বিয়ের আগের জীবন আর তার পরের অধ্যায়— দুটির মধ্যে প্রায় জমিন আসমান তফাত। সংসারে প্রবেশ করার আগে পৃথিবীটাকে রঙিন চশমা পরে দেখতে খারাপ লাগে না । কিন্তু দাম্পত্যজীবন শুরু হওয়ার পর কিছুটা প্র্যাকটিকাল হয়ে উঠতে হয় পুরুষ-নারী উভয়কেই। মেয়েরা একটু বেশিমাত্রায় আবেগপ্রবণ। সুতরাং তাদের ক্ষেত্রে কষ্টটা বেশি হয় দৃশ্যপটের এই পরিবর্তনকে মেনে নিতে। কিন্তু জীবনসঙ্গীটি যদি মনের মতো হয়, জীবনটা সুন্দর করে তোলা যায় তার সাহচর্যে। তাই বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেওয়া হবে যদি পরস্পরকে বিয়ের আগেই একটু জেনে নেওয়ার সুযোগ মেলে। পাত্র যদি আপনার পূর্ব পরিচিত হয়, তাহলে তো কথাই নেই। কিন্তু যদি সে পরিবার মনোনীত পাত্র হয়, বিয়ের আগে একটা রোমান্টিক ডেট-এ যান তার সঙ্গে।
ডেট–এর পোশাক : আপনি যে-পোশাকে সবচেয়ে কমফর্টেবল, সেটাই ডেট-এর জন্য পারফেক্ট। অযথা নিজেকে অতি আধুনিকা প্রমাণ করার জন্য এমন কিছু পরবেন না, যা পরে অস্বস্তি বোধ করেন। মনে রাখবেন পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো ফ্যাশন ডিজাইনাররাও মনে করেন, যে-পোশাক সবচেয়ে স্বচ্ছন্দে ক্যারি করা যায়, সেটাই ফ্যাশন। তাই নিজের রুচি অনুযায়ী সামঞ্জস্যপূর্ণ সাজগোজই ভালো। হালকা মেক-আপ এবং অবশ্যই সুন্দর একটি পারফিউম আপনার ব্যক্তিত্বে আলাদা মাত্রা এনে দেবে। সুন্দর আচার, শিষ্টতা, আস্তে আস্তে কথা বলা এবং অযথা কৌতূহল সংবরণ করা ব্যবহারই আপনাকে সামগ্রিক ভাবে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে।
কোথায় ডেট করবেন : কোনও কফি শপে বা উন্মুক্ত কোনও জায়গায় পরস্পরকে মিট করুন। প্রাথমিক জড়তা কাটিয়ে কথাবার্তা শুরু হলে নিজে বলুন কম, শুনুন বেশি। প্রশ্ন করলে তবেই উত্তর দিন, আগ বাড়িয়ে নিজেকে জাহির করবেন না। গল্পে গল্পে আন্তরিকতার আভাস দিন। নিজের যা যা প্রশ্ন আছে, প্রসঙ্গান্তরে সেগুলির উত্তর জেনে নিন। হালকা ঠাট্টাইয়ার্কির সঙ্গে সঙ্গে হনিমুন প্ল্যানিংটাও সেরে নিতে পারেন।
কী নিয়ে কথা : কথা বলতে বলতে বোঝার চেষ্টা করুন আপনার সঙ্গে তার মতের মিল কতটা। আলোচনা করুন আপনার বিশ্বাস-অবিশ্বাস নিয়ে। সেটি ধর্মীয় বিষয় বা কুসংস্কারজনিত বিষয় হতে পারে। কোষ্ঠী বিচার কতটা গ্রহণযোগ্য, বা আদৌ এর প্রয়োজন আছে কিনা নিজেরাই বিবেচনা করে ঠিক করুন। নিজেদের ভালো লাগার বিষয়, শখ, হবিস প্রভৃতি নিয়েও কথা বলুন। তার পরিবারের বিষয় জানতে চান। নিজের কথাও বলুন। শৈশবের কোনও অন্তরঙ্গ স্মৃতি শেয়ার করুন পরস্পরের সঙ্গে। আরও কিছু জরুরি বিষয়ে আলোচনা প্রয়োজন। এখানে যেগুলি সম্পর্কে কিছু পরামর্শ রইল। কিছু সিরিয়াস বিষয় ও কিছু হালকা মেজাজের কথা যা আপনাকে অন্তরঙ্গ হয়ে উঠতে সাহায্য করবে।
আয়ের বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা : ছেলেটির আয় এবং আর্থিক সঙ্গতি সম্পর্কে পরিচ্ছন্ন ধারণা থাকা দরকার আপনার। তাই আপনার ভাবি বর আপনার দায়িত্ব নিতে অর্থনৈতিক ভাবে সক্ষম কিনা সেটা পরিষ্কার জেনে নিন। ঠিক কী কী উপায়ে সে অর্থ উপার্জন করে, ভবিষ্যতে আয় বাড়ার সম্ভাবনা কতটা, কোনও পদোন্নতির আভাস পাচ্ছে কিনা— সে বিষয়ে জেনে নিন। শুনতে যতই রূঢ় লাগুক, এটি অত্যন্ত বাস্তবসম্মত একটি আলোচনা। সে প্রাইভেট বা সরকারি যে-প্রতিষ্ঠানেই কাজ করুক না কেন, তার জব স্যাটিসফ্যাকশন বিষয়েও নিঃসন্দেহ হয়ে নিন। নিজের ব্যাবসা থাকলে, সেটি কতটা লাভজনক, ঝুঁকির পরিমাণ-ই বা কতটা, সবটাই খোলাখুলি আলোচনা করুন।
চলবে…