উজ্জ্বল ত্বক পেতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ভিটামিন ও মিনারেলস। আমাদের সব সময় প্রচেষ্টা থাকে নিখুঁত ত্বক পাওয়ার জন্য। এমন ত্বক যেখানে কোনও দাগ, বলিরেখা, ফুসকুড়ি এবং ব্রণ থাকবে না। এ ধরনের skin পাওয়া সহজ না হলেও কিছু ভিটামিন ফেস মাস্ক এই ক্যারিশমা দেখাতে পারে। পরিষ্কার এবং উজ্জ্বল ত্বক পেতে, আপনার ভিটামিন এবং খনিজগুলো সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। ভিটামিন ‘ই’ আপনাকে দাগ থেকে মুক্তি দেয় এবং ভিটামিন ‘সি’ আপনার ত্বককে তরুণ রাখে। এজন্য আপনার ত্বক ও Skin সম্পর্কিত সমস্যাগুলো সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, অ্যাসপিরিন ট্যাবলেটে উপস্থিত স্যালিসিলিক অ্যাসিড ব্রণ উপশম করে, ভিটামিন ই ক্যাপসুলে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি আপনার ত্বককে পরিষ্কার এবং নরম করে তোলে। তবে এই সবকিছুর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হল ব্যবহৃত ক্যাপসুলের পরিমাণ। কোন ক্যাপসুলটি কত পরিমাণে ব্যবহার করা উচিত বা সপ্তাহে কতবার, তৈরি করা প্যাক প্রয়োগ করা উচিত এমন প্রশ্নের উত্তরও আপনার জানা উচিত। এখানে নীচে কিছু ফেস প্যাক প্রস্তুত করার পদ্ধতি দেওয়া হল। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এড়াতে, একটি প্যাক তৈরি করুন এবং এটির প্যাচ টেস্ট করে নিন। চেষ্টা করলে এই প্যাকগুলির কার্যকারিতা ১৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে দেখা যাবে।
১) অ্যাসপিরিন ট্যাবলেট: অ্যাসপিরিনে উপস্থিত স্যালিসিলিক অ্যাসিড ত্বক থেকে মৃত কোশ দূর করে মুখের দাগ ও ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে।
উপকরণ: অ্যাসপিরিন ট্যাবলেট ৩টি, জল ১ কাপ, জৈব মধু ১ চা চামচ।
প্রণালী: ১ চা চামচ জলে অ্যাসপিরিন ট্যাবলেট ভিজিয়ে নিন। ঘন পেস্ট তৈরি করতে প্রয়োজন হিসাবে জল যোগ করুন। এবার এতে মধু মিশিয়ে দ্রবীভূত করুন। এই পেস্টটি আপনার মুখ এবং ঘাড়ে ছড়িয়ে দিন এবং ২০ মিনিটের জন্য রেখে দিন। তারপরে জল দিয়ে আপনার মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে মাত্র একবার এই প্যাকটি ব্যবহার করুন।
মনে রাখবেন: কখনওই ৪টির বেশি ট্যাবলেট ব্যবহার করবেন না।
২) ভিটামিন ই: ভিটামিন ই ক্যাপসুল অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ এবং এগুলি থেকে তৈরি প্যাকটি ত্বকের অভ্যন্তরে দ্রুত কাজ করে। এই প্যাকটি আপনার ত্বককে নরম এবং তারুণ্যময় করে তুলবে।
উপকরণ: ৩ ভিটামিন ই ক্যাপসুল, ৫ ফোঁটা বাদাম তেল।
প্রণালী: ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভেঙ্গে এর ভেতরের জেল একটি বাটিতে বের করে নিন। এবার এতে বাদাম তেল যোগ করুন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এই প্যাকটি দিয়ে আপনার ত্বকে মাসাজ করুন। সকালে ঠাণ্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
৩) ভিটামিন সি পিল: ভিটামিন সি-তে উপস্থিত এল-অ্যাসকরবিক অ্যাসিড ত্বকে কোলাজেনের মাত্রা বাড়ায়, যা আপনার ত্বককে তরুণ এবং টানটান রাখে।
উপকরণ: ভিটামিন সি ক্যাপসুল ১টি, গোলাপজল ১ চা চামচ, গ্লিসারিন ১/২ চা চামচ, গোলাপ তেল ৫ ফোঁটা।
প্রণালী: উপরের সব উপকরণ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। রাতে ঘুমানোর আগে এই পেস্টটি আপনার ত্বকে ময়েশ্চারাইজার হিসাবে প্রয়োগ করুন। ভিটামিন সি দিয়ে তৈরি এই প্যাকটি শুধু ব্রণ থেকেই মুক্তি দেবে না, মুখের বলিরেখা ও সূক্ষ্ম রেখা থেকেও মুক্তি দেবে।
৪) প্রোবায়োটিক ক্যাপসুল: এসব ক্যাপসুলে উপস্থিত ভালো ব্যাকটেরিয়া, ফ্রি র্যাডিকেলস থেকে আপনার ত্বককে রক্ষা করে এবং মুখের কালো দাগছোপ কমিয়ে ত্বককে নরম করে তোলে।
উপকরণ: ২ বা ৩টি প্রোবায়োটিক ক্যাপসুল, ৫ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল, ৫ ফোঁটা বাদাম তেল।
প্রণালী: প্রথমে ওই দুটি তেল মেশান এবং তারপরে এতে ক্যাপসুলগুলি ভেঙে জেলটি ওতে মেশান। সব উপকরণ ভালো করে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি আপনার মুখ এবং ঘাড়ে প্রয়োগ করুন। মাস্কটি মুখে শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। নিখুঁত Skin পেতে সপ্তাহে দু’বার এই প্রতিকারটি ব্যবহার করুন।
৫) সি উইড ক্যাপসুল: সি উইড ক্যাপসুলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ থাকে। এগুলো ত্বক থেকে মৃত কোশ দূর করে ত্বককে সুস্থ করে বলিরেখা থেকে মুক্তি দেয়।
উপকরণ: সি উইড ক্যাপসুল ৩টি, এপ্রিকট অয়েল ১০ ফোঁটা, জৈব মধু ১ চা চামচ।
প্রণালী: ক্যাপসুল ভেঙ্গে তাতে মধু ও এপ্রিকট অয়েল মিশিয়ে নিন। ভিটামিন সমৃদ্ধ এই প্যাকটি আপনার মুখ এবং ঘাড়ে লাগান। এই প্যাকটি মুখে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দু’বার এই ঘরোয়া প্রতিকারটি ব্যবহার করুন।
৬) গাজর তেল ক্যাপসুল: আমরা সকলেই জানি গাজরে বিটা ক্যারোটিন থাকে, যা ক্ষতিগ্রস্থ কোশগুলি নিরাময় করে এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। এতে আপনার মুখ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
উপকরণ: গাজরের তেল ক্যাপসুল ২ টি, রোজমেরি অয়েল ২ ফোঁটা, বাদাম তেল ২ ফোঁটা।
প্রণালী: প্রথমে মুখ ধুয়ে ফেলুন। তারপর এই সব জিনিস মিশিয়ে সেই মিশ্রণটি দিয়ে আপনার মুখে মালিশ করা শুরু করুন। সারারাত রেখে দিন, সকালে ঠাণ্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। আপনি যদি মিশ্রণটি বেশি আঠালো বোধ করেন তবে সেটি কিছুটা কম পরিমানে প্রয়োগ করুন।