মনের আঙিনায় যখন ভালোবাসার সংগীত গুঞ্জরিত হয়, প্রাণে প্রতিধবনিত হয় প্রেম, তখন যেন আমরা ভাবনার এক নতুন জগতে বিচরণ করি। তখন মন বলে শুধু সে আর আমি, আমি আর সে– মাঝখানে কেউ নয়। যদি আপনারা হন নতুন প্রেমিক যুগল বা প্রথমবার হনিমুনে যান, তাহলে কিছু Romantic spots বেছে নিন, যেখানে আপনার স্বপ্নের সংসারের মজবুত ভিত রচিত হবে।আপনাদের জন্য রইল Honeymoon destination -এর খোঁজ
কুর্গ
কুয়াশায় ঢাকা পাহাড়, ঘন জঙ্গল, কফি, চা আর কমলালেবুর বাগান আর মনোরম আবহাওয়া– এই হল একনজরে কুর্গ। কুর্গের আর-এক নাম কেন্ডাসু যার অর্থ হল পাহাড়ের উপর ঘন জঙ্গল। কুর্গের অন্য নাম মদিকেরি।
দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী সংকীর্ণ পথ, পাহাড় এবং জঙ্গলে ঘেরা এই স্থান। কর্ণাটকের দক্ষিণ-পশ্চিমপ্রান্তে প্রায় চার হাজার একশো দুই বর্গ কিমি জুড়ে কুর্গ অবস্থিত। প্রচুর কফির বাগান থাকার জন্য একে কফিল্যান্ডও বলে, আবার একে ভারতের স্কটল্যান্ডও বলে।
এখানকার হাওয়ায় কফিতে চুমুক দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রোমান্সের গন্ধও বাহিত হয়। এপ্রিল থেকে নভেম্বর এখানে আসার উপযুক্ত সময়।
অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় হলে এখানে অনেক সুযোগ সুবিধা মেলে। কুর্গে পাহাড় আর জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে খুব সুন্দর ট্রেকিং রুট আছে। ট্রেকিং-এর জন্য অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি অনুকূল সময়। কাবেরী নদীর ব্যাকওয়াটার ভালামুরেতে আপনি মাছও ধরতে পারেন। কাবেরী নদীতে র্যাফ্টিং করার সুবিধেও আছে।
এছাড়াও আপনি এলিফ্যান্ট ক্যাম্প এবং অদূরে অবস্থিত জলপ্রপাতের আনন্দও উপভোগ করতে পারেন। বাজার করার জন্য এখান থেকে আপনি কফি, মশলা, এলাইচি, গরমমশলা, আনারস, পাঁপড় এবং কমলালেবু কিনতে পারেন। কুর্গের সিল্কের শাড়িরও খুব নাম।
কোথায় থাকবেন
বেড়ানোর জন্য আপনি হোটেল অরেঞ্জ কাউন্টি রিসর্টে উঠতে পারেন। এখানে তিনশো একর কফি আর মশলার বাগানের মধ্যে রয়েছে পশ্চিমঘাট পর্বত। এছাড়াও ক্লাব মহিন্দ্রা রিসর্ট, কদকানি খিরমাইড রিসর্ট, দক্ষিণ ক্যাম্প হোটেল কুর্গ, ইন্টারন্যাশনাল হেরিটেজ রিসর্ট। এছাড়াও থাকার জন্য কুর্গে অনেক সস্তা আর ভালো জায়গা আছে। এগুলি হল কাবেরি হোম স্টে, কুর্গ ডেল হোম স্টে ইত্যাদি।
সিমলা
বিশুদ্ধ আবহাওয়া এবং অতুলনীয় নৈসর্গিক সৌন্দর্যের জন্য হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত সিমলা রোমান্সের জন্য অনুকূল স্থান। দূরে বরফের চাদরে ঢাকা পর্বতমালা, প্রকৃতি যেন তার যাবতীয় রোমান্টিক সৌন্দর্য ঢেলে দিয়েছে। এমন জায়গায় জীবনসঙ্গীর সাথে থাকলে অনায়াসেই হয়ে উঠবেন রোমান্টিক।
শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই নয় শিল্পকলা এবং বাস্তুশিল্পের দিক থেকে সিমলা ধনী। পুরোনো আমলের ব্রিটিশ যুগের ভারতের চিত্রাবলি ভাইস রিগল লজে দেখতে পাবেন। ‘লক্বড়’-এ আপনি লকড়ি বা কাঠের তৈরি অপূর্ব শিল্পকলা দেখতে পাবেন।
সিমলার কেন্দ্রে মাল রোড অবস্থিত। এটি একটি ব্যস্ততম ব্যবসায়িক স্থান। মনোরঞ্জন কেন্দ্র, সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পাশাপাশি বড়ো বড়ো হোটেল, রেস্তোঁরা রয়েছে। জীবনসঙ্গীর হাতে হাত রেখে ঘুরে বেড়ানো এখানে দারুণ রোমান্টিক ব্যাপার, বিশেষত যখন বরফ পড়ে।
মাল রোড ছাড়াও, এই সিমলায় রয়েছে জাখু হিল, সামার হিল, অবজারভেটারি হিল, হিমাচল স্টেট ওয়াটারফল্স, ঘুরে দেখার পক্ষে আদর্শ। সিমলার কাছাকাছি বেড়ানোর জায়গা হল চেল, কসৌনি, কুফরি, নলদেহরা, রামপুর, রেণুকা লেক। চলে যেতে পারেন কুলু-মানালি৷ এইসব স্থানও যথেষ্ট রোমান্টিক। যেসব দম্পতির পছন্দ স্পোর্টস, তারা স্কি, প্যারাগ্লাইডিং, আইস স্কেটিং অর্থাৎ উইন্টার স্পোর্টসের মজাও নিতে পারেন মানালির সোলাং ভ্যালি-তে।
কবে আসবেন, কীভাবে আসবেন
সিমলায় আসার সবচেয়ে ভালো সময় হল মার্চ থেকে জুন এবং সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত। দেশের সব মুখ্য শহরই আকাশপথে সিমলার সঙ্গে যুক্ত। রোমান্টিসিজমের জন্য রেলপথই আকর্ষণীয়।
কোথায় থাকবেন
দ্য ডেস্টিনেশন– কালকা-সিমলা হাইওয়ের উপর রোমান্টিক স্টে করা আদর্শ।হোটেল ল্যান্ডমার্ক (মাল রোড), শিলান রিসর্ট।সেসিল ওবেরয়।