বর্ষাকালে সাধারণত শিশুরাই বেশি অসুখ-বিসুখের শিকার হয়। এ সম্পর্কে চিকিৎসকরা বলেন, বর্ষাকালে সাধারণত শিশুরা জলবাহিত রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। তবে শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা দেয় সর্দি, কাশি, ঠান্ডালাগা জনিত শ্বাসকষ্ট এবং তার সঙ্গে জ্বর।রইল baby care tips for monsoons.
এ সময় বিশেষ সাবধানতাস্বরূপ শিশুকে অবশ্যই ফোটানো ও বিশুদ্ধ জল পান করাতে হবে। সামান্য সর্দি-কাশি ও জ্বরকে অবহেলা করা ঠিক হবে না, কারণ এর থেকে নিউমোনিয়া হয়ে শিশুর জীবন বিপন্ন হতে পারে। সর্দি-কাশি হলে শিশুকে লেবুর রস, তুলসী পাতার রস ও আদা খাওয়ানো যেতে পারে।
শিশুকে মেঝেতে শোয়ানো যাবে না। health and hygiene in rainy season কিন্তু একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ বাড়ির আশেপাশের মশার আবাসস্থল ধ্বংস করতে হবে। বর্ষাকালে নানা জায়গায় বন্যার প্রাদুর্ভাব হয়।কিছু কিছু এলাকা দীর্ঘদিন ধরে জলবদ্ধ হয়ে পড়ে থাকে৷ তাই কোনও অবস্থাতেই শিশুকে এই নোংরা জলে নামতে দেওয়া যাবে না।
বর্ষায় মশার উপদ্রব বেড়ে যায়। আর এ থেকে ডেঙ্গু জ্বর-সহ নানা রোগের আশঙ্কাও বেড়ে যায়। তাই এই ঋতুতে শুধু বাড়ির ভেতরটা নয়, পরিষ্কার রাখতে হবে বাড়ির আশপাশও। বাড়ির আশপাশে ঝোপঝাড় থাকলে সম্ভব হলে তা পরিষ্কার করিয়ে মশার ওষুধ ছিটিয়ে দিন। ঘরের ভেতর খাটের নিচে, আলমারির পেছন দিকটায়, বিভিন্ন ফার্নিচারের আটকানো জায়গাগুলো পরিষ্কার করে নিন। কারণ ঘরের এসব জায়গাতেই মশা লুকিয়ে থাকে। মশার উপদ্রব কমাতে ফুলদানি, ফুলের টব বা পড়ে থাকা পাত্রে এক সপ্তাহের বেশি যেন জস আটকে না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখুন। রাতে তো বটেই, দুপুরে বা বিকালে শিশু ঘুমালেও মশারি টাঙিয়ে দিন।
বর্ষার পোশাকের ক্ষেত্রে শিশুর জন্য আরামদায়ক সুতির কাপড় বেছে নিন। ঘেমে গেলে সঙ্গে সঙ্গে পোশাক পরিবর্তন করে দিন।খুব ছোটো শিশুদের কাঁথা, চাদরও ধুয়ে ভালোভাবে শুকিয়ে রাখুন। তাহলে আর স্যাঁতসেঁতে হবে না। এই সময় প্রায়ই রাতে বৃষ্টি হয়ে কিছুটা ঠান্ডা ভাব চলে আসে। তাই ঘুমের সময় শিশুর গায়ে পাতলা সুতির কাপড় জড়িয়ে রাখুন।
বর্ষার দিনে রেইন কোট বা ছাতা ব্যবহার করতে হবে। বৃষ্টিতে ভিজলে ঘরে ফিরে ভালোভাবে স্নান করিয়ে দিন বাচ্চাটিকে।জলে অবশ্যই কয়েকফোঁটা অ্যান্টিসেপ্টিক লিকুইড ফেলে নেবেন৷ এরপর ওর শরীর ও চুল শুকিয়ে পরিচ্ছন্ন কাপড় পরানো জরুরি। সব সময় খাওয়ার আগে ভালোভাবে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে দিতে হবে। সব কাজে বিশুদ্ধ জলই ব্যবহার করা শ্রেয়। রান্না করার আগে শাক-সবজি ভালো ভাবে ধুয়ে নিতে হবে। পচা বাসি খাবার খাওয়া যাবে না।
মোটকথা রোগ নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে সচেতন হতে হবে। তবে রোগে আক্রান্ত হয়ে গেলে অবশ্যই যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং মেনে চলা অতি জরুরি।