বয়ঃসন্ধির সময়টা হল কৈশোর পেরিয়ে যৌবনের সূত্রপাত। এই সময় ছেলে, মেয়ে উভয়েই মধ্যে আসে মানসিক এবং শারীরিক পরিবর্তন। কৈশোর থেকে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরে রূপান্তরিত হওয়ার এই প্রক্রিয়ার Puberty ফলে শরীর প্রজনন সক্ষমতাও লাভ করে।
সাধারণত মেয়েদের বয়ঃসন্ধির প্রক্রিয়া ছেলেদের থেকে এক-দুই বছর আগেই শুরু হয়ে যায়। ৯ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে মেয়েদের এবং ছেলেদের ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণতাপ্রাপ্ত হয়। এই সময়ে হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে কিশোর-কিশোরীদের চিন্তাভাবনারও দ্রুত পরিবর্তন ঘটতে দেখা যায়। তারা আত্মনির্ভর হয়ে উঠতে চায় কিন্তু পারিপার্শ্বিক পরিবেশের সঙ্গে সহজে খাপ খাওয়াতে পারে না। নিজেকে নিয়ে অনেকে বিব্রত বোধ করে। স্বাধীনতা প্রিয় হয় এবং বাবা-মা পরিবারের সান্নিধ্যের থেকে বন্ধু-বান্ধবের সাহচর্য বেশি পছন্দ করে। গোপনীয়তা বজায় রাখতে নিজের একটা আলাদা জগত্ তৈরি করে নিতে চায়। এছাড়াও দেখা যায় এই সময়কালে অত্যধিক আত্মসচেতন হয়ে ওঠার ফলে নতুন, ফ্যাশনেবল পোশাকের উপর ঝোঁক বাড়ে। প্রেম, ভালোবাসার জন্য সবকিছু ত্যাগ করতেও দ্বিধাবোধ করে না।
অভিভাবকদের উচিত সন্তানের এই মানসিক পরিবর্তনকালে বন্ধুর মতো পাশে পাশে থাকা। এই সময় ছেলে-মেয়েরা খুব অল্পতেই রেগে যায়। কোনও কারণে আশানুরূপ কাজ বা কথার অন্যথা হলে তারা রেগে ওঠে। এই ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে রাগের বিষয়টি নিয়ে পরিষ্কার আলোচনা করে তাদের ধারণায় স্বচ্ছতা আনা দরকার। রাগের প্রকাশ যেন সীমা অতিক্রম না করে, তার জন্য রাগের পরিস্থিতি থেকে সামযিক ভাবে কিছুক্ষণের জন্য সরিয়ে দেওয়া উচিত তাদের এবং শান্ত হতে তাদের সময় দিতে হবে। বিষয়ে পরিবর্তন করাটাও খুব জরুরি এইক্ষেত্রে। সুসম্পর্ক বজায় রাখতে রাগ মিটিয়ে ফেলা এবং ভুলে যাওয়া খুব দরকার।
তাই যতটা সম্ভব খেয়াল রাখতে হবে, Puberty-র সময়কালটায় সন্তানের রাগের প্রকাশ এমন হওয়া বাঞ্ছনীয় নয় যাতে অপর কেউ মানসিক বা শারীরিক আঘাতপ্রাপ্ত হয় বা অপরের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হয়। রাগের কারণ এবং সেই সময়ের মনোভাব সন্তানকে ডায়ারি বা কাগজে লিখে রাখতে বলতে পারেন যাতে পরবর্তীকালে সে সেটা সংশোধন করতে পারে।
অনেক সময় দেখা যায় সমবয়সিদের অন্যায় দাবি আপনার সন্তান মেনে নিতে পারছে না অথবা তাদের দ্বারা প্রত্যাখাত হওয়ার কারণে, সে মুষড়ে পড়ছে, নিজের আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলছে। মূল্যবোধের সঙ্গে সন্তানকে কখনও আপোস করতে দেবেন না। যুক্তি দিয়ে ওর বন্ধুদের বোঝাতে সাহায্য করুন। সন্তানকে বলুন ইতিবাচক চিন্তাভাবনা রাখে এমন মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করতে এবং মনের মিল যার সঙ্গে হবে তাকেই বন্ধু বানাতে।