বিয়ের দিন প্রতিটি মেয়েই চায় রূপে অনন্যা হয়ে উঠতে, যাতে বরের পাশাপাশি বিয়ে বাড়িতে আগত অতিথিদের-ই দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে সে। আর তাই বিয়ের বেনারসি, চন্দনের নকশা থেকে শুরু করে গয়না সব বিষয়েই একটু বেশিই চুজি হয়ে থাকে কনেরা।

বর্তমানে অনেকেই এ বিষয়ে ব্রাইডাল কনসালট্যান্ট-এর সাহায্য নেন। যাদের কাজই হল কনের কমপ্লেকশন, স্কিন টাইপ অনুযায়ী মেক-আপ করে সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা অথবা তাদের মেক-আপ সম্পর্ক শলাপরামর্শ দেওয়া।

যদি বিয়ের কিছুদিন আগে এই ধরনের কনসালট্যান্সি নেওয়া যায়, তাহলে কনের স্কিন-এর ধরন, গায়ের রং, চুলের টেক্সচার দেখে সেই অনুযায়ী আগে থেকে সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলার কিছু টিপ্স দেওয়া সম্ভব হয়। সেইমতো চললে বিয়ের দিন মেক-আপ থেকে শুরু করে হেয়ার স্টাইল সমস্ত কিছুতেই এক্সপার্ট-দের হাতের টাচ-এ নজরকাড়া সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা সম্ভব। হাল ফ্যাশনে ব্রাইডাল মেক-আপে যেগুলি ইন, সেগুলি হল– সিলিকন, মিনারেল বেসড মেক-আপ, মেটালিক মেক-আপ, পিগমেন্ট বেসড মেক-আপ এবং শিমারি মেক-আপ। প্রত্যেকটি পদ্ধতি সম্পর্কে একটু আলোকপাত করা যাক।

সিলিকন মেক-আপ :

সাধারণত এই ধরনের মেক-আপ ন্যাচারাল এবং ট্রান্সপারেন্ট টাইপের হয়ে থাকে। এই মেক-আপের সবথেকে বড়ো সুবিধা হল কনের গায়ের রংকে উজ্জ্বলতর করে Makeup সম্পন্ন করা হয়। তার মানে এই নয় যে, কালো রংকে ফর্সা করা সম্ভব। বরং মাস দেড়-দুই আগে থেকে যথাযথ ত্বক পরিচর্যা করলে ত্বকে যে-গ্লো তৈরি হয়, তা আপনার ব্রাইডাল মেক-আপে আলাদা মাত্রা যোগ করে আপনাকে করে তোলে লাবণ্যময়ী। ফলস্বরূপ বিয়ের পাঁচ-সাত বছর পরেও যখন আপনি বিয়ের অ্যালবামের ছবিগুলি উলটে দেখবেন, তখন আপনার মন আনন্দে ভরে উঠবে।

মিনারেল বেসড মেক-আপ :

সিলিকন মেক-আপের পরেই আধুনিকাদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে মিনারেল বেসড মেক-আপ। এর গ্রহণযোগ্যতাও যথেষ্ট। সাধারণত বিয়ের দিন থেকে শুরু করে বউ-ভাতের দিন বা রিসেপশন পার্টির দিনটিতে কনেদের যে-ধরনের হেভি মেক-আপ করতে হয়, তাতে ভীষণভাবে ত্বকের ক্ষতি হয়। কিন্তু মিনারেল বেসড মেক-আপ আলাদা ভাবে ত্বককে নারিশমেন্ট করে, রোমকূপ বন্ধ হতে দেয় না, ফলে ত্বক থাকে প্রাণবন্ত।

মেটালিক মেক-আপ :

এই সময়ের নতুন ট্রেন্ড হিসাবে মেটলিক মেক-আপের গ্রহণযোগ্যতাও কম নয়। মূলত এই মেক-আপের দ্বারা ত্বকে এক্সট্রা শাইনি গ্লো আনা হয়। অনেক সময় এমন কিছু কনেও পার্লারে যান যাদের ত্বক ভীষণ রুক্ষ-শুষ্ক, গ্লো-হীন অথবা খুঁতবিশিষ্ট। এমতাবস্থায়, বিউটি এক্সপার্টরা প্রথমে কনসিলার দিয়ে ছোটোখাটো দাগ এবং খুঁতগুলি ঢেকে দেন। তারপর তাদের হাতের জাদুতে গোল্ডেন নয়তো পার্ল মেক-আপের সাহায্য নিয়ে থাকেন। যাতে কনের রুক্ষশুষ্ক, গ্লো-হীন এবং দাগবিশিষ্ট ত্বকও হয়ে ওঠে ঝলমলে। মেটালিক মেক-আপের জলজ্যান্ত দৃষ্টান্ত ‘রাখী কা স্বয়ম্বর’ রিয়ালিটি শো-এ রাখীর সৌন্দর্য। এ থেকেই হয়তো বোঝা সম্ভব, মুখের ত্বক, চোখের শেপ পারফেক্ট না হলেও কীভাবে এই মেক-আপের সাহায্যে Makeup আর্টিস্টরা একজন খুঁতযুক্ত নারীকে খুঁতবিহীন করে তুলতে পারেন।

পিগমেন্ট বেসড মেক-আপ :

সাধারণত যাদের গরমকালে বিয়ে হয়, তাদের উপরই পিগমেন্ট বেসড মেক-আপ অ্যাপ্লাই করা হয়ে থাকে। এই মেক-আপের বিশেষত্বই হল অতিরিক্ত গরমেও এই মেক-আপ গলে যায় না। যে কারণে অভিনেতা অভিনেত্রীরা এই ধরনের মেক-আপই ব্যবহার করে থাকেন। এই ধরনের মেক-আপ বিভিন্ন শেডে করা যায়। প্রথমে মুখে মেক-আপ করে, তারপর ভিজে স্পঞ্জ দিয়ে ভালো করে মেক-আপ বসিয়ে দেওয়া হয়। সেটিকেই সিল করা বলা হয়ে থাকে। তারপর ভিজে ভাব চলে গেলে তার উপর আর একবার মেক-আপ করানো হয়। যার ফলে মেক-আপ দীর্ঘস্থায়ী হয়।

শিমারি মেক-আপ :

বর্তমানে মানুষ শিমারি মেক-আপের ব্যাপারেও যথেষ্ট আগ্রহী। প্রতিটি কনেকেই বিয়ের দিন বেনারসি, জারদৌসি শাড়ির সঙ্গে হেভি জুয়েলারি পরতে হয়। সুতরাং ঝাঁ-চকচকে শাড়ি আর গয়নার মধ্যে যদি আপনার ত্বকের জৌলুস কম মনে হয়, তাহলে কেমন যেন একটা অসামঞ্জস্যভাব নজরে আসে। তা থেকে রেহাই পেতেই এক্সপার্টরা এথনিক এবং ট্র্যাডিশনাল লুক দিতে গ্লিটারের সাহায্য নেন। গ্লিটার আইলাইনার, লিপস্টিক, আইশ্যাডো ব্যবহারের পাশাপাশি ছোটোছোটো ডায়মন্ড শেপের স্টোনও হাইলাইট করার জন্য ব্যবহার করে থাকেন শিমারি মেক-আপে। বিভিন্ন জায়গায়, যেমন– আইলাইনারের ঠিক উপরে, কপালে গালের দুপাশে, এমনকী নোজ পিন হিসাবেও ব্যবহার করা হয়। এই স্টোনের ঝলকে বিয়ের আসরে কনের উজ্জ্বল উপস্থিতি থেকে তাই চোখ ফেরানো যায় না।

পাঁচফোড়ন

– নিয়মিত ফেসিয়াল করার অভ্যাস না থাকলে বিয়ের দিন স্থির হওয়ার পর রুটিন মাফিক ফেসিয়াল, ম্যানিকিওর, পেডিকিওর এবং স্পা করান।

– অযথা কোনও কিছু নিয়ে টেনশন করবেন না। হাসিখুশি থাকতে চেষ্টা করুন। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান। বিয়ের পর অন্য পরিবারের মানুষেরা আপনাকে আপন করে নেবে না এমন ভাববেন না। থিংক পজিটিভ।

– দিনে অন্তত ৮ ঘন্টা ঘুমোন।

– শোবার আগে অবশ্যই ক্লিনজার, টোনার এবং ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে ভুলবেন না।

– মেডিটেশন করুন।

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...