এ যেন বুদ্ধি আর বিবেচনার চ্যালেঞ্জ গেম। সাধ আর সামর্থ্যের ট্র্যাপিজ। হাত ফসকালেই সব স্বপ্ন ধূলিসাৎ। আপনি গৃহিণী। তাই সংসারের বাজেটও আপনার হাতে। এই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির দিনকালে, হাঁসফাস অবস্থাটা আপনাকেই সামলাতে হবে দশ হাতে। তাই এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি হল ভেবেচিন্তে, বুদ্ধি খাটিয়ে প্রয়োজন অনুযায়ী খরচ করা। যেখানে দরকার এবং যতটুকু দরকার ততটাই খরচ করুন। প্রয়োজনে, যে খরচটা না করলেও চলে, সেটা এড়িয়ে চলবার চেষ্টা করুন। এইভাবে বুঝে চলতে পারলে মন্দার বাজারেও আপনাকে আর্থিক চাপ বহন করতে হবে না। আপনাদের সুবিধার্থে এমন কয়েকটি টিপ্স দেওয়া হল, যার দ্বারা সহজেই বাজে খরচা করার থেকে নিজেকে সংযত রাখতে পারবেন। আজ শেষ পর্ব।

বুঝে জিনিস কিনুন : একসঙ্গে জিনিস কিনলে সময় এবং অর্থ দুয়েরই সাশ্রয় হয়। যে-জিনিসগুলো খারাপ হয় না যেমন চা, চাল, ডাল, চিনি, আটা, ময়দা, টুথপেস্ট, ব্রাশ ইত্যাদি একসঙ্গে কিনে রাখতে পারলেই ভালো। এগুলো প্রায় প্রত্যেকটাই আমাদের প্রতি সপ্তাহে কিনতে হয়। তাড়াতাড়ি খারাপ হয়ে যায় যেমন সবজি, মাছ, মাংস, পনির একসঙ্গে বেশি কিনবেন না, যদি না খারাপ হওয়ার আগেই আপনি ওগুলোর সদ্ব্যবহার করতে পারেন।

টিফিন নিয়ে যান : অফিস ক্যানটিনে অথবা রেস্তোরাঁ-তে রোজ টিফিন খাওয়ার বদলে বাড়ি থেকে লাঞ্চ নিয়ে যাওয়া উচিত। এতে শুধু আপনার আর্থিক সাশ্রয়ই হবে না, আপনি বাইরের থেকে অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর খাবার পাবেন। বাড়ি থেকে আনার অসুবিধা থাকলে টিফিন পরিষেবাগুলোতে ফোন করতে পারেন। গরম গরম রান্না হওয়া খাবার আপনার টেবিলে সরাসরি পৌঁছে যাবে।

বাইরে খাওয়ার অভ্যাস : দরকারেই হোক অথবা অলসতার বশবর্তী হয়ে অথবা অভ্যাসের ফলে অনেকেই বাড়ির বাইরে খাওয়াটাই পছন্দ করেন এবং এই কারণেই হোটেল ব্যাবসার আজ এই রমরমা অবস্থা। কোনও রেস্তোরাঁ-তে যাওয়ার আগে বাড়িতে অল্পকিছু খেয়ে গেলে হোটেলে খাবার জন্য লম্বা চওড়া বিল ভরতে হবে না। এখন বেশিরভাগ রেস্তোরাঁতেই ‘হ্যাপি আওয়ার্স’ বলে সময় নির্ধারণ করা থাকে। সে সময়ে খেলে খরচ অনেক কম হয়।

বাড়িতে সিনেমার মজা : মাল্টিপ্লেক্সগুলোতে এখন সিনেমার টিকিটের অস্বাভাবিক দাম। একটা সিনেমা দেখতে যাওয়া মানে অনেক খরচ। ফ্যামিলিতে আরও বেশি লোক থাকলে টাকার খরচ অনেক বেশি। পরিবর্তে ডিভিডি এনে বাড়িতে বসে দেখলে আপনার প্রচুর টাকা বাঁচবে।

ইলেকট্রিকের অপচয় করবেন না : ব্যবহার না করলে, ঘরের আলো, পাখার সুইচ বন্ধ রাখুন। অযথা টিভি চালিয়ে রাখবেন না শুধুমাত্র আওয়াজের জন্য। কোনও অনুষ্ঠান দেখতে বসলে তবেই টিভি খুলুন। মোবাইল চার্জ করা হয়ে গেলে চার্জার খুলে রাখুন। গিজার, ইস্তিরি ইত্যাদি চালিয়ে রাখবেন না। এয়ারকন্ডিশনার প্রতিদিন অন্তত আধঘণ্টা কম চালান। যতক্ষণ দরকার কম্পিউটারে কাজ করে মেশিন বন্ধ করে দিন। এগুলো শুনতে ছোটো মনে হলেও মাসের শেষে ইলেকট্রিক বিল এলে নিজেই আশ্চর্য হয়ে যাবেন, ইলেকট্রিসিটি বাঁচিয়ে আপনি কতখানি সঞ্চয় করতে পেরেছেন।

ডায়েরি মেনটেন করুন : দৈনিক খরচ ডায়েরির পাতায় রোজ লিপিবদ্ধ করুন। এতে আপনার মাসের বাজেট বুঝতে সুবিধা হবে। কোথায় কত খরচ হচ্ছে সেটা চট করে বুঝতে পারবেন এবং দরকার পড়লে কোথায় খরচ কমাতে হবে সেটাও বুঝে নিয়ে প্রয়োজন মতো ব্যবস্থা নিতে পারবেন।

ম্যাগাজিনের গ্রাহক হোন : ম্যাগাজিনের মাসিক অথবা বাৎসরিক গ্রাহক হয়ে যান। সাধারণত ছয় মাসের জন্য অথবা এক বছরের গ্রাহকপদ নিলে অনেক বেশি সুবিধা এবং কম ব্যয়ে আপনি লাভবান হবেন।

যে-কোনও চাকরি করুন : চুপচাপ বাড়িতে বসে থাকবেন না। যে ধরনের কাজই পান না কেন, এগিয়ে যান। ছোটোখাটো কোম্পানিতে একবার ঢুকে পড়ে তারপর নিজের বুদ্ধি ও যোগ্যতা অনুযায়ী অন্য জায়গায় কাজ খুঁজে নিতে পারেন।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...