উৎসব মানেই বয়সের তোয়াক্কা না করেই মেয়েরা সাজগোজের প্ল্যানিং শুরু করে দেন। কী পোশাক পরবেন, ট্র্যাডিশনাল হোক কি ওয়েস্টার্ন তার সঙ্গে জুয়েলারি কী পরলে মানাবে, পার্লারে গিয়ে কেমন হেয়ারস্টাইল হবে এবং বাড়িতেই মেক-আপের বিভিন্ন সরঞ্জাম কিনে আনার বিশেষ ধুম পড়ে যায়। কিন্তু মেক-আপের বিশেষ ধারণা না থাকলে অনেক সময়ে অনেকে মারাত্মক ভুল করে বসে এবং পুরো সাজটাই নষ্ট হয়ে যায়।
মেক-আপের ব্যবহার সম্পর্কে অনেকেরই কোনও স্পষ্ট ধারণা থাকে না। তাহলে চলুন বিউটি এক্সপার্ট ভারতী তনেজার থেকে জেনে নিই এমন কিছু বিউটি প্রোডাক্টস সম্পর্কে, যেগুলি আপনি নানা ভাবে ব্যবহার করে, আসন্ন উৎসবে নিজের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে পারবেন।
কাজল পেনসিল দিয়ে বানান জেল আইলাইনার:
মনের মতো চোখ হাইলাইট করতে যেমন কাজলের দরকার পড়ে, তেমনি সৌন্দর্য বাড়াতেও এটি সাহায্য করে। মেক-আপ কিটে কাজল পেনসিল থাকা আবশ্যক। কিন্তু উৎসবের দিনগুলোয় নিজের Makeup আর একটু হাইলাইট করতে হলে প্রয়োজন আইলাইনার-এর। কাজল দিয়ে এই প্রয়োজন আপনি অনায়াসেই মেটাতে পারবেন।
কাজল পেনসিল-কে পেনসিল লাইনার-এর মতো ব্যবহার করতে পারেন। এতে চোখে যেমন বোল্ড লুক আসবে, তেমনি লাইনার ধেবড়ে যাওয়ার ভয়ও থাকবে না। মেক-আপ করার পদ্ধতি জানা না থাকলে এটিই সবথেকে ভালো উপায়। চোখের উপর জেল আইলাইনার লাগাতে ইচ্ছে করলে কাজল পেনসিল-কে মাইক্রো আভেন-এ তিন সেকেন্ড গরম করে একটু ঠান্ডা করে নিন। তারপর চোখের উপর অ্যাপ্লাই করুন। একদম জেল আইলাইনার লাগিয়েছেন বলে মনে হবে।
টিপ : ত্বক অয়েলি হলে জেল আইলাইনার আপনার জন্য পারফেক্ট কারণ এটি আপনার ত্বকে দীর্ঘ সময় টিকে থাকবে।
আইলাইনার দিয়ে টিপ বা বিন্দি : চোখে ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে ওয়াটার প্রুফ কালারড আইলাইনার দিয়ে টিপ আঁকুন। এটা দিয়ে নানা ডিজাইন আঁকতে পারেন এবং দীর্ঘ সময় এটি টিকেও থাকবে।
টিপ : ওয়াটার প্রুফ আইলাইনার-ই কিনবেন কারণ এটি ছড়িয়ে পড়বে না।
পাউডার দিয়ে মুখে আনুন হোয়াইটনিং এফেক্ট :
বেশ কিছু ঘন্টার জন্য মুখের ফ্রেশ ভাব এবং হোয়াইটনিং এফেক্ট বজায় রাখতে কম্প্যাক্ট পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। বহুকাল থেকে কসমেটিক্স হিসেবে পাউডার ব্যবহার করার চল রয়েছে ইজিপ্ট এবং উত্তর-পশ্চিম ভারতে। এখন পাউডার-এর ব্যবহার ব্লাশ, আইশ্যাডো, ফাউন্ডেশন এবং আরও অনেক বিউটি প্রোডাক্টস-এ করা হয়ে থাকে।
এটি ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করে ত্বক মসৃণ রাখে এবং স্কিন টোনও ইমপ্রুভ করে। কম্প্যাক্ট পাউডার না থাকলে, বাড়িতে সহজেই অ্যাভেলেবেল ট্যালকম পাউডারই যথেষ্ট। এটি মুখে লাগিয়ে তৎক্ষণাৎ গ্লো এবং হোয়াইটনিং এফেক্ট পেতে পারেন। এছাড়াও স্মুদ টেক্সচার পাওয়ার ফলে মেক-আপ করতেও সুবিধা হবে।
টিপ : মুখে যখনই পাউডার লাগাবেন, হাত দিয়ে সোজা মুখে লাগাবেন না। তুলোর সাহায্যে সারা মুখে ছড়িয়ে দেবেন, যাতে সারা মুখে সর্বত্র একই ভাবে পাউডার লাগে।
লিপগ্লস দিয়ে করুন মাল্টি Makeup :
লিপগ্লস ঠোঁটে গ্লসি টেক্সচার দেয় সঙ্গে ময়েশ্চার এবং সামান্য রং দিয়ে রাঙিয়ে তোলে আমাদের ঠোঁট। কিন্তু আমাদের অনেকেরই জানা নেই, লিপগ্লস হাইলাইটার হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে। আঙুলে করে সামান্য লিপগ্লস নিয়ে ভুরু এবং চিক বোনস-এ লাগিয়ে হাইলাইটিং এফেক্ট দিতে পারেন। হাই শাইন বা শিমারি লিপগ্লস-ই হাইলাইটার হিসেবে বেস্ট কাজ করবে। এছাড়াও লিপগ্লস, ক্রিম ব্লাশ হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন। সামান্য গ্লস নিয়ে চিকবোনস-এ লাগিয়ে আশেপাশে ছড়িয়ে দিলেই মুখ ফ্রেশ লাগবে এবং গ্লোযিং এফেক্ট পাবেন। লিপগ্লস-কে গ্লসি আইলিডস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি অল্প ছোঁয়ালেই গ্লসি আই লুক পেতে পারেন।
টিপ : লিপগ্লস আপনি হাইলাইটার হিসেবে ব্যবহার করুন অথবা ব্লাশ হিসেবে, সামান্য মাত্রায় ব্যবহার করলেই পাবেন গ্রেট লুক।
গ্লসি লিপস্টিকে আনুন ম্যাট ফিনিশ লুক :
মেক-আপে ফাইনাল টাচ দিতে লিপস্টিকের দরকার। মেক-আপ না করেও শুধু লিপস্টিক লাগিয়ে অনেককে সুন্দর লাগে দেখতে। আগে গ্লসি লিপস্টিকের চাহিদা বেশি ছিল। এখন ম্যাট ফিনিশ লিপস্টিকের চাহিদা বাড়ছে। কারণ এটি দীর্ঘ সময় যেমন টিকে থাকে তেমনি চ্যাটচ্যাটেও হয় না। ফেস-কে অনেক বেশি হাইলাইটও করে।
কারও কাছে যদি ম্যাট ফিনিশ লিপস্টিক না থাকে তাহলেও নো প্রবলেম। গ্লসি লিপস্টিক-কেই ম্যাট এফেক্ট দিন। এর জন্য ঠোঁটে গ্লসি লিপস্টিক লাগিয়ে ঠোঁটের মধ্যে টিস্যু পেপার দিয়ে সামান্য চাপুন ঠোঁট দিয়ে। এতে এক্সট্রা শাইন চলে যাবে ফলে ম্যাট লুক আসবে। এছাড়াও হাতে সামান্য পাউডার নিয়ে আঙুলের সাহায্যে গ্লসি লিপস্টিক লাগানো ঠোঁটে লাগান এবং টিস্যু পেপারের সাহায্যে হালকা চেপে ধরে পাউডার সরিয়ে ফেলুন। এতে ম্যাট ফিনিশ বোল্ড লুক আসবে আপনার ঠোঁটে।
টিপ : লিপস্টিকের উপর বেশি পাউডার লাগাবেন না, তাতে লুক নষ্ট হতে পারে।