বেশিরভাগ মানুষই মিষ্টি খেতে ভালোবাসেন। তাই শেষপাতে মিষ্টি রাখা চাই। কিন্তু দোকানের মিষ্টি খেতে সবসময় ভালো লাগে না। অবশ্য চিন্তা নেই, বাড়িতেই দারুণ সব মিষ্টি বানানোর রেসিপিজ দেওয়া হল এই লেখায়। আজ প্রথম পর্ব।

রসগোল্লা

উপকরণঃ  হাফ লিটার দুধ (ফুল ক্রিম), দেড় বড়ো চামচ লেবুর রস অথবা ২ বড়ো চামচ টক দই, ৩/৪ কাপ জল, ৫টি আইসকিউব্স, ৪ কাপ চিনি, ১ চিমটে এলাচগুঁড়ো, ৩-৪টি  পেস্তা পাতলা করে কাটা।

প্রণালীঃ  দুধ ফুটিয়ে ওতে লেবুর রস ঢেলে ছানা কেটে নিন। এরপর আইসকিউবস মিশিয়ে ছানা ঠান্ডা করে নিন এবং কাপড়ে করে ছেঁকে নিন। ছানা ঠান্ডা জলে একবার ধুয়ে আলাদা সরিয়ে রাখুন।৩০ মিনিট পর ভালো করে ছানাটাকে মোলায়েম করে চটকে নিন, যতক্ষণ না হাতে তৈলাক্ত ভাব লাগছে। ছানা থেকে ছোটো ছোটো বল গড়ে আলাদা সরিয়ে রাখুন।

এরপর আলাদা একটি পাত্রে চিনি, জল, এবং এলাচগুঁড়ো ঢেলে একসঙ্গে মিশিয়ে রস তৈরি করুন। রসের মধ্যে, ছানার বলগুলি এক-একটা করে দিয়ে, পাত্রের মুখটা ঢেকে মাঝারি আঁচে রান্না হতে দিন। ১০ মিনিট রান্না হওয়ার পর ঢাকনা খুলে দেখে নিন, ছানার বলগুলি আগের তুলনায় আকারে বড়ো হয়েছে কিনা। যদি আকারে ওগুলি বড়ো হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে আঁচ থেকে নামিয়ে ঠান্ডা হতে দিন। ১ ঘণ্টা পর পেস্তাকুচি দিয়ে রসগোল্লাগুলি সাজিয়ে পরিবেশন করুন।

গুলাবজামুন

উপকরণঃ ২৫০ গ্রাম খোয়া, রঙ্মঙ্ম গ্রাম পনির, ১০০ গ্রাম ময়দা, ১ বড়ো চামচ কাজুকুচি, ১ বড়ো চামচ কিশমিশ,৩০০ গ্রাম চিনি, গুলাবজামুন ভেজে তোলার জন্যে দেশি ঘি।

প্রণালীঃ  একটি বড়ো পাত্রে খোয়া, পনির এবং ময়দা একসঙ্গে মিশিয়ে মাখতে থাকুন, যতক্ষণ না পুরো মিশ্রণটি নরম হয়ে যায়, গা-টা তেলতেলে হয়ে যায় এবং অনেকটা মাখা ময়দার মতো দেখতে হয়। এবার মিশ্রণটি থেকে ছোটো ছোটো গোল বল বানিয়ে, প্রতিটি বলের মধ্যে কাজুকুচি এবং একটি করে কিশমিশ ভরে দিন।

কড়াইতে তেল গরম করে ছোটো ছোটো বলগুলি ভেজে তুলুন। ঘিয়ে বলগুলি ভেজে তোলার সময় যদি দেখেন ওগুলি ফেটে যাচ্ছে, তাহলে মিশ্রণটির সঙ্গে আরও একটু ময়দা মিশিয়ে নিন। ভাজার সময়, খুন্তি গুলাবজামুনের গায়ে না-লাগিয়ে বরং খুন্তির সাহায্যে বলগুলির উপর তেল ঢালুন। ভাজা হয়ে গেলে, ঘি থেকে তুলে অল্প ঠান্ডা করে রসে ফেলুন।

রস তৈরি করতেঃ  একটি বড়ো পাত্রে ৩০০ গ্রাম জলে চিনি মিশিয়ে ফুটতে দিন। জলে চিনি সম্পূর্ণ মিশে গেলে একটু রস হাতায় নিয়ে দেখুন এক তার হচ্ছে কিনা। রস তৈরি হয়ে গেলে আঁচ থেকে নামিয়ে ঠান্ডা হতে দিন এবং গুলাবজামুন রসে ডুবিয়ে দিন।

 

চমচম

উপকরণঃ  ১ লিটার দুধ, ২-৩ বড়ো চামচ লেবুর রস, ২ কাপ চিনি, ১ বড়ো চামচ অ্যারারুট।

পুরের উপকরণঃ ৬০ গ্রাম খোয়া, ৩ বড়ো চামচ পাউডার চিনি, ৪টে এলাচগুঁড়ো, ৪টে পেস্তা পাতলা করে কাটা, ২-৩ ফোঁটা কেওড়া এসেন্স।

প্রণালীঃ লেবুর রস দিয়ে দুধ থেকে ছানা কেটে নিন। ছানা অল্প ঠান্ডা হলে ভালো করে চটকে মেখে নিন। এতে অ্যারারুট মিশিয়ে আবার ভালো করে মেখে নিতে হবে। প্রেশার কুকারে ২ কাপ চিনি আর ৪ কাপ জল মিশিয়ে গরম করতে দিন। চিনির জল ফুটে উঠলে ছানা থেকে চমচম গড়ে নিন এবং ফুটন্ত চিনির রসে এক একটা করে ছেড়ে দিন। কুকারে একটা সিটি পড়লেই আঁচ কমিয়ে দিতে হবে যাতে সিটি না পড়ে। ৭-৮ মিনিট রান্না হওয়ার পর রসশুদ্ধু চমচমগুলি একটি পাত্রে ঢেলে নিন। ঠান্ডা করতে আলাদা সরিয়ে রাখুন।

চমচমে স্টাফিং ভরতে

খোয়ার সঙ্গে চিনি এবং এলাচ পাউডার মিশিয়ে ভালো করে মেখে নিন। রসের থেকে এক একটা চমচম তুলে মধ্যেখানটা অল্প চিরে নিয়ে খোয়ার পুর ভরে প্লেটে সাজিয়ে, ঠান্ডা পরিবেশন করুন।

মালাইচপ

উপকরণঃ  আড়াই কাপ দুধ, ১ ছোটো চামচ ভিনিগার, ১ কাপ চিনি,৩ কাপ জল, ১০০ গ্রাম খোয়া, ৪ বড়ো চামচ ক্রিম, ২ ছোটো চামচ চিনি, ১বড়ো চামচ পেস্তা পাতলা করে কাটা, ১ চিমটে কেসর, সামান্য খাওয়ার রং।

প্রণালীঃ  দুধ ফুটিয়ে নিন। একটি বাটিতে জল এবং ভিনিগার মিশিয়ে দুধে ঢালুন। দুধে ভালো করে ছানা কেটে গেলে নামিয়ে ছেঁকে নিন। এবার ছানা থেকে ছোটো ছোটো বল গড়ে নিন। একটি পাত্রে চিনি ও জল মিশিয়ে ফুটিয়ে রস তৈরি করে নিন। এতে ছানার বল্সগুলি দিয়ে ২০-২৫ মিনিট, কম আঁচে রান্না হতে দিন। নামিয়ে অন্তত ৩ ঘণ্টা আলাদা সরিয়ে রাখুন।

খোয়া, আগুনের আঁচে কড়াইতে নাড়াচাড়া করে ঠান্ডা হয়ে গেলে ভালো করে ম্যাশ করে নিন। এতে ক্রিম এবং দুই ছোটো চামচ চিনি ভালো করে মিশিয়ে রাখুন। এবার এতে কয়েক ফোঁটা খাওয়ার রং মিশিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। ৩ ঘণ্টা পরে ছানার বল্স রস থেকে তুলে মাঝ বরাবর দুটি ভাগে কেটে নিন। একটি ভাগে খোয়ার মিশ্রণ খানিকটা করে লাগান এবং অন্য ভাগটি দিয়ে ওটা ঢেকে দিন। হালকা চাপ দিয়ে পুরো মিষ্টিটা লাগিয়ে দিন এবং পেস্তাকুচি দিয়ে গার্নিশ করুন। তৈরি মালাইচপ ২ ঘণ্টার জন্যে ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে পরিবেশন করুন।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...