Teenage অর্থাৎ তের থেকে উনিশ বছর বয়সি কিশোর-কিশোরীরাও চায় প্রাইভেট স্পেস। লেখাপড়ার জন্য কিংবা বন্ধুবান্ধবীদের সঙ্গে আড্ডা মারার জন্য নিরিবিলি জায়গার room decor ভীষণ প্রয়োজন। এইটুকু স্বাধীনতা ওরা ভোগ করতে চায় এবং ওদের সেই অধিকারও আছে। অতএব কিশোর-কিশোরীদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে, মা-বাবার উচিত ওদের জন্য উপযুক্ত ঘর বা কক্ষ তৈরি করা। ওদের মন জেতার এটাই হোক প্রথম ধাপ।

মনে রাখতে হবে, অগোছালো ঘর এবং হইচইয়ের পরিবেশ কিশোর-কিশোরীদের কোনওভাবে আকর্ষণ করে না। অতএব, Teenage বেডরুম ডিজাইন room decor করার সময় খুব সূক্ষ্ম বিচার-বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কারণ, ওদের প্রতি ভালোবাসা এবং মমত্বের অনেকটাই প্রতিফলিত হয় ওই বেডরুম থেকেই। তাই, জেনে নিন টিন-এজ বেডরুম সাজানোর খুঁটিনাটি বিষয়।

কক্ষের নকশা

আগে দেখে নিন কতটা জায়গা বরাদ্দ করতে পারছেন আপনার সন্তানের বেডরুম-এর জন্য। যদি বেশি জায়গা বা বড়ো ঘর হয় তাহলে সমস্যা কম কিন্তু যদি অল্প জায়গার মধ্যে বেডরুম তৈরি করতে হয়, তাহলে তা ক্রিয়েটিভলি ডেকোরেট করা প্রয়োজন। ঘরের ভিতরের অংশ এমনভাবে সাজাতে হবে, যাতে, ছোট্ট ঘরকেও অনেক বড়ো মনে হয়। মনে রাখবেন, খুব বেশি আসবাবপত্র রাখলে ঘরে হাঁটাচলার জায়গা কমে যাবে এবং দেখতেও ছোটো লাগবে।

দেয়ালের সাজ

টিনএজারদের বেডরুম-এর দেয়াল ফাঁকা থাকলে উপযুক্ত আবহ তৈরি হবে না। তাই দেয়ালের কিছু অংশ ভরুন গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র দিয়ে। যেমন– শিক্ষামূলক পোস্টার্স, ক্যালেন্ডার, ম্যাপ, পার্সোনাল মেমেন্টোজ, ফ্যামিলি ফোটোগ্রাফ্স প্রভৃতি দিয়ে।

কালার

সাধারণত, কিশোর-কিশোরীরা চঞ্চল এবং দুরন্ত প্রকৃতির হয়। তাই ওরা হালকা এবং এক রং পছন্দ করে না। ওদের আনন্দ দেয় নানারকম উজ্জ্বল রং। তাই, নানা রঙে রাঙিয়ে দিন ওদের ঘরের দেয়াল।

ফার্নিশিংস

ঘরের কোথায় কী রাখলে বেশি জায়গা নষ্ট হবে না অথচ সৌন্দর্য বাড়বে, তা দেখে নিয়ে ঘর সাজান। পড়ার জন্য চেয়ার-টেবিল রাখুন জানালার ধারে। যাতে দিনেরবেলায় অন্তত প্রাকৃতিক আলোয় লেখাপড়া করতে পারে। শুধু তাই নয়, জানালার ধারে চেয়ার-টেবিল থাকা মানেই পাবে বিশুদ্ধ প্রাকৃতিক হাওয়া এবং লেখাপড়ার ফাঁকে প্রকৃতিকে দেখে একঘেয়েমিও কাটাতে পারবে। তবে চেয়ার-টেবিল-এ অবশ্যই ফাইন আর্টওয়ার্ক চাই। টেবিল-এর ওপর রাখুন সুদৃশ্য উডেন ল্যাম্প।

ঘরের এক কোণে রাখুন কম্পিউটার টেবিল। ল্যাপটপ নয়, কিশোর-কিশোরীর জন্য ডেস্কটপ-ই ভালো। তাই কম্পিউটার-এর জন্যও চাই আকর্ষণীয় টেবিল-চেয়ার।

অকারণে ঘরের মধ্যেকার জায়গা যাতে নষ্ট না হয়, তাই শেলভ্স এবং ক্যাবিনেট্স-এর ব্যবস্থা করুন দেয়ালে। অভিজ্ঞ ব্যক্তির সাহায্যে কাঠ দিয়েই এসব তৈরি করানো ভালো। কিছু শেল্ফ-কে বইখাতা রাখার জন্য এবং কিছু শেল্ফ-কে শো-পিস রাখার জন্য ভাগ করে নিন। ক্যাবিনেট-এর মধ্যে রাখুন ওদের টুকিটাকি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস।

ঘরের দেয়ালে সুন্দরভাবে সাজিয়ে রাখুন কিছু ফোটো-ফ্রেম। ফ্রেম-এ রাখুন নেচার ফোটোগ্রাফ। এছাড়া রাখতে পারেন কিশোর-কিশোরীর উপযোগী হ্যান্ড-পেন্টিং কিংবা ওদের নিজের হাতে আঁকা ছবি। ঘরের চারকোণে টবের মধ্যে রাখতে পারেন পাতাবাহার গাছ। হতে পারে তা আসল কিংবা কৃত্রিম।

টিন-এজারদের রুম-ডেকর-এ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় বিছানা। ঘরের এক কোণে রাখুন সুন্দর ডিজাইন-এর একটি বক্স খাট। ইংরেজি আলফাবেট কিংবা পশুপাখির ছবি আঁকা নরম বিছানা রাখুন খাটে। বেড-কভার-এর সঙ্গে পিলো-কভার-এরও যেন সামঞ্জস্য থাকে। একসঙ্গেই কিনে রাখুন কয়েক সেট বেড-কভার এবং পিলো-কভার, যাতে মাঝেমধ্যে তা চেঞ্জ করে একঘেয়েমি কাটানো যায়।

বিছানা এবং ঘরের রঙের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কিনুন জানালা-দরজার পর্দা। তবে ফুল-পাতা কিংবা ঘন জঙ্গলের দৃশ্য-সমৃদ্ধ পর্দা, ঘরের ভেতরের যে-কোনও রঙের সঙ্গে মানিয়ে যাবে।

আলোকসজ্জা

ঘরে সাদা এবং সবুজ আলোর ব্যবস্থা রাখুন। স্টাডি-র জন্য ব্যবস্থা রাখুন সাদা আলোর এবং বিশ্রামের সময় চোখকে আরাম দেওয়ার জন্য সবুজ আলো জ্বালিয়ে রাখার ব্যবস্থা করুন।

Room decor স্পেশাল টিপ্স

  • পুরোনো ফার্নিচার নষ্ট কিংবা বিক্রি না করে, অভিজ্ঞ লোককে দিয়ে ওগুলোকেই আধুনিকতার ছোঁয়া দিন।
  • ঘরের জায়গা বাঁচানোর জন্য ব্যবহার করুন মাল্টি ইয়ুজ ফার্নিচার।
  • উডেন ফার্নিচার ব্যয়বহুল মনে হলে, ব্যবহার করতে পারেন রট আয়রন ফার্নিচার।
  • টিন-এজার-এর রুমে অ্যাটাচ বাথ্ রাখা ভালো।
  • ঘর লাগোয়া ঘেরা বারান্দা রাখতে পারলে ভালো এবং যদি বরান্দা থাকে, তাহলে সেই বারান্দায় রাখুন একটা দোলনা।
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...