বয়ঃসন্ধির সময়টা হল কৈশোর পেরিয়ে যৌবনের সূত্রপাত। এই সময় ছেলে, মেয়ে উভয়েই মধ্যে আসে মানসিক, শারীরিক ও আচরণিক পরিবর্তন। এই সময়ে হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে কিশোর-কিশোরীদের চিন্তাভাবনারও দ্রুত পরিবর্তন ঘটতে দেখা যায়। তারা আত্মনির্ভর হয়ে উঠতে চায় কিন্তু পারিপার্শ্বিক পরিবেশের সঙ্গে সহজে খাপ খাওয়াতে পারে না।
অভিভাবকদের উচিত সন্তানের এই মানসিক পরিবর্তনকালে বন্ধুর মতো পাশে পাশে থাকা। এই সময় ছেলে-মেয়েরা খুব অল্পতেই রেগে যায়। তাই যতটা সম্ভব খেয়াল রাখতে হবে, Puberty-র সময়কালটায় সন্তানের রাগের প্রকাশ এমন হওয়া বাঞ্ছনীয় নয় যাতে অপর কেউ মানসিক বা শারীরিক আঘাতপ্রাপ্ত হয় বা অপরের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হয়।
অনেক সময় দেখা যায় সমবয়সিদের অন্যায় আচরণ আপনার সন্তান মেনে নিতে পারছে না অথবা তাদের দ্বারা প্রত্যাখাত হওয়ার কারণে, সে মুষড়ে পড়ছে, নিজের আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলছে। মূল্যবোধের সঙ্গে সন্তানকে কখনও আপোস করতে দেবেন না। যুক্তি দিয়ে ওর বন্ধুদের বোঝাতে সাহায্য করুন। সন্তানকে বলুন ইতিবাচক চিন্তাভাবনা রাখে এমন মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করতে এবং মনের মিল যার সঙ্গে হবে তাকেই বন্ধু বানাতে।
অপরের ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ, ঠাট্টা সন্তানের মনে কষ্ট দিতে পারে। কারও বলা অপমানকার শব্দ, অঙ্গভঙ্গি এই সময় ছেলে-মেয়েকে বেশি কষ্ট দেয়। তারা নিজেদের অপমানিত, অযোগ্য মনে করে। সন্তানকে এই ধরনের বিদ্রুপ করা কথায় আমল দিতে বারণ করুন, এতে আত্মমর্যাদা ক্ষুণ্ণ হওয়ার ভয় থাকবে না। ঠাট্টাকে ঠাট্টা হিসেবেই নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। এমনকী যার জন্য এই সমস্যা তৈরি হয়েছে তার সামনে বন্ধুত্বের হাত বাড়ানোও যেতে পারে এতে তাকে শিক্ষা দেওয়াও হবে।
বয়ঃসন্ধির Puberty সময় কোনও কাজে ব্যর্থতাও তার জন্য প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। এই সময় চট করে মন ভেঙে যায়। যেখানে সে প্রত্যেক কাজে প্রশংসা পেতে চায় সেখানে ব্যর্থতা এনে দেয় লজ্জা, অপমান। এই সময় সন্তানের পাশে থেকে ব্যর্থতার কারণ খুঁজে নিয়ে বিশ্লেষণ করতে হবে এবং সেটা শুধরে দেওয়ার চেষ্টা অভিভাবকদেরই করতে হবে। সন্তানকে বাস্তবভিত্তিক লক্ষ্য স্থির করতে সাহায্য করুন এবং বোঝাতে হবে জীবনে সাফল্যের সঙ্গে ব্যর্থতাও থাকবে।