সতর্ক থাকলে এবং সঠিক ভাবে Face lift surgery করলে, এর কুপ্রভাব অনেকটাই এড়ানো যায়। কিন্তু মনে রাখা দরকার, Beauty treatment সার্জারি ঠিকমতো না হলে আরও কিছু স্থায়ী জটিলতা বা সমস্যা তৈরি হতে পারে, যেমন—
- হেমাটোমা
- সার্জারির দাগ থেকে যাওয়া
- নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে
- কাটা জায়গায় চুল না থাকা
- ত্বকেরও ক্ষতি হতে পারে।
শুধু তাই নয়, ভুল ফেসলিফ্ট সার্জারি নানারকম অসুখ এবং জীবনশৈলীর পরিবর্তনও ঘটাতে পারে। যেমন যদি কেউ রক্ত পাতলা করার ওষুধ সেবন করেন, তাহলে তার ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেশি। কারণ, ফেসলিফ্ট সার্জারির সময় রক্ত পাতলা করার ওষুধ খাওয়া বন্ধ রাখতে হয়। এর ফলে, সার্জারির সময় বা ঠিক পরে ব্লাড ক্লট অর্থাৎ রক্ত জমাট বাঁধতে বিলম্ব হতে পারে।
অন্যান্য সমস্যা বা অসুখ
যিনি ফেসলিফ্ট করাবেন, তার যদি ডায়াবেটিস কিংবা হাই ব্লাড প্রেসার-এর সমস্যা থাকে, তাহলে ফেসলিফ্ট সার্জারির পর ঘা শুকোতে দেরি হবে এবং হেমাটোমা-র সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ধূমপানের বিষয়টিও এক্ষেত্রে ভীষণ ক্ষতিকারক। যদি আপনি ধূমপায়ী হয়ে থাকেন, তাহলে ফেসলিফ্ট সার্জারির দুই সপ্তাহ আগে থেকে ধূমপান বন্ধ করতে হবে। শুধু তাই নয়, ফেসলিফ্ট সার্জারির পরও কমপক্ষে তিন সপ্তাহ ধূমপান বন্ধ রাখা বাধ্যতামূলক। আর তা যদি না করেন, তাহলে সার্জারির পর নানারকম সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ওজন কম-বেশি হওয়া : যদি আপনার ওজন ঘনঘন কম-বেশি হওয়ার সমস্যা থাকে তাহলে ফেসলিফ্ট সার্জারির পর ফেস শেপ-এর সমস্যা দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে ফেসলিফ্ট-এর উদ্দেশ্য বিফলে যেতে পারে।
সার্জারি–র আগে পরে : কসমেটিক সার্জন-এর মতে, যদি ফেসলিফ্ট সার্জারি করাতেই হয়, তাহলে তা ভালো কোনও হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দিয়ে করান। এক্ষেত্রে যেহেতু অ্যানাস্থেসিয়া ব্যবহার করতে হয়, তাই ভালো অ্যানাস্থেটিক-কে নিয়োগ করা উচিত।
সার্জারি : ত্বক টাইট করানোর প্রক্রিয়ার জন্য টিশু, মাসলস প্রভৃতিতে জমা ফ্যাট রিমুভ করা হয়। এরপর ঝুলে যাওয়া ত্বক বাদ দিয়ে টানটান রূপ দেওয়া হয়। আর সার্জারির পর টেপ-এর সাহায্য নিয়ে কাটা জায়গা ঢেকে দেওয়া হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ধরনের সার্জারির জন্য একদিন, এক রাত্রি হাসপাতালে থাকতে হয় রোগীকে।
ফেসলিফ্ট সার্জারির জন্য সময় লাগে ২-৩ ঘন্টা। তবে, বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে আরও একটু বেশি সময় লাগতে পারে।
প্রক্রিয়ার পরে
ফেসলিফ্ট-এর পর যেসব উপসর্গ দেখা দিতে পারে, তা হল—
- হালকা ব্যথা। এই ব্যথা লাঘব করার জন্য ওষুধ দেওয়া হয়
- চুলকানির সমস্যা হতে পারে
- অস্বস্তি হতে পারে
- সামান্য ফুলে যেতে পারে সার্জারির জায়গা
- শ্বাসকষ্ট হতে পারে
- মাথার যন্ত্রণা করতে পারে
- হার্টবিট বাড়তে-কমতে পারে।
এই সমস্ত সমস্যা দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শমতো উপযুক্ত ব্যবস্থা নিন।
সার্জারির পর চিকিৎসকরা যে–সমস্ত পরামর্শ দিয়ে থাকেন
- মাথার নীচে উঁচু বালিস দিতে পরামর্শ
- ব্যথা কমানোর জন্য ওষুধ খেতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শমতো
- সার্জারির আশপাশে আইসপ্যাক ব্যবহারের পরামর্শ
- সার্জারির পর দু’মাস ফলো-আপে থাকার পরামর্শও দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে, ব্যান্ডেজ খোলা এবং তারপর ওষুধ প্রয়োগ করাতে হবে ট্রেনড নার্স-কে দিয়ে
সার্জারির পর আর যা করতে হবে
যত্ন এবং সতর্কতা-ই আপনাকে জটিল সমস্যা থেকে রক্ষা করতে পারে সার্জারির পর। এ ক্ষেত্রে যা যা করণীয়—
- চিকিৎসকের পরামর্শমতো সঠিক ভাবে যত্ন নেওয়া
- সার্জারির জায়গায় নখ দিয়ে চুলকাবেন না
- সার্জারির জায়গায় যে-আস্তরণ তৈরি হয়, তা তুলে ফেলবেন না
- এমন পোশাক পরুন যা সামনে থেকে খোলা যায়। কারণ, মাথা দিয়ে খুলতে গেলে সার্জারির স্থানে আঁচড় লাগতে পারে, যা ক্ষতিকারক
- সার্জারির পর বেশি মুভমেন্ট যেন না হয়
- সার্জারির পর কিছুদিন মেক-আপ করবেন না
- সার্জারির পর যদি মাথার চুলে শ্যাম্পু করতে হয়, তাহলে তা কীভাবে করতে হবে, তা চিকিৎসকের থেকে জেনে নিন
- সার্জারির পর ভারী ব্যায়াম করবেন না
- সার্জারির পর অন্তত ৬ থেকে আট সপ্তাহ সরাসরি রোদ লাগাবেন না মুখে
- সার্জারির পর অন্তত ৬ সপ্তাহ চুলে ব্লিচ কিংবা কালার করবেন না।
সাবধান থাকুন
সত্যিই যদি বিউটি ট্রিটমেন্ট কিংবা কোনও সার্জারি করাতে চান, তাহলে প্রথমে খোঁজখবর নিয়ে ভালো কোনও কসমেটিক সার্জন-এর কাছে যান। শুধু তাই নয়, ফেসলিফ্ট করানোর আগে সবরকম ফিজিক্যাল চেক-আপ করে চিকিৎসকের থেকে জেনে নিন যে, সার্জারি করাতে পারবেন কিনা। অর্থাৎ সার্জারির পর কোনও জটিলতা তৈরি হতে পারে কিনা। কারণ, অন্য কোনও শারীরিক সমস্যা কিংবা অসুখ থাকলে ফেসলিফ্ট সার্জারি করানো অনুচিত।