Pregnancy-র সময়ে ছোটোখাটো শারীরিক অসুবিধে লেগেই থাকে৷ বিশেষ করে আপনি কর্মরতা হলে একটু সতর্ক থাকা জরুরি৷ কিন্তু সাধারণ অস্বস্তিগুলো নিয়ে অতিরিক্ত ভাবনাচিন্তা না করে, নিজের একটা রুটিন কেয়ার নেওয়া শুরু করুন৷
অনেক মহিলারই এই সময় শরীরে ব্যথার অনুভতি থাকে। এছাড়া বাচ্চা গর্ভে যত বড়ো হতে থাকে, মায়ের শরীরে অস্বস্তি বাড়তে থাকে। এ সময় ঘুম কম হওয়াটা স্বাভাবিক।আমাদের পরামর্শ হল, ঘুমোতে যাওয়ার আগে ফুল বডি মাসাজ করান। এছাড়া ডায়েটও খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অনেকসময় সঠিক খাদ্যগ্রহণ না করার ফলেও শরীরে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগে পর্যন্ত সঠিক ডায়েট গ্রহণ করুন।
Pregnancy Diet
এই সময় আপনার আহার সুষম হওয়া খুব জরুরি। এতে গর্ভস্থ সন্তানেরও উপকার হবে।পর্যাপ্ত তাজাফল, শাকসবজি, বনস্পতি তেল, সুজি, ডাল, ডিম, দুধ, পনির, ছোটো মাছ, পরিমাণমতো চিকেন এসব ডায়েট-এ সামিল করুন। দৈনিক ৮-১০ গেলাস জল অবশ্যই পান করুন। এতেও ন্যাচারাল ক্লিনজিং হয়, ত্বকও পরিষ্কার দেখতে লাগে। প্রেগন্যান্সির সময় যা যা আপনি খাবেন, তার সরাসরি প্রভাব ত্বকে পড়ে। তাই, স্কিন হেলদি যেন থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
Vitamin–এ নিজের যত্ন
ভিটামিন গ্রহণ করা এসময় খুবই প্রয়োজন। গর্ভধারণ করার পর শরীরে ভিটামিন-এর ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এতেও শরীরে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ফল, সবজি, গাজর, সবুজ শাকপাতা, ছোটো মাছ, বাদাম তেল, ডিম, ভিটামিন-এর ভালো সূত্র। ট্যাবলেট আকারে ভিটামিন বি গ্রহণ করাও জরুরি। কারণ এই ভিটামিন রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে।
ভিটামিন বি-এর অভাবেও ত্বক অনুজ্জ্বল দেখায়। কাঁচা সবজির স্যালাড, মাছ, ডিম প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন। ত্বকের জন্য বিশেষ ভাবে জরুরি ভিটামিন সি। এর ব্যবহারে ত্বকের ঢিলে ভাব রোধ হয়। ত্বক বহুদিন পর্যন্ত যৌবনে ভরপুর থাকে। টকজাতীয় ফল, যেমন লেবু, স্ট্রবেরি, সবুজ পাতাযুক্ত সবজি, টম্যাটো, আমলকী অবশ্যই খান।
পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন-ই গ্রহণ করুন। এটাও ত্বক ও চুল ভালো রাখতে সহায়ক। এর ঘাটতিতে অসময়ে মুখে রিংকল্স দেখা দেয়। সবুজ শাকসবজি, বনস্পতি তেল এসব যেমন খাবেন, তেমন একটি করে ভিটামিন-ই ক্যাপসুল ভেঙে ক্রিমের সঙ্গে মাসাজ করুন ত্বকে। এতে আপনার ত্বকের স্বাভাবিক জেল্লা অক্ষুণ্ণ থাকবে।
কোন ফল এড়াবেন ?
যদিও বেশিরভাগ ফলের মধ্যে আপনার গর্ভাবস্থায় আপনার দেহের প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং পুষ্টি থাকে, বিশেষত যখন ভ্রূণের বিকাশ বৃদ্ধি পায়, তবে অন্য কিছু ধরনের ফল অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে, তাই সেগুলি এড়ানো গুরুত্বপূর্ণ। কিছু ফল এমনকী ভ্রূণকে প্রভাবিত করে বলে জানা গেছে, আবার কিছু গর্ভপাতও ঘটায়। গর্ভাবস্থাকালীন আপনার খাওয়া উচিত নয় এমন ফলের একটি তালিকা এখানে রয়েছে-
- আনারস খাওয়ার ফলে জরায়ুতে তীব্র সংকোচন হতে পারে, যার ফলস্বরূপ একটি গর্ভপাত ঘটতে পারে। আনারসে ব্রোমেলাইন থাকে, এটি একটি এনজাইম যা প্রোটিনকে ভেঙে দেয়। এটি জরায়ু নরম করতে পারে এবং অকাল প্রসব শ্রমের কারণ হতে পারে। এজন্য আপনার গর্ভাবস্থায় অবশ্যই আনারস খাওয়া এড়াতে হবে।
- যেসব মহিলা অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হন এবং ডায়াবেটিস আছে বা গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছেন- সেই সব মহিলাদের কলা না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
- পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি এবং ভিটামিন রয়েছে যা আপনার শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়, তবুও পেঁপে এমন একটি ফল যা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য উপযুক্ত নয়। পেঁপে আপনার দেহের তাপমাত্রা বাড়িয়ে তুলতে পারে, গর্ভবতী থাকাকালীন তা ভালো নয়। এগুলি ছাড়াও ফলটি ল্যাটেক্স সমৃদ্ধ যা জরায়ুর সংকোচন, রক্তপাত এবং এমনকী গর্ভপাত ঘটাতে পারে। এটি ভ্রূণের বিকাশেও বাধা সৃষ্টি করতে পারে৷ তাই আপনি আপনার গর্ভাবস্থার সময়কালে পাকা কিংবা কাঁচা পেঁপে খাওয়া এড়ান।
- গর্ভাবস্থায় টক জাতীয় খওয়ার অভ্যাস হওয়া স্বাভাবিক, এবং আপনি তাৎক্ষণিকভাবেই তেঁতুলের কথা ভাবতে পারেন। তবে গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খাওয়া ভালো হওয়ার চেয়ে বেশি ক্ষতিকারক।
- গর্ভাবস্থায় আঙুর এড়ানো ভালো এবং এটি সবুজ ও কালো উভয় আঙুরের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। অবশ্যই কোনও ওয়াইন পান করাও উচিত নয়। যদিও গর্ভাবস্থায় আঙুর খাওয়া সম্পর্কে মিশ্র মতামত রয়েছে, তবে এটি বিশ্বাস করা হয় যে, আঙুরের মধ্যে থাকা যৌগিক রেজভেরট্রোল, গর্ভবতী মহিলাদের জন্য বিষাক্ত হতে পারে।