তিনি বলিউড তারকার মেয়ে। অভিনয় ছাড়াও অনেক গুণ আছে তাঁর। সদ্য প্রচারের আলোয় আসা অভিনেত্রী টিনা আহুজা তাঁর মনের কথা শোনালেন গৃহশোভার প্রতিনিধিকে।
অভিনেত্রী টিনা আহুজার প্রথম ছবি ছিল সেকেন্ড হ্যান্ড হাজব্যান্ড। পঞ্জাবি এই ছবিটিতে অভিনয়ের পর প্রচারের আলোয় আসেন টিনা।
মুম্বই নিবাসী টিনা আসলে জনপ্রিয় অভিনেতা গোবিন্দার মেয়ে। ফ্যাশন ডিজাইনিং-এ স্নাতক ডিগ্রি আছে তাঁর। অ্যাক্টিং কোর্স করেছেন ফিল্ম ইনস্টিটিউট অফ লন্ডন থেকে।
‘ড্রাইভিং ভি ক্রেজি’ শীর্ষক একটি শর্ট ফিল্মও সমৃদ্ধ হয়েছে টিনার অভিনয়ে। ছবিটি প্রদর্শিত হয়েছে জি ফাইভ-এ এবং খুব প্রশংসা পেয়েছেন টিনা। আর প্রশংসায় খুব খুশি হয়ে টিনা গৃহশোভা-কে শোনালেন তাঁর সফরের কথা।
‘ড্রাইভিং ভি ক্রেজি’ সাফল্য পাওয়ার পর কী অনুভতি আপনার?
এই ছবিতে আমি এক অভিজাত পরিবারের মেয়ের ভমিকায় অভিনয় করেছি, যে সারাদিন মোবাইল অ্যাপ নিয়ে ব্যস্ত থাকে। আর এই অ্যাপকে কেন্দ্র করে ছবিটি এগোবে পরিণতির দিকে। খুবই সুন্দর গল্প। এমন একটি গল্পের ছবি সাফল্য পেয়েছে তাই আমি ভীষণ খুশি। আর ছবিটি সকলের ভালো লাগায় এবং আমার অভিনয় প্রশংসা পাওয়ার জন্য আমি খুবই আনন্দিত। সত্যি বলতে কী, যখন পরিশ্রমের সুফল পাওয়া যায়, তখন মন খুশিতে ভরে যায় খুব স্বাভাবিক ভাবেই।
এই ছবিটি অনলাইন ডেটিং-এর উপর আধারিত। এই যে অনলাইনে পার্টনার খোঁজা ডেটিং ইত্যাদি বিষয়টি আপনার কেমন লাগে?
ডেটিং-এর জন্য কোনও অ্যাপকে কখনও মাধ্যম করিনি আমি। তবে আমি শুনেছি এবং জানি, অনেকে এই ভাবে অ্যাপকে মাধ্যম করে সঙ্গী খুঁজে পেয়েছেন এবং অনেকের ক্ষেত্রে ডেটিং থেকে বিয়ে পর্যন্ত গড়িয়েছে। কিন্তু সবার অভিজ্ঞতা সমান নয়। কেউ আনন্দের অভিজ্ঞতা অর্জন করেন, তো কেউ আবার দুঃখের। আমার মনে হয়, এই ভালো-খারাপের বিষয়টা ভাগ্যের উপর নির্ভর করে। তাই আমার মতে, আপনি কতটা ভাগ্যবান, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
যে-চরিত্রে আপনি অভিনয় করেছেন, তা আপনার ব্যক্তিজীবনের সঙ্গে রিলেট করে?
কিছুটা রিলেট করে, আবার কিছুটা করে না। কারণ আমি নিজে কখনও ডেটিং অ্যাপ ইউজ করি না। আসলে এই সব অ্যাপের উপর আমার নিজের তেমন ভরসা নেই এবং আমি নিজেও এই ভাবে সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসী নই। অপরিচিত কারও সঙ্গে কথা বলা কিংবা সম্পর্ক তৈরিতে আমার তেমন আগ্রহও নেই।
বাবা গোবিন্দার থেকে কী কী ভালো শিক্ষা গ্রহণ করেছেন আপনি?
আবার বাবা খুব মিষ্টি স্বভাবের এবং খুবই সাপোর্টিভ। তিনি শিখিয়েছেন, যে-কাজই করি না কেন, তা নিষ্ঠা, পরিশ্রম, সততা এবং আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে যেন করি। এর ফলে কাজ করে আনন্দ এবং সাফল্য দুই-ই পাওয়া যায়।
কোনও ছবিতে অভিনয় করার আগে বাবার সঙ্গে আলোচনা করে নেন কি সব বিষয়ে?
হ্যাঁ, আলোচনা করি কিন্তু বাবা ফাইনালি আমাকে সিদ্ধান্ত নিতে বলেন। তাই, সবকিছু যদি আমার ভালো লাগে কিংবা ঠিকঠাক মনে হয়, তখন আমি রাজি হই কাজ করতে। আর সিদ্ধান্ত যেহেতু আমি নিজে নিই, তাই কিছু অসফলতার জন্য তেমন কোনও আক্ষেপ থাকে না।
বাবার অভিনয়-প্রতিভার সঙ্গে আপনার অভিনয়ের তুলনা হয়েছে কখনও?
আমার অভিনয়ের সঙ্গে বাবার অভিনয়ের তুলনা এখনও পর্যন্ত কেউ করেননি। আর তুলনা করাটা কাম্যও নয় আমি মনে করি। কারণ, প্রত্যেকে তার নিজস্ব অভিনয় সত্ত্বা তুলে ধরেন নিজের মতো করে। অবশ্য এত সত্ত্বেও কেউ যদি বাবার সঙ্গে আমার অভিনয়ের তুলনা করেন, তাহলে সে নিয়ে আমি তেমন কিছু ভাবব না।
ছোটো থেকেই কি অভিনয়ের ইচ্ছে ছিল?
আমি চেয়েছিলাম ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে যেতে। কিন্তু আমার বাবা চাননি আমি ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে যাই। তাই ফ্যাশন ছেড়ে অভিনয় করার সিদ্ধান্ত নিই এবং লন্ডন গিয়ে অভিনয়ের প্রশিক্ষণ নিয়ে আসি।
যে-ছবিতে অভিনয় করেন, সেই ছবিতে আপনার পোশাক কী আপনিই ঠিক করেন?
যে-ছবিতে আমি অভিনয় করি, সেই ছবির পোশাকের ডিজাইন আমি ঠিক করি না। কিন্তু বাবার ছবির পোশাকের দাযিত্ব আমি নিয়ে থাকি। আর গেস্ট অ্যাপিয়ারেন্স এবং বিজ্ঞাপন ছবিতে অনেক সময় আমি পোশাক ঠিক করি।
আপনার স্বপ্ন কী?
আরও ভালো অভিনয় করতে পারব, এটাই আমার স্বপ্ন।
বাবার কোন কোন ছবি আপনার পছন্দ?
বাবার সব ছবিই আমার ভীষণ পছন্দের। প্রায় সবরকম ছবিতে বাবা অভিনয় করেছেন এবং বেশিরভাগ ছবিই সফল। স্বর্গ, দুলহে রাজা, ভাগমভাগ। এছাড়া আমার বিশেষ পছন্দ টলিউডের ছবি কিলবিল। এসব ছবি তো আমি একাধিকবার দেখেছি। আসলে বাবার অভিনয়ের বড়ো ভক্ত আমি। তাছাড়া বাবা ভালো ডান্সারও। আমি ডান্স শিখেছি বাবার থেকে। অনেকে বলেন, আমিও নাকি বাবার মতোই ভালো ডান্সার।
এখন যে-সব ছবি তৈরি হচ্ছে, সেই ছবিগুলি যত না মনোরঞ্জক, তার থেকে বেশি রিয়ালিস্টিক। এই ব্যাপারে আপনার কী বক্তব্য?
আমার মনে হয়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবকিছু বদলে যায় এবং বদলে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। তাই সিনেমার বিষয়বস্তুতে বদল ঘটবে, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। তবে অ্যাকশন ছবির চাহিদা এখনও আছে। মনোরঞ্জন বলতে আমি বুঝি মন জয়। সিনেমার নতুন ধরনেও যদি দর্শকচিত্ত পুলকিত হয়, ওটাই তখন মনোরঞ্জক হয়ে যায়। তাছাড়া, একঘেয়েমি কাটানোর জন্য সবকিছুরই বদল প্রযোজন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যারা বদল এনেছে, তারা টিকে আছে। আর যারা পুরোনো সবকিছু অাঁকড়ে পড়ে থাকে, তারা কালের প্রবাহে হারিয়ে যায়। তবে আজও আমার ব্যক্তিগত পছন্দের শীর্ষে আছে রোমান্টিক কমেডি।
অভিনয় এবং ফ্যাশন ছাড়া আর কিছু শখ-আহ্লাদ আছে?
বাবাকে অ্যাসিস্ট করি আমি এবং এই কাজটা আমার ভীষণ ভালো লাগে। কারণ, অনেককিছু শিখতে পারি এই সুবাদে। তাছাড়া বাবার মতো আমিও অভিনয়ের পাশাপাশি ডান্স এবং ছবি প্রযোজনা করে আনন্দ পাই।
কোনও ডিজাইনারকে ফলো করেন আপনি?
অনেক ডিজাইনারের কাজ আমার ভালো লাগে। যেমন, সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়, অকি নরুলা, মনীষ অরোরা, ঋতু কুমার, অনীতা ডোংরে প্রমুখ আমার পছন্দের ডিজাইনার।
বাবার কোন ছবির রিমেক হলে আপনি খুশি হবেন?
বাবার কোনও ছবির রিমেক হোক, তা আমি চাই না। কারণ, ওই ওরিজিনাল ছবিটাই দর্শকরা পছন্দ করেছেন, তাই সেই ছবির রিমেক কখনওই আগের মতো দর্শকদের ভালো লাগবে বলে আমার মনে হয় না।