প্রকৃতির প্রভাব মনের উপর সবচেয়ে বেশি করে পড়ে। তাই মেঘমেদুর বর্ষাদিনে মনটাও খানিকটা মেঘলা হয়ে থাকে। এরকম পরিস্থিতিতে পোশাকের রং আপনাকে চনমনে করে তুলতে পারে। নিমেষে মুড চেঞ্জ করার একটা অজুহাত হতে পারে পোশাক। ফ্যাশনেবল হয়ে উঠুন আর বেরিয়ে পড়ুন বন্ধুদের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটাতে।

বর্ষা শুরু হওয়ার আগেই তাই রিঅ্যারেঞ্জ করুন নিজের ওয়ার্ডরোব। মরশুমি ফ্যাশন মাথায় রেখে, দু-একটি নতুন পোশাকও জুড়তে পারেন তালিকায়।

ফ্যাশন টিপ্স

প্রথমেই নিজেকে মানসিকভাবে এই আশঙ্কা থেকে মুক্ত করুন যে বর্ষাকালে সাজগোজ নষ্ট হয়ে যাবে, পোশাক ভিজে যাবে। বর্ষায় হঠাৎ হঠাৎ হুড়মুড়িয়ে বৃষ্টি নামবে, বা টানা দু’দিন ধরে বৃষ্টি চলতেই থাকবে– এমন মানসিক প্রস্তুতি নিয়েই ঋতুটিকে অভ্যর্থনা জানান। তাই পোশাক এমন হওয়া উচিত, ভিজলেও যা চট করে শুকিয়ে যাবে।

গরমকালে হালকা রং আমাদের পছন্দের শীর্ষে থাকে কিন্তু বর্ষায় ফিকে রং দেখতেও অপরিচ্ছন্ন লাগে আর মনের উপরেও একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই বর্ষায় পরুন উজ্জ্বল রঙের পোশাক। গাঢ় রং অপরিষ্কারও দেখাবে না। ফ্লোরাল গ্রিন, প্যাস্টেল রেড, ইলেকট্রিক ব্লু, ফ্লোরাল ইয়েলো, অরেঞ্জ, ডার্ক গ্রে, ডার্ক ব্ল্যাক রাখতে পারেন আপনার পোশাকের রঙের তালিকায়।

সালেয়ার কামিজ, লেগিংস-কুর্তি, লং স্কার্টস– যাই পরুন না কেন, খেয়াল রাখবেন লোয়ার পার্ট-টি যেন অবশ্যই চড়া রঙের হয়। স্কার্ট পরলে ডার্ক পিংক, ডার্ক চকোলেট বা ডার্ক রেড পরতে পারেন লাইট কালারের টপের সঙ্গে। এই ধরনের কম্বিনেশন একাধারে রোমান্টিক তো বটেই, সেইসঙ্গে দৃষ্টিনন্দনও।

অফিসওয়্যার হিসাবে শাড়ি বা সালোয়ার কামিজ যদি আপনার পছন্দের তলিকায় থাকে, তাহলে বড়ো বড়ো জাঙ্ক প্রিন্ট্স-ই বাছুন। নজরকাড়া লাগবে। সঙ্গে কালার ব্যালেন্স করতে, লাইট কালারের ব্লাউজ পরুন শাড়ির সঙ্গে, আর একটা সলিড কালারের লেগিংস বা সালোয়ার পরুন কামিজ বা কুর্তির সঙ্গে।

ইয়ং জেন-রা  টি-শার্টের রঙের ব্যাপারেও গাঢ় কিন্তু উজ্জ্বল রং নির্বাচন করুন। সঙ্গে থ্রি-কোয়ার্টার প্যান্টস বা অ্যাঙ্কল লেংথ লাইট ওয়েট জিন্স চলতে পারে। পায়ে বর্ষার উপযুক্ত স্লিপার্স বা ফ্লিপফ্লপ।

বর্ষার ফ্যাব্রিক

বর্ষায় লাইট ওয়েট কটন পরা ভালো। এর কারণ বৃষ্টি হলেও বাতাসে হিউমিডিটি অতিরিক্ত থাকায়, একটা গরমের অনুভূতি হয়। তাই কটন আরামদায়ক হবে। হালকা ওজনের কেপ্রি আর কটন বারমুডা, ইয়ং জেনারেশনের বর্ষার প্রিয় পোশাক। হট প্যান্টস্ এখন টিনস-দের দারুণ প্রিয়। যদি আপনাকে পেশাগত কারণে রাস্তায় বেশি ঘোরাঘুরি করতে হয়, তাহলে কটনের বদলে বাছুন শিফন, ক্রেপ, লিজিবিজি, পলি বা নাইলনের সিন্থেটিক পোশাক।

আপনার ওয়ার্কপ্লেসে শাড়ি পরা যদি বাধ্যতামূলক হয়, তাহলে সিন্থেটিক শাড়িই ভালো। তবে পেটিকোটটা সিল্ক বা সিন্থেটিক না হওয়াই ভালো, কারণ ভিজে গেলে হাঁটতে অসুবিধা হবে। সুতির পেটিকোট ব্যবহার করুন। এই মরশুমে হাওয়া থাকলেও, এতে আর্দ্রভাব বেশি থাকে। কটনের কাপড় ভালো বিকল্প এই কারণেই, যে গায়ে পরলে আর্দ্রতার অনুভব কম হবে।

ডেনিম এড়িয়ে চলুন

এই মরশুমে ভারী ডেনিমের পোশাক এড়িয়ে চলাই ভালো, কারণ এগুলি শুকোতে সময় বেশি নেবে। আধশুকনো পোশাক পরলে স্কিনে ফাংগাল ইনফেকশনের ভয় থাকে। এছাড়া ভেজা পোশাক থেকে দুর্গন্ধও বেরোয়। সিন্থেটিক, পলিয়েস্টার, টেরিকট, নাইলন, রেয়ন প্রভৃতি ভালো বিকল্প। একান্তই ডেনিম পরার ইচ্ছে হলে, হট প্যান্টস্, কেপ্রি বা থ্রি কোয়ার্টার প্যান্টস্ পরতে পারেন। ট্রাউজার পরলে ডার্ক চকোলেট, মেরুন বা মেহেন্দি রঙের পরতে পারেন।

বর্ষায় পোশাক বা গয়না নির্বাচনের আগে নিশ্চিত হয়ে নিন সেগুলি থেকে রং ওঠে কিনা। ভেজা পোশাক থেকে রং উঠলে বিশ্রী কাণ্ড হবে। গয়নার ক্ষেত্রেও তাই। উপরের প্লেটিং-এর রং উঠে গেলে, সেই জুয়েলারি বিসদৃশ লাগে। লাইট ওয়েট জুয়েলারি পরুন। চুল খোলা না রেখে টপ নট, ফ্রেঞ্চ রোল বা লো বান করুন। অবশ্যই জুতোর ব্যাপারটায় সচেতন হোন। বৃষ্টিতে পরা যায় এমন জুতোই কিনুন। বর্ষায় ফ্যাশনেবল হয়ে ওঠার মজাই আলাদা।

বর্ষাতির নানারকম

ইদানীং কালারফুল ট্রান্সপারেন্ট বর্ষাতি খুব ইন। কাজেই শুধু বৃষ্টিতে ভেজার হাত থেকে নিস্তার পাওয়ার জন্যই নয়, বর্ষায় ফ্যাশনেবল হওয়ার আর-একটি বিকল্প হল বর্ষাতি। বোল্ড চেক্স, পোলকা ডটস বা প্লেন ট্রান্সপারেন্ট বর্ষাতি এখন দারুণ জনপ্রিয়। রেন জ্যাকেট পছন্দ হলে সেটাও ব্যবহার করতে পারেন। এগুলি উইন্ডচিটারের চেয়ে লম্বা ঝুলের হয়।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...