়েছে

যে-জায়গায়, সেখানে কাঁচা আলু থেঁতো করে লাগান। এতে কালচে দাগ তো দূর হবেই, সানবার্ন-এরও সুরাহা হবে। প্রয়োজনে আলুর রস তৈরি করে রেখে দিন ফ্রিজে। এতে তুলো ভিজিয়ে বারে বারে প্রলেপ দিন সানবার্ন-এর উপর। লেবুর রসও মেশাতে পারেন আলুর রসের সঙ্গে। তবে যখনই প্রলেপ দেবেন, অন্তত ২০ মিনিট এটা যেন ত্বকের উপর থাকে। এরপর ঠান্ডা জলে ধুয়ে নিলেই হবে। এর নিয়মিত ব্যবহারে সানবার্ন-এর সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

আলুতে ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার ছাড়াও থাকে ন্যাচারাল ব্লিচিং প্রপার্টিজ। এর সঙ্গে ভিটামিন সি অর্থাৎ লেবুর রস মেশানোর ফলে, পিগমেন্টেশন দূর করার ক্ষমতা তৈরি হয়। স্কিনের রং ফেরাতে যা সাহায্য করে।

ঘরোয়া প্যাকে সমাধান

লাল মুসুর ডালের প্যাক সানবার্ন-এর সমস্যায় কিন্তু দারুণ উপকারী। এর জন্য আপনাকে ঘন্টাখানেক ধরে ডালটাকে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এর পর ডাল মিক্সিতে বেটে একটা স্মুদ পেস্ট তৈরি করুন। এর মধ্যে ১ চামচ টম্যাটোর রস মেশান, অল্প অ্যালোভেরা জেল। ব্যস, তৈরি সানবার্ন-এর অব্যর্থ টোটকা।

সানবার্ন-এ ক্ষতিগ্রস্ত ত্বকের উপর এই মিশ্রণ মিনিট পাঁচেক মাসাজ করে, অন্তত আধঘন্টা এই পেস্ট লাগিয়ে রাখুন। তারপর সাধারণ জলে ধুয়ে নিন। বদলটা আপনার নজর এড়াবে না।

মুসুর ডাল আপনার ত্বকের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী। এর কারণ এতে আছে ভিটামিন সি, যা সানবার্ন সারাতে দারুণ কার্যকর। এটাই আপনার স্কিনটোন ইমপ্রুভ করতেও সহায়তা করবে।

নিউট্রিযে্টস থাকার সুবাদে, এটা ড্রাই প্যাচ দূর করতেও সাহায্য করে। একে সেই জন্য স্কিন ক্লিনজারও বলা হয়। মুসুর ডালে আপনার ত্বক হেলদি, ফ্রেশ এবং উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। সেই সঙ্গে অ্যালোভেরার গুণাগুণকে অস্বীকার করলে চলবে না। এতে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল, এনজাইমস, অ্যামিনো অ্যাসিড, স্যালিসিলিক অ্যাসিড, অ্যান্টি অক্সিড্যান্টস্ প্রভৃতি। এগুলি সবই অ্যান্টি এজিং এজেন্ট এবং কালচে ভাব দূর করতে দারুণ সহায়ক।

বেসন হলুদের প্যাক

ত্বকের রং ফেরাতে, জুড়ি নেই বেসন-হলুদের প্যাক-এর। দাগছোপহীন ত্বকের জন্য এটা ব্যবহার করা যেতে পারে। এর জন্য আপনার লাগবে ১ ছোটো চামচ বেসন, ১/২ ইঞ্চি টুকরো কাঁচা হলুদবাটা, লেবুর রস, ১ ছোটো চামচ মধু। এবার একটা পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট মুখে লাগিয়ে অন্তত আধঘন্টা অপেক্ষা করুন। তারপর মুখ ধুয়ে নিন। প্রতিবার এই প্যাক লাগানোর পরে রঙের তফাতটা আপনার নজরে পড়বে। সানবার্ন-এর প্রকোপও ধীরে ধীরে কমতে থাকবে। ভালো ফলের জন্য সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ বার এই প্রক্রিয়া করতে হবে।

বেসন প্রাকৃতিক ভাবেই এক্সফলিয়েটর-এর কাজ করে। এর ফলে মৃত কোশ সহজেই ঝরে যায়। ত্বক প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। হলুদের জুড়ি নেই ম্লান ত্বকে ঔজ্জ্বল্য আনতে। পিগমেন্টেশনের সমস্যা থেকেও মুক্তি পাবেন সহজেই। মধুতে থাকে স্কিন সেল হিল আপ করার গুণ। ফলে ত্বকের স্বাভাবিক নমনীয়তা ফিরে আসে।

আইস কিউব ট্রিটমেন্ট

সবার বাড়িতেই থাকে এই উপাদানটি। সানবার্ন সারানোর এটা একটা দারুণ সহায়ক উপকরণ। সানবার্ন-এর উপর বরফ ঘষুন এতে ত্বকে ঠান্ডা ভাব আসবে। ঝলসানো ত্বক আরাম পাবে। এর ফলে জ্বালা-প্রদাহ অনেকটাই কমবে। ডার্ক সার্কলস নিরাময়ে বরফ অতি জরুরি উপকরণ।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...