এখন লেখাপড়া শেখা আগের চেয়ে কঠিন হয়ে গেছে। হয় পরীক্ষা পদ্ধতি পালটে যাচ্ছে, নয় তো পাঠ্যক্রম পরিবর্তিত হচ্ছে। এর ফলে পড়াশোনায় বেশি করে মনসংযোগ দরকার। তাই আলাদা পড়ার ঘর বা নির্দিষ্ট একটি কোণ প্রয়োজন, যেখানে বিনা ব্যাঘাতে মন দিয়ে পড়াশোনা করা যায়। এখনকার দিনে কম্পিউটারও পড়াশোনায় অতি প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে। তাই সবার আগে দরকারি ফার্নিচারের তালিকা বানান। যেমন, কম্পিউটার ও প্রিন্টার টেবিল, বুক র্যাক, ক্যাবিনেট, স্টাডি টেবিল ইত্যাদি। এক্ষেত্রে মাল্টিপারপাস ফার্নিচার সবথেকে কাজে আসবে। অর্থাৎ এমন এক ফার্নিচার যাতে থাকবে কম্পিউটার ক্যাবিনেট, বইখাতা রেখে পড়ার লেখার জায়গা, বুক র্যাক ইত্যাদি। বুক র্যাকে একটি ক্যাবিনেট থাকলে আরও ভালো। ছোটোখাটো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যেমন, জিওমেট্রি বক্স, পেনসিল বক্স, ইত্যাদির জন্য একটি ড্রয়ারও অপরিহার্য হবে।
মাল্টিপারপাস ফার্নিচার
এধরনের ফার্নিচার আজকে অতি প্রয়োজনীয় হয়ে উঠছে। এখনকার ফ্ল্যাটবাসী পরিবারের কাছে জায়গার সমস্যা একটা বড়ো সমস্যা। এইক্ষেত্রে মাল্টিপারপাস ফার্নিচার খুব কাজে দেয়। যেমন শিশুদের পড়াশোনার জন্য বইখাতা, পেন পেনসিল, কম্পিউটার, স্কুলব্যাগ ইত্যাদি আলাদা আলাদা জায়গায় না রেখে একটি ফার্নিচারের সাহায্যেই স্টোর ও ব্যবহার দুইই করা যেতে পারে। এধরনের ফার্নিচার আপনার ফ্ল্যাটের জায়গা অনুযায়ী বা মনের মতো নাও হতে পারে। তাই সেক্ষেত্রে মাপমতো বানিয়ে নেওয়াই উচিত। কেবল বইখাতা রাখার জায়গার দরকার হলে, জানলার উপরেও ক্যাবিনেট বানিয়ে নেওয়া যেতে পারে।
স্বাস্থ্যের প্রতি দৃষ্টি
পড়াশোনার সঙ্গে শিশুদের স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখা দরকার। পড়ার চাপ এত বেড়ে গেছে যে, তাদের দীর্ঘক্ষণ পড়ার টেবিলে বসে থাকতে হয়। টেবিল চেয়ারে বসে পড়া ও ভারী স্কুল ব্যাগ বওয়া ক্রমশ অভ্যাস হয়ে গেছে তাদের। তাই শিশুর সুবিধাজনক মাপ ও উচ্চতার টেবিল চেয়ার থাকা উচিত। প্রায়ই দেখা যায়, বাড়িতে শিশুরা বিছানায় বসে বা ডাইনিং টেবিলে বসে পড়ছে। এতে তাদের শিরদাঁড়ার হাড় ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বিশেষজ্ঞরা ডাইনিং চেয়ারকে কম্পিউটার চেয়ার করে তুলতে বারণ করেন। ডাইনিং চেয়ারে একটানা বসে কাজ করলে পিঠ, ঘাড়, ও কোমরে যন্ত্রণা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই পড়ার জন্য ডাইনিং টেবিল পড়াশোনার উপযুক্ত নয়। পড়া শুরুর আগে বা পড়া শেষে শিশুদের টেবিল ক্যাবিনেট বা কম্পিউটার টেবিল গুছিয়ে তোলার অভ্যাস তৈরি করান। এছাড়া টেবিলের উপর বা দেয়ালে সহজে চোখে পড়ে এমন জায়গায়, নোটিসবোর্ড লাগান। এতে স্কুলের হোমওয়ার্ক ইত্যাদি প্রয়োজনীয় কাজগুলি করার নোট দেওয়া থাকবে। পড়া শুরু করার সময়ে শিশুরা এগুলো দেখে নিলে তাদের খুব সুবিধা হয়। এতে শিশুর willingness to study বৃদ্ধি পায়।
সঠিক ব্যবস্থা
টেবিলের একদিকে প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি সাজিয়ে রাখা দরকার। যেমন ঘড়ি, এছাড়া অন্যান্য টুকিটাকি জিনিসগুলির জন্য একটি স্ট্যান্ড থাকা ভালো। এতে লাগানো থাকবে ক্যালেন্ডার, পেন, পেপার নাইফ, ম্যাগনিফাইনিং গ্ল্যাস, কাঁচি, স্কেলের মতো জিনিসগুলি। এভাবে এগুলি সাজিয়ে রাখলে, দরকারের সময় সেগুলি সবই চট করে পেয়ে যাবেন। আজকাল বিভিন্ন কোম্পানি তাদের নিজের প্রচারের জন্য নানান জিনিস একসঙ্গে সাজানোর জন্য স্ট্যান্ড বানায়। তাতে একটি টেবিল ক্লক থাকে। অনেকসময় আবার সেই ক্লকটি অ্যালার্মযুক্ত হয়। শিশুদের মধ্যে এ অভ্যেসটা থাকা দরকার যে, নির্দিষ্ট পাঠ্য বিষয় তারা নির্দিষ্ট দিনে বা সময়ে পড়বে। এতে সকল পাঠ্যবিষয়েই সমভাবে পঠিত হবে। ঘুম থেকে ওঠা বা পড়তে বসার সময় জানান দেওয়ার জন্য অ্যালার্ম ঘড়ি কাজে দেয়। টেবিলে দুধের কাপ বা জলের গ্লাস রাখার জন্য একটি টেবিলম্যাট থাকলে ভালো। এতে টেবিলে দাগ লাগার সম্ভাবনা কমে যায়। এসব পরিকাঠামো থাকলে, শিশুদের পড়াশোনা করায় মন বসার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।