১৪ জুন সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন। সেই দিনের আগেই দিল্লি হাইকোর্টের একটি রায়, প্রয়াত অভিনেতার পরিবারের বিপক্ষে গেল।বস্তুত, প্রয়াত অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর অনেকেই তাঁর জীবনকাহিনি ভিত্তিক ছবি তৈরি করতে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। কিন্তু সুশান্তের বাবা কৃষ্ণ কিশোর সিং এ ব্যাপারে আগাগোড়াই আপত্তি করে এসেছেন।তাই তিনি দ্বারস্থ হয়েছিলেন আদালতের।

কিন্তু তাঁর দায়ের করা পিটিশন খারিজ করে দিল দিল্লি উচ্চ আদালত। সুশান্তের উপর ছবি তৈরি হলে, অযাচিত ভাবে তাঁর পরিবারের ভাবমূর্তির উপর প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সুশান্তের বাবা। তাই কেউ যাতে ছেলের জীবন নিয়ে ছবি করতে না পারে, এই মর্মে রায় দিক আদালত, এই ছিল তাঁর আবেদন।

এই আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার ফলে, তাঁর মৃত্যুরহস্যের ওপর তৈরি ছবি ন্যায়: দা জাস্টিস মুক্তি পেতে আর কোনও বাধা রইল না। মামলার শুনানিতে কেকে সিংয়ের তরফে আইনজীবীরা বলেছেন, ‘প্রযোজকরা এই করোনা আবহের সুযোগ নিয়ে ছবি রিলিজ করতে চাইছে। যদিও আবেদনকারীর দাবি সুশান্তের জীবনী নিয়ে তৈরি কোনও ছবি, বই, ওয়েব সিরিজ, নাটক তাঁর এবং পরিবারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করবে’।

জানা গিয়েছে শুধু ন্যায়: দা জাস্টিস নয়, শুশান্তের মৃত্যুরহস্যকে ঘিরে তৈরি হয়েছে আরও কিছু ছবি। সুইসাইড অর মার্ডার: এ স্টার ওয়াজ লস্ট, শশাঙ্ক এবং একটি নাম ঠিক না হওয়া ছবি রয়েছে এই তালিকায়।

এই মর্মে চারটি মামলা রুজু করেছে আইনজীবী অক্ষয় দেব, বরুণ সিং, অভিজিত পান্ডে, সম্রুদ্ধি বেদভর। চলতি মাসেই ন্যায় মুক্তি পাওয়ার কথা। পাশাপাশি শ্যুটিং শুরু হবে সুইসাইড অর মার্ডার: এ স্টার ওয়াজ লস্ট ও শশাঙ্কের।

জানা গেছে সুশান্তের পরিবারের সম্মতির তোয়াক্কা না করেই তৈরি হয়েছে এই ছবিগুলো। এই প্রেক্ষিতে ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন সুশান্ত সিংয়ের পরিবার।

এদিকে, অভিনেতার মৃত্যু-মামলায় এসেছে এক নয়া মোড়। হায়দরাবাদ থেকে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো, মাদকচক্রে গ্রেফতার করেছে সুশান্তের ঘনিষ্ঠ বন্ধু সিদ্ধার্থ পৈঠানিকে।সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকেই সিদ্ধার্থ পৈঠানি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির সন্দেহভাজনের তালিকায় ছিলেন।গত একবছরে একাধিকবার তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছে সংস্থাগুলির তরফে।

২০২০ সালের ১৪ জুন বান্দ্রায় সুশান্তের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয় অভিনেতার ঝুলন্ত দেহ। ।সুশান্তের সঙ্গে একই ফ্ল্যাটে থাকতেন সিদ্ধার্থ। যে-চারজন প্রথমে সুশান্তের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান, তাঁদের মধ্যেই একজন সিদ্ধার্থ। পাশাপাশি অভিনেতার বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীরও ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন তিনি।অভিনেতার মৃত্যুর পর রিয়ার কল রেকর্ড থেকে দেখা গিয়েছিল ওই বছরেই সিদ্ধার্থের সঙ্গে প্রায় একশোবারেরও বেশি কথা হয়েছে তাঁর। সুশান্তের মৃত্যুর পর তাঁকে নিয়ে তদন্তকারী সংস্থা এবং সংবাদমাধ্যমের কাছে একাধিক বার কথা বললেও, এই প্রসঙ্গ উঠলেই, বারবার এড়িয়ে যেতেন সিদ্ধার্থ। কিন্ত সম্প্রতি জি নিউজের হাতে এসেছে একটি নথি যেখানে দেখা গিয়েছে রিয়া, সারা আলি খানের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন। অভিযোগে রিয়া দাবি করেছেন, তাঁকে মারিজুয়ানা আর ভদকা অফার করেছিলেন সারা ।

সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী নার্কোটিকস কনট্রোল ব্যুরোর জেরায় সারা আলি খানকে, সুশান্তের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। তখনই নাকি তিনি জানান, খুব অল্প সময়ের জন্যেই তাঁদের মধ্যে একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। কিন্তু সেই সম্পর্কে তাঁর প্রতি সম্পূর্ণভাবে অনুগত ছিলেন না সুশান্ত।তাই ২০১৯ সালেই ব্রেকআপ হয় সারা এবং সুশান্তের।

তদন্ত চলবে আরও বেশ কিছুদিন, বেরিয়ে আসবে আরও নানা তথ্য। কিন্তু অনুরাগীদের হৃদয়ে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে তা হয়তো সহজে মুছবে না।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...