রিমঝিম বৃষ্টির সিম্ফনি, পছন্দের বই কিংবা সিডির অনুষঙ্গ আর সেই সঙ্গে গরম গরম তেলেভাজা আর চা! এই রোমান্টিক ঋতু-যাপনের এর চেয়ে ভালো উপায় আর হয় না। কিন্তু এই অবসর পাওয়াটা নেহাতই সৌভাগ্যের ব্যাপার। তাই বছরের অন্য মাসগুলোর মতো বর্ষাকালেও রোজের রুটিনে বড়ো একটা হেরফের হয় না। তাই বর্ষা ঋতুকালীন কিছু বিশেষ সতর্কতা মেনে চলুন। দেখবেন জীবন অনেক সহজ মনে হচ্ছে।
রাস্তার ধারে বিক্রি হওয়া খাদ্যবস্তু যেমন, ফলের রস, কুলফি, বাদাম শরবত, লস্যি বা চাট, তেলেভাজা দেখে যতই লোভ হোক, এগুলি এড়িয়ে চলুন। এই ধরনের খাবার যদি একান্তই খেতে ইচ্ছে করে, বাড়িতে তৈরি করে খাওয়াই ভালো। তবে খেয়াল রাখবেন খাবারের পাত্র যেন পরিষ্কার থাকে, কারণ এসময় ব্যাক্টিরিয়ার প্রকোপ বাড়ে।
বর্ষাকালে আমাদের হজম শক্তি খানিকটা হ্রাস পায়, যে-কোনও ইনফেকশন সহজে বাসা বাঁধে শরীরে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়।
এসময় শাকপাতা-যুক্ত সবজি না খাওয়াই ভালো, কারণ পোকামাকড়, জার্ম সবই বৃদ্ধি পায় এসময় এবং এই ধরনের খাবার দ্বারা শরীরে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। পার্টি বা নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে হলে, এই ধরনের ডিশ এড়িয়ে চলাই ভালো, কারণ অনুষ্ঠান বাড়িতে বিপুল পরিমাণে রান্না হওয়ার ফলে, শাকপাতা, সবজি ভালো করে ধোওয়া হয় না।
আগে থেকে কেটে রাখা স্যালাড বা ফল ও কাঁচাসবজি খাবেন না, কারণ এসময় এগুলিতে দ্রুত জার্ম ছড়িয়ে পড়ে। যতটা সম্ভব সেদ্ধ, স্টিমড্ বা ভালো ভাবে রান্না হওয়া সবজিই খান।
মশলাদার খাবারে ক্ষতি
গ্যাস হতে পারে এমন খাবার, যেমন রাজমা, সোয়াবিন, ছোলা জাতীয় জিনিস কম খান। যদি একান্তই এই ধরনের খাবার খেতে ইচ্ছে করে, তাহলে তা আদা-রসুন-পেঁয়াজ দিয়ে ভালো ভাবে রান্না করুন। তবে কখনওই অতিরিক্ত ভাজা জিনিস বা বেশি মশলাদার রান্না খাওয়া ঠিক হবে না। ওট্স নোনতা বা মিষ্টি যে-কোনও ফর্মে খেতে পারেন। খাবারে মধু ব্যবহার করতে পারেন, বর্ষায় সর্দি কাশি কম হবে। বর্ষাকালে পেয়ারা, লিচু না খাওয়াই ভালো কারণ এই ফলে পোকা হয় এই সময়ে। দই বা কড়হি এই সময় খাবেন না।
দুটি জরুরি বিষয় সবসময় মাথায় রাখুন। বর্ষায় ততটুকু পরিমাণই রান্না করুন, যতটা আপনার প্রয়োজন। অতিরিক্ত পরিমাণ খাবার না জমানোই ভালো। দ্বিতীয়ত বর্ষাকালে অধিকাংশ রোগের কারণ অপরিশুদ্ধ জল। তাই রোগ-জীবাণু মুক্ত পরিবেশ আর বিশুদ্ধ জল, দুইয়ের ব্যাপারেই বিশেষভাবে সতর্ক হোন।