আমি ২৬ বছর বয়সি বিবাহিতা। দুই বছর আগে আমার বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর আমি জানতে পারি আমার স্বামীর Psychosis আছে অর্থাৎ তিনি মানসিক রোগী। একবছর হয়ে গেল নিয়মিত ওষুধ খাচ্ছেন। এমনি মানুষ হিসেবে ভালো কিন্তু ব্যবহারে কোনও সামঞ্জস্যতা নেই। আমাকে কারও সঙ্গে কথা বলতে দেন না। আর কোথাও যেতেও দেন না। ছোটো ছোটো কথায় রেগে যান, কারণ ছাড়াই সন্দেহ করেন। সম্প্রতি সব কথাতেই ঝগড়ার পরিস্থিতি তৈরি করছেন। বাইরের লোকের সামনে মাঝেমধ্যে খারাপ করে কথা বলেন আমার সঙ্গে। আমার বড়ো জা আমাকে স্বামীর থেকে আলাদা হয়ে যেতে জোর দিচ্ছেন। কিন্তু আমার স্বামী আমাকে ছাড়া একদিনও থাকতে পারেন না। আমাদের সন্তান হলে কি অবস্থার পরিবর্তন হবে?

Psychosis এক ধরনের গুরুতর মানসিক অসুস্থতা যার ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি হ্যালুসিনেশন বা ডিলিউশনে ভোগেন। এর দ্রুত চিকিৎসা না হলে এই ধরনের রোগীরা নিজের এবং আশেপাশের মানুষদের জন্য বিপদের কারণ হয়ে উঠতে পারেন। সুতরাং ডাক্তারের পরামর্শ না নিয়ে নিজে থেকে কিছু ঠিক করতে যাবেন না।

স্বামী অসুস্থ জেনেও আপনার স্বামীর প্রতি প্রেম, ধৈর্য, সমর্পণের মানসিকতা সত্যিই প্রশংসনীয়। কিন্তু আপনি আপনার স্বামীর যে-সমস্যার কথা উল্লেখ করেছেন, সেই পরিবেশে পরিবার বাড়াবার চিন্তা করাটা একেবারেই বাঞ্ছনীয় নয়। এতে বাড়ির পরিবেশ ভালো হওয়ার বদলে আরও খারাপ হয়ে উঠতে পারে।

আপনার উচিত, যে-ডাক্তার আপনার স্বামীর চিকিৎসা করছেন তাঁর সঙ্গে কথা বলে স্বামীর রোগটা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা। ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করুন, আদৌ আপনার স্বামী কোনও দিন সুস্থ হবেন কিনা? ওষুধ খাওয়া সত্ত্বেও যদি ওনার ব্যবহারে বিশেষ পরিবর্তন না হয়, তাহলে বুঝতে হবে যতদিন বেঁচে থাকবেন, এই রোগ Psychosis থাকবে। এছাড়াও হঠাৎ করে রোগের তীব্রতা বেড়ে গেলে হাসপাতালে ভর্তি করার মতো পরিস্থিতিও দাঁড়াতে পারে।

সুতরাং এই পরিস্থিতিতে সন্তানের চিন্তা মন থেকে একেবারে মুছে ফেলুন এবং এটাও খেয়াল রাখুন ভুলক্রমেও যাতে গর্ভধারণ না করেন। আপনি বাপের বাড়ি বা শ্বশুরবাড়ি সম্পর্কে বিশদে কিছুই জানাননি। ভবিষ্যতে কী করবেন সেটা যদি নিজে ঠিক করতে না পারেন তাহলে কাছের কাউকে মধ্যস্থতা করতে বলতে পারেন। যিনি পরিস্থিতি বুঝে আপনাকে সঠিক পরামর্শ দিতে পারবেন।

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...